
লেখকঃ জনি ড্যানিয়েল
১.
বৃষ্টির রাত,
চারদিকে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি ঝরছে।
ঘুমিয়ে আছে পুরো এলাকাবাসী। টিনের চালে বৃষ্টি পড়ে এক মাদকতার সুর সৃষ্টি করছে।
শো শো হাওয়ায় বৃষ্টির ছাট এসে নাকে মুখে লাগছে করিম মোল্লার।
টিনশেড একটি সাইট পাকা ঘরের দাওয়ায় রকিং চেয়ারে বসে আছেন তিনি।
মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।
জানালার ফাক গলিয়ে একবার তাকালেন বিছানার দিকে।
জুবথুব হয়ে শুয়ে আছে মমতা।
বিদ্যুৎ চমকানোর সামান্য আলোয় বার বার একটুর জন্য আলোকিত হচ্ছে মমতার মুখশ্রী।
এক মায়াময় অবয়ব,
গিয়ে দাড়ালেন স্ত্রীর কাছে, ইশ এই স্ত্রীকে পাবার জন্যই কত কী করতে হয়েছে।
ভাবতে চাইলেননা, মমতার দেহের উষ্ণ ছোয়া পেতে চাইছে করিম মোল্লার দেহ।
বিছানায় গিয়ে আস্তে করে বৌকে জড়িয়ে ধরল করিম।
আড়মোড়া ভেংগে জেগে উঠল মমতা।
করিম মোল্লার এই ছোয়া তার বড্ড পরিচিত।
তারপরও জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো করিমের দিকে মমতা।
করিম মিয়া মমতার দৃষ্টি দেখে কিছুটা লজ্জা পেলো।
উঠে গিয়ে আবার বসলো রকিং চেয়ারটায়।
তার কীসের এতো লজ্জা মমতার প্রতি বোঝতে পারলেননা।
এতটুকুও সাহস নেই,
মমতার চোখের দিকে তাকানোর।
চোখে চোখে চাইলেই যেন, ধরা পড়া ভাব কাজ করে করিমের মধ্যে।
আবার বিদ্যুৎ চমকালো,
টিনের ঢেউ থেকে প্রবাহিত বৃষ্টির পানির সরু ধারাটা মাটিতে পতিত
কিছুটা গর্তের সৃষ্টি করেছে।
ফলে, গর্ত থেকে সৃষ্টি বুদ বুদ পানির ওপর ভেসে ওঠে।
কিছু ফোটে যাচ্ছে, আবার নতুন বুদ বুদ সৃষ্টি হচ্ছে।
বিদ্যুৎ চমকানোর আলোয়, সেটার উপর আলোর প্রতিফলিন হচ্ছে সামান্য।
দৃষ্টি পড়লো বুদ বুদের ওপর করিমের।
একমনে চেয়ে স্মিত একটা হাসি ফুটে ওঠলো করিম মোল্লার ঠোটের কোণে।
সেদিন এমনি বৃষ্টিরাত ছিলো।
গাছের পাতা চুইয়ে রক্তে ভেজা মাটির উপর পতিত পানি এমনি বুদবুদের সৃষ্টি করেছিলো।
বুদবুদের দিকে এতোই আনমনা হয়ে ছিলো যে, মমতা কখন যে পাশে দাড়ালো খেয়ালই করলোনা।
পাশে রাখা মোড়া টা টেনে করিম মোল্লার পাশে বসলো মমতা।
খেয়াল হলো করিমের।
তাকালেন স্ত্রীর দিকে।
চোখে কেমন যেন ধরা পড়া ভাব।
অন্য দিকে চোখ ফিরিয়ে নিলেন।
মমতা কিছুটা আচ করতে পারলো।
অনেকটা রসিয়ে জিজ্ঞাস করলো স্বামীকে,
কী গো, ফোটনা (বুদবুদ) দেইখা এমন ভাবে হাসলা কেন?
