
লেখকঃ জনি ড্যানিয়েল
১.
বাড়ি থেকে পালিয়ে আসলাম।
এছাড়া, আর কোন উপায় ছিলনা।
আমি চাইতাম, আমি একসময় নামকরা গায়ক হবো, আমার গানের সবাই প্রশংসা করবে।
ভক্তরা আমার অটোগ্রাফ নিতে লাইন ধরবে।
সেই আশায় গুড়েবালি।
মাকে জানাতেই তিনি না বলে দিলেন।
:এত উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে বড় হয়ে নিজের বাবার ব্যবসার হাল ধরবে। তা না করে গায়ক হবে।
বাবার ইচ্ছে বড় হয়ে আমি তার লাইন ধরবো। কিন্ত এই ব্যবসা আমি কখনো ধরবোনা, বেচে থাকতেওনা।
বাবার যে কী ব্যবসা আমার জানা আছে। তিনি যে কী করেন? চোরাচালানী, স্মাগলিং , ক্যাডন্যাপিং আরো অনেক কিছু।
তিনি যে সিটি টেরর তাও জানি।
ঢাকা শহরের সন্ত্রাসীদের একমাত্র গডফাদার রাইসুল জুহালাকে সবাই এক নামে চেনে।
রাইসুল জুহালা বাবার ছদ্মনাম।
আসল নাম জাফর মির্জা। বাবাকে আজ পর্যন্ত কেউ দেখেনি ।
অবাক হবেন নিশ্চয়, অবাক হবারই কথা।
বাবা শুধু উচুপর্যায়ের টপ লিডার সন্ত্রাসীদের সাথে দেখা করেন। আর অন্যদের সাথে ফোনেই কাজ সারেন।
আমার সাথেও বাবা ফোনেই কথা বলেন।
আমি এই নরকপুরীতে থাকার ইচ্ছে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, যখন আমার সাথে বডিগার্ড দিতো।
অনেকবার নিষেধ করা সত্ত্বেও বাবা এই নিয়ম থেকে সরে আসেনি।
কারণ বাবার বিশ্বাস, তার চিরপ্রতিদ্বন্দি আরেক টপ টেরর কাশেম
মৃধা, তাছাড়া আরো অনেকেই আছে।
কিন্ত পালিয়ে মনে হয় বাচলাম না।
মূহুর্তেই বাবার টাকাখেকো কুত্তারা আমার ঘ্রাণ শুকে শুকে আমাকে খুজে বের করে ফেলেছে।
২.
অবিশ্বাসের কান্ডতো বটেই।
যুবাটি প্রায় উড়ে এসে পা দিয়ে আঘাত করল আমার সামনের বডিগার্ডকে।
গার্ডটি প্রায় চিত হয়ে পড়ে গেল।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই সামনের বাকি গার্ড এর বুকে কিল বসিয়ে দিল। বুকে হাত দিয়ে বসে পড়ল।
আমি দৌড়ে গাছের আড়ালে চলে গেলাম।
আমার পেছনের গার্ডদুটো পরিস্তিতি বুঝে ফেলেছে।
মূহুর্তেই তাদের রাইফেল তাক করল যুবাটিকে। যুবক্টিও কোমড় থেকে দুহাতে দুটো পিস্তল বাহির করে আনল।
গরজে উঠল বন্দুক দুটো। গার্ড দুটো পড়ে আছে মাটিতে।
আমি অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে মারপিঠ দেখতে লাগলাম। বাবার বিপরীত কেউ হয়তো তাকে পাঠিয়েছে।কিন্ত আমাকে কেন কিছু করছেনা কেন?
