
লেখকঃ চিন্ময়ের ইতিকথা
উৎসর্গঃ নীল কন্ঠ
*১*
ঝমঝম করে বৃষ্টি নামলো এক শীতের সন্ধ্যায়। নিম্নচাপটা অবশ্য বেশ কিছুদিন ধরে চলছে। সারাক্ষন আকাশে গুমোট মেঘের ঘরোয়া আনাগোনা। থমথমে ছিলো বেশ কিছুদিনের আবহাওয়া । আজকে এমনকরে যে বৃষ্টি নেমে পড়বে তা ছিলো আমার ধারনাতীত। টিউশনি শেষ করে উঠলাম। প্রধান চিন্তা ছিলো মেসে যাওয়া নিয়ে। আন্টি বুঝতে পেরে হাতে ছাতা ধরিয়ে দিলেন। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম যেন। ছাতাটাকে সেভাবেই আঁকড়ে ধরলাম যেভাবে বৃদ্ধরা লাঠি আঁকড়ে ধরে। তারপর পা দিয়ে পথের দূরত্ব মাপতে লাগলাম। চারদিকে শীত শীত বাতাসের ঝাপটা । হাটতে হাটতে চলে এলাম মেসে। মেইন গেইট তালাবন্ধ। খানিকটা অবাক হলাম। এখন তো বন্ধ হবার কথা না! মেসমেটকে ফোন দিলাম। সে নিচে এসে দুঃসংবাদটা জানালো। চাবি হারিয়ে গেছে। আর বাড়ির মালিক বেড়াতে গেছে। কাল ফিরে আসবে। আর মালিকের কাছে চাবি। তারমানে এ বৃষ্টিভেজা রাতটা আমাকে বাইরেই কাটাতে হবে! তখনো ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে। ধারাবাহিকভাবে….
.
২
অন্যকোন বন্ধুর মেসে যাবার চিন্তা করলাম। সাথে সাথে চিন্তা বাতিল করলাম। কারন এখানে রাত্র ৯টার পর স্বাভাবিক আবহাওয়াতেই কোন যানবাহন পাওয়া যায় না আর এখন তো শীতকালীন বৃষ্টি। চোখ গেলো মোড়ের একমাত্র স্টেশনারি শপটার দিকে । পাশে একটা চা স্টল। বন্ধ। বেঞ্চটাতেই রাত্রিযাপন করতে পারবো। সেখানে গিয়ে বসতেই দোকানী বললো -“মামা,এই ঝড় বাদলের রাতে এখন এখানে বসা?”
আমি সংক্ষেপে সমস্যার কথা বললাম। তিনি একটু আহত গলায়েই বললেন
-“এ কোন সমস্যা হৈলো মিয়া। আমরা ভাই বেরাদার আছি আর আমাদের কইবেন না। আইজ এই গরীবের দোকানেই না থাকলেন। তিনি বেশ সমাদরের সাথেই নিয়ে গেলেন দোকানের ভেতর। আর আমিও কেমন যেন অমত করি নি।
দোকানদারের নাম ইদ্রিস। বয়স ২৭ কি ২৮শের কোঠায়। স্বাস্থ্যবান, সুঠাম, শ্যামলকালো। চাপদাড়ি দিয়ে গালটা ঢাকা। চেহারায় পৌরুষভাব প্রবল। ভুঁড়িটা অল্প একটু বাড়তির দিকে। কতবার যে সিগারেট কেনার সময় তার হাতটা অল্প ছুঁয়ে দিয়েছি সে হিসেব আছে বেহিসেবের খাতায়। তার চাহনিতেও কেমন যেন বিষন্নতা থাকতো লুকিয়ে। আমার তাকে ভালো লাগতো। এখনো লাগে। তবে সে ভালোলাগা যৌনতাসর্বস্ব। আমার কোনকালের ভালোলাগায় ও “ভালোবাসা” নামক জিনিসটা ছিলো না। আমি দেহপ্রেমী। ভালোবাসা আমার কাছে নক্ষত্রের মতো অধরা । আমি কখনো ভালোবাসা চাইও না।
এসব সাতপাঁচ চিন্তা চলে গেলো তার ডাকে। সে বললো
-“চলেন মামা ঘুমিয়ে যাই”
একটামাত্র লেপের তলে দুটো পরিণত পুরুষ শোয়া। আমি কেমনযেন বাঁধনছাড়া হয়ে গেলাম। অস্থিরতা বাড়ছে। একটু কাছে গেলাম তার। সে অন্যদিকে মুখ করে শোয়ে আছে। একটা হাত তার কোমড়ের উপর দিয়ে পেটে রাখলাম। নরম ঘাসের মতো সুবিন্যাস্ত লোমরাশি। সে নিশ্চুপ। আমি পেটে হাত বুলোতে লাগলাম। আস্তে আস্তে তার স্তনে হাত দিলাম। ভরাট, মাংশল ও লোমে আবৃত পুরুষ স্তন। তখনো সে চুপ। আলতো করে চাপ দিলাম। সে কিছু বলছে না । আমি আস্তে আস্তে চেপেই যাচ্ছি।
আস্তে করে ঘাড়ে মুখ দিলাম। একটা কিস করতেই সে এদিক ফিরে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আর কাঁপতে কাঁপতে বললো
-তোমারে আমার ভালা লাগতো অনেক আগে থেকেই। কিন্তু কখনো কইতে সাহস পাই নাই। আইজ আমি তোমারে পাইতে চাই । এই বলে সে আমার সারা শরীরে চুমুর ঝড় তুলে দিলো। লেহন মর্দন শেষে আমরা দুজনেই উলঙ্গ। এবার সে তার উত্থিত বংশদন্ড আমাতে প্রবেশ করালো। যৌনসুখে আমি সে পুরুষকে জড়িয়ে ধরলাম। বুকের উপর লোমশ পুরুষ আর তার শক্ত নাগপাশ। ধাপে ধাপে সে আমার উপর আছড়ে পড়ছে। একসময় আমায় সে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আমার ভেতর ছড়িয়ে দিয়েছে তার বীজ! হাপাচ্ছে সে। ঘর্মাক্ত দেহ তার। আমার উপর শোয়ে পড়েছে। তখন বৃষ্টি কমে গেছে। চারদিকে ধারাবাহিক অন্ধকার। ঈশ্বরের পৃথিবীতে স্থব্ধ নীরবতা!
