কলিকালের ক্রাশ এবং অনলাইনে ক্রাশ খাওয়ার বাস্তবতা

লেখক- ফ্লিন রাইডার

মাঝে ফটো ফিল্টার সহ নানা রকমের এডিটকৃত ছবি দেখে ক্রাশ খেয়ে ডেটে/ রুমডেটে গিয়ে আচ্ছা শিক্ষে হয়েছে। ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির এক্টিভিটী, অনলাইনে, ফোনে, চ্যাটবক্সের আচরণ আর সামনা সামনি আচরণ আকাশ পাতাল তফাৎ হয় মানুষ ভেদে। তাই ছবি দেখে কিংবা ভারচুয়াল রিয়্যালিটি দেখে আর কোন ক্রাশ নয়। এবং আমি ছবি এডিট করা, ফিল্টার ব্যবহার করা সব ছেড়ে দিয়েছি এই ব্যাপারটা বুঝবার পরে। বিশেষ করে গায়ের রঙ তো ভুলেও এডিট করতে যাই না, যেন ছবি দেখে কোন ভিন্ন ধারণা না আসে।

শীতকাল, এখন প্রেমের উত্তাপ বেরুচ্ছে সবার মাঝে, অনলাইনে চারদিকে ক্রাশ আর কনফেশন এর ছড়াছড়ি। কিন্তু খুব কম মানুষই এই ক্রাশ নামক মুগ্ধতা ধরে রাখতে পারে। কারো সাথে দেখা হবার পরে যত মেশা হয় তত আকর্ষণ কমতে থাকে। বিশেষ করে আগ্রহ নিয়ে কথা বলতে যাবার সময়, বলতে বলতে ওহ নো, না এটা কি বললো, আমার ক্রাশ ছুটে গেল।

হাউ আই মেট ইউর মাদার সিরিজে এই ব্যাপারটা কে ডিফাইন করা হয়েছে ” ওওওও😮😳😬 মোমেন্ট” হিসাবে। যার কারনে বেশি কথার আগেই রুমডেট সেরে ফেলতে হয়, কি বলবে বা কি করবে, তার ” ওওওও😮😳😬 মোমেন্ট” দেখে প্রেম বা কামবাসনা লুপ্ত হয়ে যাবে। মোহ ভঙ্গ হবে।

এর চেয়ে তার ভিতরটা না জানা ভাল, ততক্ষন তার পারফেক্ট ইলুশ্যনটা লালন করে উপভোগ করা যাবে।

সবচে হতাশা জনক যখন একজন সুন্দর মানুষ তার সৌন্দর্যের মুল্য বুঝে না। যখন সে বলে বসে আমি তো সুন্দর না। আরেহ, তুমি সুন্দর নাকি অসুন্দর সে তো তুমি নিজে বুঝবে না, নিজেকে দেখে কারো নিজের কাম উঠে না, এটা জান না। তোমায় দেখে অনুভুতি হবে আমার। তোমার কাজ তোমার যা কিছু আছে তা আমার কাম ইন্দ্রিয়ের দিয়ে দিকে তাক করে তীর মেরে দেয়া।

তোমার সব বাঁধ আমার সামনে ভেঙ্গে দেয়া, যেন হাবুডুবু খাওয়াতে পারো। তুমি আমার ক্রাশ, তুমি রাজপুত্রে মত বাহু ডোরে ধরে আলিংগন করবে, তোমার গলায় সে প্রেম সুর বাজবে। তুমি আমার সামনে ছুটবে,উড়বে এমন ভাবে যেন তোমায় থামানো দায় হয়ে যায় আমার।

কিন্তু না একি ফুটন্ত পানির মত টগবগ করবার বদলে আমার ক্রাশের মনে রাজ্যের হতাশা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, চোখের ভাষায় দুষ্টুমির বদলে ভয়, দেহে নেই সাহসের কোন দোলা, কথায় নেই কোন মাতাল টোন। পাগল না বানাতে পারলে তোমায় ক্রাশের মর্যাদা দেব কেন বলো! আমার সামনে দাঁড়িয়ে তোমার তো হবার কথা দিল ওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়ঙ্গের রাজের মত, রাজা হিন্দুস্তানির রাজার মত, ইয়ে জাওয়ানি হ্যাঁয় জাওয়ানির বানির মত। এমন ভাব থাকবে যেন আমি সব সময় পটে থাকি। কিন্তু এমা সে কি গো, তোমার সামনে এসে অবস্থা দেখে আমার পটে যাবার প ও আসছে না। উফফ।

কলিকালের ক্রাশদের আজ বিভিন্ন দুরাবস্থা দেখে আজকাল ক্রাশ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু কি করব ডেট তো করতে হবে নাকি, অগ্যতা বাধ্য হয়ে সব কিছু কাস্টমাইজ করতে হয়।

There is one comment

  1. সওফিয়া

    এই লেখার উপর ক্রাশ খেলাম। এমনিতে আমি ভেজিটেরিয়ান, কিন্তু আজ ক্রাশ খেয়েই ফেললাম। হাহাহা। সত্যিই ভালো লাগলো লেখাটা। ২০১৯ এর আঁচ আছে। (প্রুফ রিডার নাই নাকি? বানানে আরেকটু যত্ন থাকতে পারতো)

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.