ভাবতেই সামনে তাকালাম, যুবাটিকে দেখলামনা। গার্ডগুলো মাটিতে পড়ে আছে।
হঠাৎ পিছন থেকে রুমাল হাতে একটা লোমশ হাত আমার মুখে চেপে ধরে।
একটা মিষ্টি গন্ধ নাকে সুড়সুড়ি দিয়ে ফুসফুসে চলে যায়।
আমি বুঝতে পারছি, আমার স্নায়ুগুলো দূর্বল হয়ে পড়ছে।
মুহুর্তেই দেহটা নিস্তেজ হয়ে যায়।
★ ★ ★
ঝাকুনী এবং পিস্তলের তীব্র শব্দে চেতনা ফিরে এল।
খাটে শুয়ে আছি।
জানালাগুলোতে নীলাভ পর্দা ঝোলানো। একপাশে টেবিল, টেবিলের সাথে লাগানো একটা দরজা।
পালিয়ে যাওয়া যাবেনা, খাটের মাথার দিকে আমার একটা হাত হাতকড়া দিয়ে লক লাগানো।
নড়াচড়ার উপায় নেই।
স্মৃতি ফিরতে লাগল।
কেউ আমাকে কিডন্যাপ করেছে।
পিস্তলের একটা বিকট শব্দে জানালার কাচটা মাটিতে ভেঙ্গে পড়ল।
সাথে ভয় ও রোমাঞ্চ শরীরে ভর করল।
সাথে সাথেই দরজা খুলে যুবাটি দৌড়ে এসে হাতকড়া খুলে দিয়ে হাত ধরে হেচকা টান মেরে ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়ল।
তারপর সিড়িভেঙ্গে নিচে নামতে থাকে।
হঠাৎ পিস্তলধারী দুটো লোক সামনে উধয় হয়।
কিন্ত পরিস্থিতি সামলাতে পারেনা, তার আগেই গর্জে ওঠে যুবাটির হাতে থাকা পিস্তল। মূহুর্তে দুটি বুলেট ছুটে যায় লোক দুটির বুকে। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটে। রক্তের ছিটা আমার ও যুবার মুখে পড়ে।
লোকগুলো সিড়িতে পড়ে যায়। লোকদুটোকে ডিঙিয়ে নিচে নামি। সামনে আরো তিন চারটে লোক দাড়িয়ে থাকে, তাদেরকেও একই কায়দায় শেষ করে গ্যারেজে ছুটে আসে,
মোটরসাইকেলটাকে চাবি দিয়ে মূহুর্তের মাঝেই ঘুরিয়ে নেয়, আমাকে তার পিছনে ওঠতে নির্দেশ করে। বুঝতে পারছিনা আমি কী করব? দৌড় দিতে চাইলাম, কিন্ত সে হেচকা টাতে আমাকে গাড়িতে তুলে
নেয়।
স্টার্ট নিয়েই দে ছুট….
:আমি বুঝতে পারছিনা আমাকে কেন কিডন্যাপ করেছেন? আর আমাদের ওপর হামলাকারীরাই বা কে?
:এখন কোন কথা নয়, ছোকরা?
এখন বড় বিপদ।ধমকে ওঠে সে।
ভয়ে কলজে শুকিয়ে আসছে।
এবার বুঝি শুকিয়েই গেল।
বিপদের কথা বলা মাত্রই একটা বুলেট এসে চুরমার করে দিল গাড়ির লেফট মিররটাকে ।
ডান মিররে তাকিয়ে দেখলাম, হামলাকারীরা দুটি মোটর কার পিছন থেকে ধাওয়া করেছে।
:নড়াচড়া না করে মাথা নুয়াও তাড়াতাড়ি।
আমি মাথা নুয়ে রাখলাম।
যুবাটি বাম হাতে গাড়ির প্যানেল নিয়ন্ত্রন রেখে,আমার কাধের উপর তার পিস্তলধরা ডান হাতটা রেখে পর পর পিছনে চার পাচটা গুলি করল।
পিস্তলের শব্দে আমার শরীর ঝিন ঝিন করে ওঠল।পেছন থেকে দুটো লোকের মৃত্যু আর্তনাদ শোনা গেল।
প্রথমে এগিয়ে আসা মোটরসাইকেলটা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে সামনের ল্যাম্পপোষ্টে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে গড়িটা গড়িয়ে পড়ল।
আর একটা গাড়ি আছে।
যুবাটি গাড়িটাকে লক্ষ্য করে গুলি করতে লাগল।
ম্যাগাজিন এ বুলেট শেষ।
কিন্ত গাড়িটাকে এখনো ধরাশয়ী করতে পারেনি।
যুবাটি হয়তো বুঝতে পেরেছে, তাদের সাথে পেরে ওঠবেনা।
আমার হাতে পিস্তলটা ধরিয়ে বলল, তার পকেট থেকে বুলেটের ম্যাগাজিনটা বের করে পিস্তলে চালান দিতে।
আমি কাপা কাপা হাতে বন্দুকটা হাতে
নিয়ে তার পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিলাম।
পকেটটা অনেক লম্বা, হয়তো হাটু পর্যন্ত। আস্তে আস্তে পকেটের গভীরে হাত ঢুকিয়ে দিলাম।
যুবাটির উরুর স্পর্শে আমার শরীরের লোম খাড়া হয়ে যাচ্ছে।
একটা শক্ত কিছুতে হাত লেগে গেল। নিঃশ্বাস গুলো নিতে বড়ই কষ্ট হচ্ছে।
শক খাওয়ার মতো হাত ছিটকে বাইরে বেরিয়ে নিয়ে এলাম।
:কী হলো? তাড়াতাড়ি বের কর।
ভয়ে ভয়ে আবার ঢুকালাম। শক্ত জিনিসটা বের করে আনলাম।
ম্যাগাজিন থেকে বুলেটগুলো পিস্তলে চালান দিয়ে তার হাতে দিলাম।
:উহ! টেরোরিস্টের ছেলে পিস্তলে হাত দিলে এত ভয় পাও কেন?
