
কবিঃ তারাশঙ্কর
ভাগাড় উপচে পড়া আবর্জনার মত
এখানে সেখানে পড়ে আছে আমার
গলিত প্রেমের শব।
যেসব প্রেমপ্রার্থীদের একদা ভুলেছিলাম ভীষণ অবহেলায়
যেসব প্রণয়ে দিয়েছিলাম তীব্র প্রবঞ্চনা নিত্য উপহার (!)
আজ তারা ফিরিয়ে দেবে সেই কাঁটার ফুল, গোপন উৎসবে
যদিওবা পানপাত্র অঢেল যৌবনে তারাও ভাসে
আমার পতনে আজ উর্বশী নাচে, ঘুংঘুর ঝংকার
নগ্ন পিঠে ঝিলিক দেয় ইন্দ্রের বজ্র, প্রত্যাখানের প্রতিশোধ
আমিই নাকি শুধু পৃথিবীর একমাত্র সুচতুর প্রতারক!
হৃদয় ঠুকরে খাওয়া চিলশকুনেরা নিজের ভাগ
বুঝে নেয় প্রবল হট্টগোলে, হায়েনারা হাসে-
যেন ঠিক যমদূতের কঠিন ব্যাদান, ফাঁক বুঝে
উইয়ের দল মৃত প্রেমে গড়ে তোলে সমাধিসৌধ
আর গহীন অন্ধকারের ডানায় ভেসে উড়ে আসে
পৃথিবীর যত আদি পাপ, আমায় যা ছুঁয়েছিল
অবশেষে একবার, শেষবার, আমার প্রণয়
মৃত্যুর শিয়রে বসে ধরা দিল সে, অমর অক্ষয়।
নক্ষত্রলোকে আজ নতুন বিজ্ঞাপন,
একজন কালো জাদুকর চাই।
তন্ত্রমন্ত্রে পুনরুত্থানের আশা যদিও করি না
হৃদয়ের টুকরোগুলো অন্তত জুড়ে নিতে চাই!
পাপিষ্ঠ নরকের কীট আমি, তোমাদের অসম্ভব আশীর্বাদে
যদিও বা অনন্ত অগ্নিকুণ্ডে হব অংগার,
চোখে ভাসে একটি মুখ, প্রশান্ত বিস্ময়
শান্ত সুর সরোবর অবেলার গান
আমার বুকের মাঝে বেঁচে থাকে
গনগনে প্রেমের উত্তাপ!