
লেখকঃ মারুফ
তখন আমি অনেক ছোট। বয়স সবে মাত্র দশ-বারো বা তার বেশি হবে। তাই স্বাভাবিকভাবেই আমি ও আমার বন্ধুদের শারীরিক ও মানসিক অনেক পরিবর্তন আসা শুরু করলো। সেক্স নিয়েও কৌতুহল শুরু হল। কি এটা? কিভাবে করতে হয়? মাঝে মাঝে রাতে যে স্বপ্নদোষের ফলে বীর্যপাত হয় সেটা কি কাজে লাগে? সিমেন নির্গত হওয়ার পর শরীরটা এমন নিস্তেজ লাগে কেন? এসবের উত্তর খুঁজতাম। তখন তো এতো মোবাইল, ইন্টারনেটও ছিলো না যে সবকিছু নেট ঘেঁটে বের করবো। আর বাড়ীর বড়রাও কেমন জানি বাঁকা চোখে তাকাতে লাগলো আমার প্রতি। আমার খালামনি তো আমার কন্ঠস্বর শুনে প্রায়ই বলতেন তুই বড় হয়ে গেছিস রে। তর কন্ঠ তর মামার মত। তুই চিল্লাচিল্লি করলে মনে হয় ভাইয়া বাচ্চাদের মত এরকম করছে কেন! কিন্তু আমি আমার কন্ঠস্বরের পার্থক্য তেমন ধরতে পারতাম না। ভাবতাম বড় হলে হয়তো এরকমই হয়। ছোটবেলায় স্কুল ও আমার পরিবার থেকে যৌনশিক্ষা পাইনি। কারণ এটা ট্যাবু! একটা নিষিদ্ধ আনন্দ! এটা আস্তে আস্তে বড় হলে বাচ্চারা এমনিতেই শিখে যাবে। তাদের ধারণা হয়তো এরকমই ছিল। যাইহোক ছোটবেলায় আমার যৌন শিক্ষক ছিলো গ্রামের এক বখট্য বন্ধু। তার নাম রাজু (ছদ্মনাম)। রাজু আমার ছেয়ে এক-দেড় বছর বড় ছিলো। ও মারামারিতেও উস্তাদ ছিল।সব সময় আমার পাশে থাকতো। আমি একটু ভীতু টাইপের ছিলাম। কারো সাথে মারামারি করতাম না। তবে রাজু পাশে থাকলে আমিও প্রতিপক্ষকে দু’ একটা কিল ঘুসি দিয়ে আসতাম।
প্রতিদিনই স্কুল শেষে বিকেলে মাঠে খেলতে যেতাম। প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে পড়তে না বসলেও আম্মু কিছু বলতেন না। কারণ এর পরেরদিন শুক্রবার, ওই রাতে সব পড়ে শেষ করবো বলে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসতাম। রাতে লুকোচুরি খেলা ছিল আমাদের জাতীয় খেলা। আমি সব সময় চাইতাম রাজুর দলে থাকতে। কারণ ও খুব ভাল লুকোতে জানে। দম বন্ধ করে খড়ের ভিতর অনায়াসেই সে লুকিয়া থাকতে পারে। তাই আমি ছিলাম ওর চরম ভক্ত। মাঝে মাঝে একসাথেই লুকিয়ে থাকতাম। আমার কষ্ট হবে বলে রাজু আমাকে জড়িয়ে ধরে বলতো তুই মাথা আমার শার্টের মধ্যে লুকিয়ে রাখ। তাহলে আর সমস্যা হবে না। J