আমি চমকে ওঠলাম।
একটু অসতর্ক হতেই পিছন হতে একটা বুলেট আমার হাটুতে ঢুকে গেল। আর্তনাদ করে ওঠলাম।
খুব জ্বলছে।
:সাবধান, নড়াচড়া করবেনা।
সেফহাউজে পৌছে ব্যবস্থা করতে হবে।
সা করে যেন বাক নিল গাড়িটা, চোখের পলকে ঢুকে গেল একটা গলিতে। হামলাকারীদের বিভ্রান্ত করতে হয়তো এই ব্যবস্থা।
কিছুদূর এগিয়ে একটা বাড়ির গেট দিয়ে ঢুকে গেল বাড়িটায়।
এটাই সেফ হাউজ। গাড়িটা পার্ক করে যুবাটি কোলে তুলে নিল আমাকে।
শরীরে একটা ঝাকি খেলাম শ্বাসকষ্ট টা টের পাচ্ছি। চেতনাটা গুলিয়ে যাচ্ছে, নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে আবার পেশীগুলো।
,★ ★ ★
নিচতলায় আগোরার শপিং মল। ওপরের চৌদ্দতলা আবাসিক। আমরা আছে বারোতলাতে।
হুইলচেয়ার ছিল না, এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতই ছিল না রাহাত। গ্যারেজ থেকে রুম পর্যন্ত পুরোটা রাস্তা আমাকে কোলে করে তুলে আনতে হয়েছে। অসময়ে এসেছে আমরা, গ্যারেজ বা লিফটে কারও সাথে দেখা হল না। ওপরে ফ্ল্যাতে এনে আমাকে তার বেডরুমে বসিয়ে দিল রাহাত।
তার মোবাইলের রিংটোন বেজে উঠল।
ফোন ধরে বলল, রাহাত স্পিকিং।
(যুবাটির নাম তাহলে রাহাত)
কাজ কম্পলিকেট।
Done,
ফোন রেখে দিলো।
কিছুটা বিভ্রান্ত দেখাচ্ছে তাকে। জানিনা কেন?
“একটু পানি খেতাম।” মিন মিন করে বলল আমি।
আমার দিকে এগিয়ে এল রাহাত। সতর্ক দৃষ্টিতে দেখছে। আসলেই পিপাসার্ত লাগছে আমাকে। বয়স কত হবে রাহাতের।
২৪ কিংবা ২৫.।
“ক্লিক” জাতীয় শব্দের সাথে সাথে আমার ডানহাতে হাতকড়া আটকে ফেলল রাহাত। অন্য মাথা লাগিয়ে দিল খাটের এক কোণে। অসহায় একটা অভিব্যক্তি ছেয়ে গেল আমার মুখে। ভ্রুক্ষেপ না করে বের হয়ে গেল রাহাত।
পানির ব্যবস্থা করার জন্যে হয়তো। আমার মত একটি ছেলেকে তার বন্দী বলে বাড়তি সুযোগ সুবিধে দেওয়ার ভুল করতে সে পারে না। কারণ গডফাদার অথবা তার সহচরদের সাথে আমার যোগাযোগ থাকতে পারে তাই, সাপেরও পা থাকে না। তাই বলে ঘরের মধ্যে সাপ এনে খোলা ছেড়ে রাখবে না কেউ।
পানির বোতল হাতে নিয়ে ফিরে এল রাহাত। মুখ খুলে বাড়িয়ে দিল ওটা।
ঢক ঢক করে পানি খেলাম। এত ব্যস্ত হয়ে কোনদিনও কাওকে পানি খেতে দেখেনি হয়তো। দেখে মনে হয় কারো কথা মনে পড়েছে।
“আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আর কারও কথা ভাবছেন।” খালি বোতলটা ফিরিয়ে দিতে দিতে বললাম।
কিছুটা চমকাল রাহাত, “আর পানি লাগবে?”
“না। থ্যাংকস।” খালি বোতলটা ফিরিয়ে দিললাম।
পিস্তল বের করে চেম্বারে একটা রাউন্ড ভরল রাহাত। একটা মাত্র গুলি করে শত্রুপক্ষ আমার একটা পাকে অকেজো করে দিয়েছে। আমাকে এভাবে ভাবতে দেখে
আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল রাহাত। হোস্টেজের সাথে হাসি-তামাশার সম্পর্ক হয়তো কিডন্যাপারের থাকে না। তবে মনে হয় কিছু প্রশ্ন জানার আছে তার। প্রশ্নবোধক মুখটা নিয়ে
খাটের কোণে গিয়ে বসল ও। লালচে ঠোঁট কামড়ে বসে আছে এখন আমি। ছোটাছুটির পর রক্ত মুছে দেওয়া মুখে কিছু ভেজা চুল এসে পড়ে আছে কপালে। নিজেকে কিছুটা অপ্রস্তুত করে ফুটিয়ে তুলতে লাগলাম। সে হয়তো ভাবছে, কিডন্যাপারকে সিডিউস করার জন্য এই ভঙ ধরেছে ছেলেটা। রাহাত এসব নিয়ে মাথা ঘামাল না।
“তোমার জন্য আমার তরফ থেকে ছোট্ট একটা প্রপোজাল আছে।” ষড়যন্ত্রকারীদের গলাতে বলল সে।
আমার মুখ থেকে লাবণ্যের ছাপ মুছে অর্ধেক হয়ে গেল, “আমাকে নিয়ে কি করবেন?”