.
৩
সে রাতে আরো ৩-৪ বার সঙ্গম হয়েছিলো আমাদের মাঝে। কখনো আমি তাকে যৌনতার ভেলায় ভাসিয়েছিলাম কখনো বা সে। সে রাত শেষ হলো। আসার আগে সে আমাতে শক্ত আলিঙ্গনে চুমু আঁকলো । কেমন যেন কাঁপছে। আমি চলে আসার আগে দেখেছি তার চোখ ভেজা।
তারপর থেকে আমি স্বাতন্ত্রিক অনিচ্ছায় দেখা করি না তার সাথে। কারন ভালোবাসায় বাঁধা পড়তে চাই না। আর ভালোবাসা ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষুন্ন করে। সচেতন কিংবা অসচেতনতাবশত।
ভার্সিটির সেমিস্টার ফাইনাল কমপ্লিট হলো। ব্যাগ গোছিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। বাড়ি যেতে ১৩ কি ১৪ ঘন্টা লাগবে। বিকেল থাকতে রওনা দিয়েছি তারমানে পৌছুতে পৌছুতে রাত্রির শেষ। মূল শহরে নামলাম । তখন রাত্র ২ টা। বাসায় যেতে হলে সিএনজি লাগবে। আধাঘন্টা দাড়িয়ে থাকলাম কিন্তু সেরাত্রের যাত্রী যেন আমিই। অবশেষে একটা সিএনজি একাই নিয়ে চললাম বাসার দিকে।
.
৪
প্রবল শীত। বাতাসে এখানেও ভেজা ভেজা গন্ধ। জঘন্য শীতবৃষ্টি হতেই পারে। প্রবল ঠান্ডার জন্য আমি ড্রাইভারের সাথে বসলাম। এতে বাতাসটা আগের মতো কামড় বসাতে পারছে নাহ। ড্রাইভারটার গা থেকে কেমন যেন মিস্টি মিস্টি ঘ্রাণ আসছে। ক্রমশ তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছে। খুব কাছে টানছে। মাথা গুলিয়ে যাচ্ছে। ক্রমশ বুনো হয়ে যাচ্ছি। মাথায় রক্ত চাপছে। চাপিয়ে রাখলাম। কারন কি করতে হবে তা আমি জানি। তার দিকে ভালোকরে তাকালাম। উজ্জ্বল শ্যামল একহারা দীর্ঘাঙ্গী। তবে ভুঁড়িটা একটু বড়। মুখভর্তি দাড়িগোঁফ। চেহারায় বুনোভাব প্রবল। আর চোখেমুখে দ্বীপ্ত প্রবল পৌরুষ। আস্তে করে তার উরু তে হাত রাখলাম। হালকা করে ঘষছি, চাপছি। সে লোকটা আমার দিকে কিছুটা অবাক দৃষ্টিতে তাকালো। আমি মুচকি হেসে তার পুরুষাঙ্গ ইঙ্গিত কর বললাম “এ দিকটা আপনি দেখে দিলে আমি ভাড়ার দিকে আপনাকে খুশি করে দিবো। “
সে বেশ কিছুক্ষন নীরব থেকে রাস্তা থেকে নেমে আড়ালমতো একটা জায়গায় দাড়ালো সিএনজি। ড্রাইভারের চোখেমুখে অবাক বিষ্ময়।
সে কিছুটা থতমত খেয়ে গ্যাছে। কি করবে তা তার চেতনার বাইরে। সিএনজির পেছনের সিটে বসলাম দুজন। সে সলজ্জ্ব নিশ্চুপ। আমি তার কোমড়ে হাত দিতেই চমকে গেলো। তাকে শক্ত করে জড়ালাম। সময় দিলাম তাকে। আস্তে করে গলার নিচু অংশে চুমু দিলাম। গলার এপাশ হতে অপাশ দাড়িঁ দিয়ে ঘষছি। সে ক্রমশ বশে আসছে। আস্তে আস্তে গলা ও ঘাড়ের কাছে জিহ্বা দিয়ে চুষতে লাগলাম। তার কন্ঠ দিয়ে বেরুচ্ছে ক্রমশ সুখ-আর্তনাদ। শার্ট খুলে তার পশমাবৃত স্তনে মুখ দিলাম। গোঙানোর শব্দ বেরুচ্ছে সমান্তর ধারায়। আমার মাথা চেপে ধরলো। পূর্বরাগ শেষে দেখি যে আমার পুরুষদন্ড মাথা তুলে পৌরুষ প্রদর্শনে ব্যস্ত। চল্লিশোর্ধ সে লোককে বিবস্ত্র করিয়ে আমার কোলের উপর বসালাম। প্রথম ধাক্কায় তার মুখ অবর্ননীয় ব্যাথায় নীল। আস্তে আস্তে সয়ে এলে সেও সক্রিয় হলো। তাকে দেখে মনে হলো বেশ উপভোগ করছে। কোলের উপর তাকে বসিয়েই চলতে লাগলো নিরন্তর ধারায় সঙ্গম। একসময় তাকে চেপে ধরে তার ভেতরে আমার সমস্ত পৌরুষরসের নিষ্কৃতি হলো। তারপর সে অবস্থায় সে আমাকে জড়িয়ে রাখলো অ-নে-ক-ক্ষ-ন !