ছোটবেলা থেকেই আমি অন্য ছেলেদের থেকে একটু আলাদা। বন্ধুরা যখন মেয়ে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ব্যাবচ্ছেদ করতো আমি তখন অন্যকিছু ভাবতাম। হ্যাঁ আমার ভাবনা জুড়ে একটা মেয়ের জায়গায় ছিল একটা ছেলে । তখনও সবকিছু বুঝতাম না। শুধু বুঝতাম এই ছেলেটাকে আমার ভাল লাগে। রাজু সেই ছেলেটা। আমার প্রথম প্রেমিক। বাল্যকালের বন্ধু। একসাথে নদীতে গোসল করতাম, মকতবে যেতাম, বর্ষায় মাছ ধরতাম, নৌকা বাইতাম, কলা গাছ দিয়ে ভেলা বানাতাম। মাঝে মাঝে যখন আমাকে জোঁকে ধরতো তখন চিৎকার করে সব একাকার করে ফেলতাম। রাজু দৌড়ে এসে হাতে একগাদা থুথু হাতে মেখে টেনে জোঁক ছাড়িয়ে দিতো। আমাকে অভয় দিত তুই ভয় পাবি না আমি তর পাশে আছি।
স্কুল না থাকলে দুপুরে বাসা থেকে বের হতে পারতাম না। দুপুরে ঘুমিয়ে বিকেল বেলা খেলার সুযোগ হত। রাজু মাঝে মাঝে এসে জানালা দিয়ে উকি দিয়ে বলতো মারুফ চল বাইরে যেয়ে খেলি। রুম থেকে বের হতে পারতাম না বলে তখন মনটাই খারাপ হয়ে যেত। গ্রীষ্মের একদিন রাজু জানালার পাশে থেকে আমাকে বললো বন্ধু চল হাওড়ে যাই। ওর মা ওকে পাঠিয়েছিলেন একটা লোকের সাথে দেখা করতে। আমি বললাম তুই মাঠে যেয়ে দাড়া আমি আসছি। একটু সুযোগ পেয়ে ঘরের পেছন দড়জা দিয়ে বের হয়ে এক দৌড়ে চলে এলাম মাঠে। তারপর হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি হাওরের পথে সাথে চলছে ওর পাকনামো কথাবার্তা।রাস্তায় তেমন মানুষজন নাই। মাথার উপরে রোঁদ ছিল অনেক, তাই একটা গাছের ছায়ায় যেয়ে বসলাম আমরা। ছায়ায় বসে বসে গল্প করছি আমরা।
রাসেলঃ এই মারুফ, তর লোম উঠছে?
আমিঃ না। তর উঠছে?
রাজুঃ হুম। তবে কেমন জানি চুলকায় মাঝে মাঝে।
আমিঃ হাহা! আমাকে দেখাবি?
রাজুঃ না এটা আমার বউ এর জন্য।
আমিঃ ওকে দেখাতে হবে না।
রাজুঃ আর শুন তুই কখনও মাল ফেলবি না।
আমিঃ কেন? মাল ফেললে কি হয়?
রাজুঃ তুই যখন বিয়ে করবি তখন এটা কাজে লাগবে। বউ-এর সাথে *দাচুদি করলে তর বাচ্চা হবে।
তাই তুই যদি এটা নষ্ট করিস তাহলে তর আর বিয়ে হবে না।
আমিঃ ও আচ্ছা নষ্ট করবো না। আচ্ছা বল লোম কই উঠবে? লিঙ্গের আগায়?
রাজুঃ হুম সব জায়গায় উঠবে। তর বুকেও লুম উঠবে।
আমিঃ বন্ধু তর লোম গুলা একটু দেখানা কিরকম, বলেই আমি একটু ফোর্স করার চেষ্টা করলাম।
রাজু অবশেষে আমাকে দেখালো ওর লিঙ্গের ঠিক উপরে কালো ঘন লোমগুলা। ভারি চঞ্চল হলেও ওর ও লজ্জা শরম আছে। প্যান্ট পুরোটা খুলে নাই। খালি লোমগুলাই দেখিয়েছে। হাহাহা!