আপাদত তোমার গুলিটা বের করে আনি।
খাটের পাশে রাখা আলমারি টা থেকেএক্টা ফাস্ট এইড বক্স বের করলো।
তারপর আমার গুলিবিদ্ধ স্তানে একটা ইঞ্জেকশন দিলো। সাথে সাথে অসাড় হয়ে গেলো জায়ঘাটা।
আমাকে অপর দিকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বলল।
তার কাজ করে যেতে লাগল।
আমি কিছুই টের পেলামনা।
শেষ হওয়ার পর জিজ্ঞাস করলামঃ আমাকে কিডন্যাপ করেছেন কেন??
“আমি করেছি উপ্রের নির্দেশ এ”
“কে”?
“নাম বলা যাবেনা, সময় হলে সব জানতে পারবে।
“আমাকে নিয়ে ওরা কী করবে??”
“তোমার কপালে কি আছে তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। ক্যারিয়ার শুরু করছি আমি। নতুন চাকরি করতে যাচ্ছি ব্যানডিটের হয়ে। এটাই আমার প্রথম প্রজেক্ট। তোমার কোন ধারণা আছে ব্যানডিট সম্পর্কে?”
দুইপাশে মাথা নাড়ল আমি কিডন্যাপার খোশগল্পে মেতে উঠবে তা সম্ভবতঃ ভাবেনি আমি। কিছুটা হতভম্ভ দেখাচ্ছে আমাকে।
“ওয়েল দেন। এই ঘরে আমরা নিজেদের স্টোরি শেয়ার করব। ব্যানডিট নিয়ে তোমাকে বলব আমি। বলব মরুভূমির মত শুষে পানি খাওয়ার দৃশ্য কেন ওভাবে দেখছিলাম। তবে তোমার দিকের গল্পও বলতে হবে তোমাকে। উইটনেস প্রটেকশন? ফাক অল দ্যাট। এর মধ্যে আর কিছু আছে।”
অস্বীকার না করলেও স্বীকার করার কোন লক্ষণ দেখা গেল না আমার মধ্যে।
আবারও বলতেই হল রাহাতকে, “দেখ, তোমাকে নিয়ে কি করবে ওরা তা আমার জানা নেই। ভাল কিছু না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে আমার আসলেই মাথাব্যথা নেই তোমার কপালে যা আছে তা নিয়ে। কিন্তু যদি তোমার গল্প দিয়ে আমাকে কনভিন্স করতে পারো, আমি পার্সোনালি তোমার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব। স্কাউট’স অনার।
★ ★ ★
“ব্যানডিট হল অর্গানাইজড ক্রাইমের নতুন পদ্ধতি। জনৈক ব্যানডিট এই অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা। দুটো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে আসতে হয় এখানে সবাইকে। একটা জেনারেল ইউনিভার্সিটি। আরেকটা ব্যানডিট ইউনিভার্সিটি। আন্ডার গ্রাজুয়েট কাওকে এখানে নেওয়া হয় না। এই অর্গানাইজেশনের প্রত্যেকে উচ্চশিক্ষিত। পাবলিক ভার্সিটির স্টুডেন্ট প্রত্যেকে। অ্যাকাডেমিকভাবে ব্রাইট রেজাল্ট করা প্রতিটি ক্রিমিনাল। এটাই আমাদের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অস্ত্র।”
“আপনি কোন ইউভার্সিটির স্টুডেন্ট ছিলেন?” আগ্রহ দানা বেঁধে উঠছে আমার মুখে।