ফ্রেশ হয়ে চলতে লাগলাম দুজনে। দেখতে দেখতে যেন বাড়ি পৌছে গেলাম। তাকে দ্বিগুন ভাড়া দিলাম।
সে কিছুতেই নিতে চাইলো না। বললো যে নাম্বারটা দিন আপনার। আর আপনি যে আনন্দ দিলেন তা আমার ২০ বছরের সেক্সলাইফে পাই নি। নাম্বারটা দিলাম তাকে। তিনি বললেন , “সময় পেলেই দেখা করবো”। এই বলে চলে গেলেন। যাওয়ার পর আমি মুচকি হাসলাম। কারন আমি ভুল নাম্বার দিয়েছি। আমার একজনের সাথে দ্বিতীয়বার সেক্স করতে ভালো লাগে না ।
.
৫
বাড়িতে সময় কাটে না। একারনেই বাড়ি আসতে মন চায় না। বাসা থেকে বের হলাম আজ। হঠাৎ চা স্টলে তার সাথে দেখা হয়ে গেলো। দেখামাত্র আমি চলে এলাম । পুরনো কথাগুলো মনে করছি।
*
তখন কৈশোরে। বুঝতে পেরেছি আমার যৌনসত্বা ভিন্ন। তাকে আমার ভালো লাগে। ভীষনভাবে। হয়তো সে বুঝতো। একদিন সন্ধ্যায় সে আমাকে তার বাড়ি নিয়ে যায়। সেখানেই আমাদের প্রথম ও শেষ সঙ্গম হয়। সঙ্গম পরবর্তী সময় আমি তাকে আমার ভালোবাসার কথা জানাই। সে আমাকে তার ঘর থেকে বের করে দেয় আর বলে যে “আমি একবারের বেশী কারো সাথে কিছু করি না।” সেদিন খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। অনেকগুলো রাতও কাটতো চোখের জলের সাথে। তারপর বদলে গেলাম। হয়তো সময়ের প্রয়োজনে , নয়তো নিজের জন্যই। কাছের মানুষগুলোকে দেখেছি। প্রেম করেছে । সুখে ভেসেছে। আবার বিরহী ব্যাথাতেও ভোগেছে। তারা থামে না। আবার প্রেমে পড়ে। আবার ,আবার,আবারো…। আর আমি শুধু সেক্সই করে বেড়াই। একবারই। একজনের সাথে। কারণ অধিকবার করে কারো প্রতি দূর্বল হতে চাই না। আর ভালোবেসে কষ্টও পেতে চাই না৷ কারণ কষ্টকে আমি ঘৃনা করি। অনেকটা!
*
হাটতে থাকলাম রেললাইন ধরেই। বাসার কাছে রেললাইন। শীতের শেষ বিকেলে ব্যাবলিন শূণ্যতা। কিছু আখাউড়া হাওয়া বয়ে আনে শুকনো পাতা। পাতাগুলো পথিকের পায়ে মুচমুচ করে ভাঙে। কেন জানিনা খুব ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে। কাউকে বুকে জড়িয়ে ধরে রাখতে ইচ্ছে করছে। চোখ দিয়ে পানি পড়ছে আমার। কষ্ট হচ্ছে খুব। এ নিঃসঙ্গ বিকেলের কাছে আমি ভীষন একা!
*
উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কারা যেন বেদনার গান গায়। কারা যেন বিষের বাঁশিতে সুর তোলে। দেখতে দেখতে রাত নেমেছে। ঈশ্বরের পৃথিবীতে শান্ত স্থব্ধতা। চারদিকে কি ধারাবাহিক অন্ধকার…..!