আমারে একটু কইবা?
করিম কিছুটা ভ্যাবচাকা খেয়ে গেলো।
মমতার থেকে এমন প্রশ্ন আশা করেনি সে।
সে কী বলবে, এই ফোতনা রহস্য।
শুধু মাত্র সে ছাড়া আর তো কেও জানেনা।
না, কিছুইতেই বলবেনা সে।
সে চায়না তার অপরাধ কেও জানুক।
হাসিমুখে তাকাল মমতার দিকে,
না গো বউ, এমন কিছুনা।
নিজের চোরা ভাব টা চোখ থেকে লুকাতে পারলোনা।
মমতা ধরে ফেললো,
বিশ্বাস করতে চাইলো না।
বার বার অনুনয় করতে লাগল করিম কে.
কিন্ত করিম বলতে অপরাগ।
এদিকে মমতাও নাছোড়বান্দা।
মজা করে জানতে চেয়ে করিম মোল্লার মনের অবস্তার পরিবর্তন দেখে সিরিয়াসলি নিয়ে নিছে।
সে গো ধরে বসে আছে, কি রহস্য আছে এই বুদবুদে তাকে জানতেই হবে।
একদিন পার হয়ে গেলো, মমতা কিছুই খাচ্ছেনা,
করিম মোল্লা বোঝে উঠলোনা, সামান্য একটা হাসির কারণ জানতে মমতা এতো জেদ ধরবে।
বউকে পাবার জন্যইতো এসব করছিলো সে।
তার বউ কী থাকে নির্দোষ মনে করবে?
সে কি তার পক্ষ নিবে?
যাই হোক করিম তার স্বামি।
স্বামীকে নিশ্চয় মমতা বিপদে ফেলবেনা?
সেই অাশায় করিম বলে দিলো তার অতীত।
সেই বৃষ্টি রাতের কাহিনী।
২.
মিয়ারচর গ্রামের পাশেই বয়ে চলেছে পনাতীর্থ নদী।
সেই নদীর পাশেই মিয়ারচর গ্রাম।
সেই গ্রামের জমিদার বংশের পোলা কাশেম মোল্লা।
জমিদারী তখনো ছিলোনা,
তারপরও জশ খ্যাতি রয়ে গিয়েছিলো করিমের বাপের।
তাই বেশ দাপট দেখিয়ে গ্রামে বসবাস করছে।
তারই ছেলে করিম মোল্লা,
যুবা বয়সের সেই রক্তে টগবগ করা যুবক ছিলো করিম।
সেও জমিদার বংশের পোলা হিসেবে বাবার পাশাপাশি তারও দাপট রয়েছে গ্রামে।
কিন্ত দাপট শুধু মুখে আর কাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলোনা,
সেটা যৌনতাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। যৌবনপ্রাপ্ত করিম তার যৌন উন্মাদনা সহ্য করতে না পেরে রাতের আধারে কিশোরী মেয়েদের উপর চড়াও হত।
বিনিময়ে তাদের টাকা দিয়ে হাত ভরিয়ে দিত।
মেয়েদের সাথে নিয়ে এতোই বিছানায় গিয়েছিলো যে করিম মোল্লার বিছানায় মেয়েদের নিয়ে যৌন স্বাদ পেতেননা আগের মতো।
মেয়েদের সাথে করতে অরুচি বাধতো।
যৌনাতায় তিনি যেন আলাদা কিছু অনুভূতি খোজেন।
খুজে পাননি সেই অনুভূতি।
* * *
করিম যেদিন সেই অনুভূতি খোজে পান সেদিন পানতীর্থের তীরে এক বড় যাত্রা পালা আসে।
সেই বিখ্যাত যাত্রাপালার “রূপবান”।