“বুয়েট। ইলেক্ট্রিক্যালে ছিলাম আমি। সিজিপিএ 3.90। ব্যানডিট ইউনিভার্সিটির বার্গলারী ছিল আমার মেজর। তবে স্টুডেন্ট ছিলাম ইনডোর ক্রাইমস, টেকনিক্যাল বাগশট অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক প্যানারোমা ডিপার্টমেন্টের। সিজিপিএ খুব একটা ভাল ছিল না ওখানে। ফ্রড অ্যান্ড ইম্পিউডেন্সে ছিল সি গ্রেড। একটা কেস খেয়ে গেছিলাম। তবে নতুন কিছু নিয়ে থিসিস করছিলাম দেখে ওভারঅল আমার রেজাল্ট খারাপ বলা যাবে না। ইলিউশন এক্সপার্টাইজের ওপর আমার কিছু জার্নাল ছিল।”
“তারমানে এখন ক্রাইম আপনারা যথেষ্ট পড়াশোনা করেই করছেন?” কিছুটা অবাকই দেখাচ্ছে আমাকে।
“অবশ্যই। নাহলে পারব কেন বাকিদের সাথে? আমাদের কেউ জেলে যায় না কোনদিনও।” সবগুলো দাঁত দেখিয়ে দিল রাহাত।
“ভাল রেজাল্ট ছিল আপনার। দেশের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়েছিলেন। চাকরী বাকরি করে বিয়ে-থা করবেন। তা না করে রাস্তাঘাটে পাছায় গুলি খাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘুরছেন কেন তাই বুঝলাম না।” প্রশ্ন করলাম আমি।
হতাশায় মাথা দুইপাশে নাড়ল রাহাত, “পয়েন্টটা ধরতেই পারেননি। ব্যানডিটের প্রত্যেকেই যথেষ্ট কোয়ালিগফাইড। আমি অন্তত একজনকে চিনি যে গুগলে জব করে। তুখোড় প্রোগ্রামার। তার নাইট ওয়াচ অবশ্য আইনী কিছু না। আমরা এসব টাকার জন্য করি না। থ্রিলের জন্য করি। আমাদের একেকজন কোয়ালিফাইড ইন্টেলেকচুয়ালস, মিঃ__
কী নাম আপনার?
_জনি ড্যানিয়েল, আপনি আমার নাম না জেনেই কিডন্যাপ করেছেন??
__কিডন্যাপ করতে গেলে ছবির প্রয়োজন হয়না, একটা ছবি হলেই চলে, আর তোমার নাম জানি, এখন মনে নেই। আর বেচে থাকার কথা ববলছো,?খেয়ে পড়ে বাচার জন্য আমাদের একশ একটা বৈধ পথ আছে। আমরা ক্রাইম করি, কারণ আমরা ক্রাইম করতে ভালবাসি।”
“মাই গড।” বিড়বিড় করে বললাম আমি। বলে কী??
“ব্যানডিট ইউনিভার্সিটির অস্তিত্ব আছে এটা অবশ্যই সরকার দূরে থাকুক, সাধারণ মানুষ পর্যন্ত জানে না। সাবান কোম্পানির কাভারে বেজমেন্টে ক্লাস হয়। বিলিভ করবে না, ওখানে একটা শুটিং রেঞ্জও আছে। সাইট অ্যাডজাস্ট অ্যান্ড পারফেক্ট শুটিং কোর্সে এ প্লাসের কম পেলে কাওকে সার্টিফিকেটই দেওয়া হয় না। আমাদের ট্রেইনিং পুলিশ বা আর্মির চেয়ে কয়েকগুণ উন্নত। এক্স-কমান্ডোরা আমাদের ট্রেনিং দিত। ওখানেই মিথিলার সাথে পরিচয় হয়েছিল আমার।”
আমি এবার আর কিছু বললাম না।
বলে যাচ্ছে রাহাত, “মিথিলা পড়ত ঢাকা মেডিকেল কলেজে। তার বড় ভাই ইন্টার্নি করছে তখন। দুটোই ছিল ব্যানডিট ইউনিভার্সিটিতে। তবে ভার্সিটির ফাইনাল ইয়ারে এসে মিথিলার ভাই ইমরানের সাথে অন্য ডিপার্টমেন্টের কিছু ছেলের মধ্যে ঝামেলা হয়ে গেল। ইমরানের হাতে গুলি করে তাকে ‘শিক্ষা’ দিতে চেয়েছিল তাদের একজন। কিন্তু ভাইয়ের দিকে অস্ত্র তুলতে দেখে নিজেকে তার সামনে ছুঁড়ে দিয়েছিল মিথিলা।”
মাথা নিচু হয়ে গেছে রাহাতের। পকেট থেকে প্যাকেট বের করে একটা সিগারেট ধরাল সে।
“মিথিলাকে ভালবাসতেন আপনি?”