আরেকদিন রাজুকে জিজ্ঞাস করলাম আচ্ছা ছেলেদের অণ্ডকোষটা কি কাজে লাগে? ও বললো, ওটা হচ্ছে ছেলেদের জীবন। এখানে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস থাকে তাই এটাতে আঘাত পেলে ছেলেরা অনেক কষ্ট পায়। ওর কথাগুলা খুব মনযোগ দিয়ে শুনতাম। সেক্স নিয়ে আমার যত জিজ্ঞাসা ছিল তার একটাই উত্তর ছিলো রাজু। আর ওর উত্তরগুলোও ছিল অনেক ফানি যা ভদ্র সমাজে উচ্চারন করার মত। এভাবেই দেখতে দেখতে রাজুর সাথে কেটে গেছে আমার গ্রামের জীবন। ক্লাস এইটে উঠার পর আমরা গ্রাম ছেড়ে মফস্বলে চলে আসলাম। আমাদের বাসার আশেপাশে রাজুর মত আড্ডা দেওয়ার জন্য কেউ ছিল না। স্কুল শেষে চলে যেতাম প্রাইভেট টিউটরের কাছে। সন্ধ্যায় বাসায় এসে পড়ার টেবিলে। রাজুও বিভিন্ন কাজে অনেক অনেক ব্যাস্ত হয়ে গেছে।
পরিবারের বড় ছেলে ছিলো ও। তাই পরিবারের হাল ধরার জন্য ও নেমে পরলো কাজে। একটু বড় হওয়ার পর ও আমাদের মফস্বলে চলে আসে। একটা গ্যারেজে কাজ পায়। আমি তখন কলেজে পড়ছি। মাঝে মাঝে ওকে দেখতে যেতাম। ওর গ্যারেজে চা নাস্তা করতাম। রাজু আগের চেয়ে দেখতে অনেক খারাপ হয়ে গেছে। কিন্তু বাল্যকালের প্রথম প্রেম সেটা এত সহজে তো আর ভুলা যায়না। বাসায় যোগাযোগ করার জন্য বাবা আমাকে একটা নোকিয়া মোবাইল সেট কিনে দেন। দোকান থেকে মেমোরি-কার্ডে পর্ন কিনে এনে লুকিয়ে রাখতাম। যেই বন্ধু আমাকে ছোট বেলায় অনেক কিছু শিখিয়েছিলো তাকে আমি এগুলার প্রাক্টিক্যাল দেখালাম। ওর ওস্তাদ অন্যকোথাও গেলে গ্যারেজে বসে বসে আমরা পর্ন দেখতাম আর হাসতাম। রাজুকে সবসময় বলতাম আমাদের বাসায় এসে কয়েকদিন থাক। কিন্তু ও আসতো না। একদিন জোর করে বাসায় নিয়ে আসলাম। বললাম আজকে আমাদের বাসায় থাকবি। খাওয়া দাওয়া শেষে রাতে গল্প করতে করতে ও ঘুমিয়ে পড়লো। সারাদিন অনেক পরিশ্রম করেছে তাই হয়তো অনেক ক্লান্ত ছিলো। আমি ভয়ে আর ওকে ডিস্টার্ব করলাম না। একদম সকালে উঠেই চলে যাবে সে। বললাম নাস্তা করে যা, না ওর সময় নাই নাস্তা করার গ্যারেজে যেতে হবে কাজ করতে হবে। এটাই ছিলো রাজুর আমাদের বাসায় শেষ আসা। তারপর থেকে আর তেমন দেখা হত না। ও চলে গেছিলো আরেকটা শহরে আর আমিও পড়ালেখা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গেলাম। তার কয়েকমাস পর আমার এইচ.এস.সি রেজাল্ট দেওয়ার পর আমি চলে যাই সিলেটে। সেখানে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। মাঝে মাঝে বাড়িতে আসলে গ্রামের বাড়ী যেতাম। কিন্তু রাজুর পরিবার সেই গ্রাম থেকে অন্য আরেকটা গ্রামে চলে গেছে। আর রাজুও বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করেছে। ওর বাড়িতে গেলে ওর দেখা পাওয়া যেত না। ওর মোবাইল না থাকায় তেমন যোগাযোগও আর হয়না। ছেলেটার কথা মনে হলে এখনও মনটা খারাপ হয়ে যায়। ও হয়তো বুঝতে পারতো না একটা ছেলেও একটা ছেলেকে ভালবাসতে পারে। কতদিন ওর মাথায় হাত দিয়ে ওর অগোছালো চুলগুলা পরিপাটি করে দিয়েছি। কতদিন ওর সাথে একসাথে বসে খেয়েছি। বিভিন্ন উৎসবে একসাথে আড্ডা দিয়েছি। কিন্তু একদিনও বলতে পারিনি রাজু তোকে অনেক ভালবাসি।