ছোট্ট এক শিশুর মত মাথা দোলাল রাহাত, “তা বাসতাম। তবে পাঞ্চ লাইন এটা না। ইমরানকে গুলি করতে আসা ছেলেটা এ ডাবল প্লাস পাওয়া শুটার ছিল। গুলিটা সে ইমরানের হাতেই করেছিল। বোকা মেয়েটা নিজেকে অযথা সামনে ছুঁড়ে দিয়েছিল সেদিন। হলোপয়েন্ট বুলেট পেটে এসে লাগলে কি হয় তা আশা করি জানো। বাঁচার উপায় ছিল না ওর। ঢক ঢক করে পানি খেতে খেতে মারা গেল মিথিলা।”
আলতো করে মাথা দোলালাম আমি। হয়তো কিডন্যাপারের প্রতি সামান্য সহানুভূতির ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে আমার মুখে।
একটা শুণ্যতাও অনুভব হচ্ছে বুকের মধ্যে। আর শুনতে ইচ্ছে করছেনা তার লাভ স্টোরি।
“ফেয়ার এনাফ। আপনার স্টোরি আপনি শুনিয়েছেন। যথেষ্ট সত্য মনে হয়েছে কথাগুলো। আমি আমার সাইডের স্টোরি শোনাতে পারি। তবে আপনাকে ট্রাস্ট করব কিভাবে? কিভাবে বুঝব আপনি আমার কোন শত্রুপক্ষের লোক নন? আমাকে মেরে ফেলার জন্য তুলে আনেননি? হয়ত স্টোরি শোনার নাম করে আমার বাবার অবস্থানটা নিশ্চিত হয়ে নেবেন। তারপর গুলি করবেন আমার ও বাবার মুখে?”
আমি তোমার শত্রুপক্ষের হলেও আমি চাইছিনা তোমার কোন ক্ষতি হোক।
“কেন?
তুমি সবে এক কিশোর, তোমার জন্যে আরো বহু জীবন পড়ে রয়েছে।
“এনাফ, আপনাকে কে পাঠিয়ছে? তাই বলুন। সরাসরি তার মুখের দিকে তাকালাম।
“প্রশ্ন টা জানা কী এতই জরূরী? সে পালটা প্রশ্ন করলো।
আমি উত্তর দিলামনা,
পা টা এখনো নাড়াতে পারছিনা।
“আচ্ছা,সজিব কে চেনো? ” তার প্রশ্নে আমি চমকে উঠলাম।
সে সজীব কে চেনে কী করে?
সজীব গতবছর রোড এক্সিডেন্ট এ মারা গিয়েছিল। সজিব আমার চাচাতো ভাই।
আমি সজীব কে অত্যন্ত ভালোবাস্তাম। একদিন রাত্রে দুজনে লং ড্রাইভ করে বাড়ি ফেরার সময় গাড়ি ব্রেক ফেল করে।
সজিব ড্রাইভিং করছিলো।
সে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা।
গাড়ি সমেত উলটো পড়ে যাই খাদে।
দীর্ঘ এক সপ্তাহ কোমায় থেকে আমার জ্ঞান ফিরে জানতে পারি, সজিব মারা গেছে।
আমার বুক্টা হাহাকার করে উঠেছিল।
তারচেয়ে বড় ব্যাপার হলঃ চাচা আমার বেচে থাকাকে কোন মতেই মেনে নিতে পারলোনা।
আমাকে সজিবের মৃত্যুর জন্য দায়ী করলে বাব ও চাচার মধ্য শত্রুতা বেড়ে যায়। তারপর কয়েকমাস কেটে গেলে চাচার কোন প্রতিক্রিয়া না দেখা গেলে সবাই ভাবলো,, চাচা হয়তো ভূল বুঝতে পেরেছে।
কিন্ত রাতুল কীভাবে সজিবের কথা জানলো??
“তুমি সজিবকে হত্যা করেছিলে কেন?
তার প্রশ্নের জবাবে যারপরনাই অবাক হলাম।
আমি তাকে সবকিছু ঘটনা খুলে বললাম।
ঘটনা শোনার পর সে বলল তোমার চাচাই তোমাকে মারতে পাঠিয়ে ছিলো। কিন্ত তোমার নিষ্পাপ চেহারা দেখে মনে হয়নি, তুমি খুন করতে পারো?? তাই শুধু কিডন্যাপ করেছি।
আমার পিছনে হয়তো তোমার চাচা স্পাই লাগিয়েছিল।
আমাকে তার নির্দেশ অমান্য করতে দেখে আমার ওপর প্রথম আক্রমণ করে ওই বাসাটায়।
আমাদের খুজে হয়ত এখানেও চলে আসতে পারে
“তাহলে এখন উপায়??
গেট ডাউন, বলেই সে খাটের ওপাশে চলে, আমার গলার পাশে গরম হল্কা ছুটে যাওয়ার অনুভুত পেলাম।
তারপরই বিকট শব্দ।
পাশে রাখা ফুলের বিরাট টবটা ভেংগে পড়ল।
আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। রাহাত দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে পা দিয়ে খাটএর একপাশ নিচে নামিয়ে দিলো।
আমি গড়িয়ে এসে তারওপর এসে পড়লাম। হাতটা লক লাগানো থাকায় ব্যাথা পাচ্ছি ভীষণ। সে পকেট থেকে চাবি বের করে হাতটার হ্যন্ডকাফ খুলে দিলো।
এদিকে খাটের উপর গুলিবর্ষণ হতেই চলছে। দু একটা খাটের কাঠ এফোরওফোড় করে দিচ্ছি। কিছুক্ষন নীরবতা।
মুহুর্তেই সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে রাহাতকে।
বুকে ভর দিয়ে এগিয়ে গেলাম করিডোর এর দিকে।
দরজার এপাশে পিস্তল্ধারী দুটো ছায়া দেখতে পেয়ে বুঝতে বাকি রইলোনা দরজার ওপাশে যমদূত দাঁড়িয়ে আছে। এদিক ওদিক হলেই কেল্লাফতে।
‘তোমার হাত খুলা আছে এখন । পাশের বিল্ডিং-এ একটা স্নাইপার আছে । পুলিশের লোক নয় ওরা । কাজেই – হাত খুলে দিলেই দৌড় দেবে না । বুকে হেঁটে বেরিয়ে যাব আমরা । বুঝতে পেরেছ ?’ সে বলল।
ফ্যাকাসে মুখে চেয়ে থাকি আমি।
আফটার শক ট্রমা ।
যা আছে কপালে।
দুটো জীবন জীবিত থাকাটাই এখন আমাদের ট্রাম কার্ড ।
এখান থেকে যতদ্রুত সম্ভব বেড়িয়ে পড়তে হবে ।
তারপর ছাড়াতে হবে ঘটনার প্যাঁচ ।
যা ঘটছে চারপাশে – তার সাথে বড় কোন কিছুর সম্পর্ক না থেকেই যায়না। নিশ্চিত, চাচার লোক।
রাহাতের হাত ধরে ধীরে ধীরে ক্রল করে হিডেন ডোর এর দিকে এগিয়ে যাই আমরা
গ্যারাজের মটরসাইকেলটার কাছে জ্যান্ত পৌঁছতে পারলে হয় …
ওই অবস্থাতেই আস্তে করে দরজা খুলে বের হলাম । সিঁড়িঘরটা অন্য অ্যাংগেলে থাকায় আশা করছি – স্নাইপারদের নাগালের বাইরে এটা ।
‘উঠে পড় ।’ আমার হাত ধরে টেনে তোলা লাগল ।
বের হয়ে সাবধানে তাকালাম সিঁড়িঘরের চারপাশে । কোন নড়াচড়া নেই ।।
পিস্তলটা বের করে ফেলেছে সে ।
লিফটটা গ্রাউন্ড লেভেলে নামতেই প্রস্তুত হলাম । বাইরে আরও আততায়ী থাকতে পারে ।
দরজাটা নিঃশব্দে খুলে গেলেও গ্যারেজে কাওকে দেখলাম না ।
আজ সকালেই মনে হয় মটরসাইকেলটা গ্যারেজে ইমার্জেন্সী এস্কেপের জন্য রাখা ছিলো।
গেরেজের দরজার ওপাশের কাচে একটা মাত্র ফুটো হয়েছে। পরমুহূর্তে ওপাশ থেকে রক্তের একটা ধারা ছিটকে পড়ল দরজার ওপর। গুলি কোথায় লাগিয়েছে তা খুব ভাল করেই জানে রাহাত।
সুপিরিয়র ভেনা কেভাতে।
সুন্দর মেঝেটা রক্ত পড়ে নষ্ট হল।
“শত্রুপক্ষ। এখান থেকে বের হতে হবে আমাদের।” দুই বাক্যে ব্যাখ্যা দিল রাহাত। আমার মতামতের কোনরকম তোয়াক্কা না করে এক হাতে কোলে তুলে নিল আমাকে দৌড়াতে পারছিনা। অনেকটা ছোট বাচ্চাদের যেভাবে ধরা হয়।
“বাঁচতে চাইলে আমার গলা জড়াও।”
★ ★ ★
বুকে সেঁটে আছে আমি। গোড়ালির নিচ থেকে দিয়ে শক্ত করে আটকেছি রাহাতকে। ডান হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেছে গলা। রাহাতের বাম হাত এখন আমার কোমরে। পিছলে পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করছে আমাকে ডানহাতে পিস্তল।
লিফটটা থাকে কমন একটা গ্রাউন্ডে। প্রতি ফ্লোরে চৌদ্দটা করে ফ্ল্যাট। করিডোর ধরে সেই কমন গ্রাউন্ডের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল ওরা। করিডোরের অন্য প্রান্ত থেকে ছিটকে বের হয়ে আসা দুই সাবমেশিনগানধারীর পরিকল্পনা আর যাই হোক, তাদের সাহায্য করা ছিল না।
বিদ্যুতবেগে হাত উঠতে শুরু করেছে রাহাতের, মাপা বৃত্তচাপ কেটে উঠল হাত। সবচেয়ে কম অ্যাঙ্গেলের পার্থক্য রেখে দুইবার ফায়ার করেছে সে। দুটো বুলেটই আঘাত করেছে শত্রুদের উইন্ডপাইপে। গরু জবাইয়ের মত রক্তের ফোয়ারা বের হয়ে এল তাদের গলা থেকে।
তার বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নেওয়া শত্রু যখন কোন ক্রাইম অর্গানাইজেশনের সদস্য, তখন তাদের নিজের লেভেলটা বুঝিয়ে দেওয়ার দরকার।
“তোমার পেছনে!” রাহাতকে খামচে ধরে বলল আমি।
তার আগেই রিঅ্যাক্ট করেছে অবশ্য ও। মোটর সাইকেলের কাছাকাছি এসে গেছি আমরা। ত্রিশ ফিট দূর থেকে একটা লাইটেস গাড়ির চকচকে রংএ অস্পষ্ট প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে পেছনের। দশ ফিট পেছনে দরজা খুলে যাচ্ছে এবং সেখান থেকে একজন এলোমেলো চুলের তরুণ বের হয়ে এসেছে, তা টের পেতে এতটুকুই যথেষ্ট ছিল।
ঘুরেও তাকাল না রাহাত। আসলে নিজের পেছনের দিকে পিস্তল তাক করতে এটা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না তার।
খুব কাছ থেকে গুলির শব্দ হয়েছে, আমি কেঁপে উঠললাম একবার।
“কোথায় লেগেছে হারামজাদার?” নিছক কৌতুহলের বশেই জানতে চাইল রাহাত। টার্গেটকে না দেখে গুলি করেনি ও ফিল্ডে। ভার্সিটির ল্যাবে প্রচুর করতে হয়ে এ কাজ। এ প্লাস পাওয়া এত সহজ কিছু নয় ওখানে।
“গ-গলাতে।” পিছনে থাকিয়ে কোনমতে বলল আমি।
“এজন্যই গ্যারেজ বরাবর ফ্ল্যাট নিতে আমার এত আগ্রহ।” খুশিতে গদ গদ হয়ে গেল রাহাত। মোটরকেও খুশি দেখা গেল। আমাকে পিছনে বসিয়ে যেই স্টার্ট দেবে তখনি,,,,
হাত ওপরেই তোলা ছিল খুনীর। কিন্তু ট্রিগার টানার সময় দেওয়া হল না তাকে। অসামান্য রিফ্লেক্সে কোমরের কাছ থেকেই গুলি করেছে রাহাত। হাত তোলার চেষ্টাও করেনি।
ডান চোখের ভেতর দিয়ে ঢুকে গেছে বুলেট। তার পিছনে রাখা গাড়িটায় গিয়ে দড়াম করে আছড়ে পড়ল লোকটা। সেদিকে একবারও না তাকিয়ে স্টার্ট দিল রাহাত।
বারোতলা পর্যন্ত নির্বিঘ্নেই নেমে এল ওরা। এতক্ষণ পর্যন্ত আক্রমণকারী দল হয়ত আশা করেছিল লিফট ধরেই নেমে আসবে তারা। হতাশ হতে হয়েছে তাদের। তবে বেশিক্ষণের জন্য না। সিঁড়ি বেয়ে প্রথম দলটাকে নীচে নেমে আসতে দেখা গেল গ্যারেজের দিকে।
তাদের দিকে কতগুলো বুলেট ছুড়ে দিয়েই আবার দে ছুট,,,,,
পেছন থেকে কতগুলো লোকের আর্তনাদ মিলিয়ে যেতে লাগলো।
★ ★ ★
হাসপাতালেএ বেডে শুয়ে আছি। মা আর কতগুলো গার্ড চারপাশ ঘিরে রেখেছে। রাহাত হাস্পাতালে ভরতি করে দিয়েই চলে গিয়েছিল।
সেও চায়না, তাকে কেও জানুক, দেখুক,,, আড়াকে খেলতে চায় সে,
হাস্পাতালে এক সপ্তাহ থাকার পর সুস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে এলাম।
বাবা, মা প্রশ্নে জর্জরিত করছে আমাকে। কে তোকে বাচাল? কে কিডন্যাপ করলো?? ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি শুধু বললামঃ জানিনা।
তারপর প্রতিদিন ওকে খুজতাম বিভিন্ন অলিগলিতে,
পেলামনা,,খোজে।
একসময় নিউইয়র্ক চলে আসলাম।
তারপর আমার জীবন সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে লাগলো।
ধীরে ধীরে তার কথা ভুলে যেতে থাকলাম।
মাঝে মাঝে তার পিস্তল চালানো টা মনে পড়লেই রোমাঞ্চকর লাগতো।
শেষে দীর্ঘশ্বাস ফেলে দিতাম,,,