রাতে যাত্রা অনুষ্ঠান শুরু হয়,
“রূপবান”
করিম মোল্লাও সেই রাতে যাত্রাপালায় ছিলেন।
সেখানেই দেখা হয় ছেলেটির সাথে।
রূপবান চরিত্রে সে অভিনয় করছিলো।
নকল স্তন, মেকাপ আর পোশাক ডিজাইনে মনে হয়েছিলো এক রূপসী নারি কোমড় দুলিয়ে দুলিয়ে নৃত্য করছিলো।
সেই ছেলের সুডৌল নিতম্বের দুলখাওয়ার দৃশ্য দেখে নিজেকে আর কন্ট্রোল রাখতে পারেনি করিম।
তার মন বলছিলো এই সেই জিনিস।
যেখানে তিনি খুজে পাবেন যৌনতার পরম সুখ।
তিনি কাটাতে চান তার সাথে এক মুহুর্ত।
ছেলে জানার পরও বিছানায় যাওয়ার প্রস্তাব দেয় যাত্রাপালার ম্যানেজারকে।
গ্রামের প্রতাপশালী বলে,
বেশ ঝামেলাহীন ভাবেই সেই খাহেশ পুরণ করে করিম।
ছেলেটাকে নিয়ে গিয়েছিলো তার কাচারি ঘরে।
সেই রাত্রে ছেলের সাথে সময় কাটিয়ে পেয়েছিলো সেই যৌনতার স্বাদ।
যা তিনি মেয়েদের মাঝে খোজে বেড়াতেন।
সেদিন কাচারী ঘর থেকে শোনা গিয়েছিলো রূপবানের আর্তচিৎকার।
সেই থেকে ছেলেদের সাথে বিছানায় যাওয়া তার শুরু।
ধীরে ধীরে করিমের ভিতরে জন্ম হয়েছিলো উভকামী স্বত্তার।
যাত্রাপালা চলে গিয়েছিলো,
কিন্ত সেই সুখের আমেজ রয়ে গিয়েছিলো করিমের মধ্যে।
ছেলেদের সাথে যৌনসংগম করে এতোই তৃপ্তি পেয়েছিলেন, যে গ্রামের অল্প বয়সী ছেলেরা শিকার হতে থাকে তার এই বিকৃতমনা যৌনলালসার।
তার এই ইচ্ছা মেটাতে মিয়ারচরের বিভিন্ন বয়সী ছেলেপেলেদের টার্গেট করে সে।
একে একে লালসার শিকার হতে থাকে মিয়ারচরের প্রত্যেকটা ছেলে।
এমনিভাবে চলতে থাকে করিমের জীবন।
বিকৃত লালসা সাথে নিয়ে একের পর এক ছেলেপেলেদের সাথে তার এই অপরাধের কাজ করেই চলেছিলেন।
সেদিন, করিম বাদাঘাটের গঞ্জে গেছিলো।
করিমের বিয়ে ঠিক হয়েছে।
নদীর ওপারের গ্রামের বনেদী বংশের মেয়ে মমতার সাথে।
বিয়ের হাটবাজার করতে করিম নিজেই গিয়েছিলো।
আসা যাওয়ায় দুই দিন লেগে যেতো।
করিমদের নৌকার মাঝিদের মধ্যে বয়ঃপ্রাপ্ত সদ্য যুবক মনা মাঝিকে নৌকায় করে নিয়ে যায় গঞ্জে।
সেদিন প্রচন্ড যৌনতৃষ্ণা পেয়েছিলো করিমের।
তার মন টা কামনায় ভরে গিয়েছিলো
হাতগুলো নিশপিশ করছিলো কচি স্তন কচলানোর জন্য।
দাতগুলা কিড়মিড় করছিলো একটা নরম দেহ কামড়ানোর জন্য।
নিজেকে আর কন্ট্রোল রাখতে পারেনি।
গিয়ে জাপটে ধরেছিলো মনাকে।
নৌকা তখন মাঝ নদীতে গিয়ে পড়ছিলো।
চারিদিকে বিভিন্ন ইঞ্জিনচালিত নৌকা, লঞ্চের আনাগোনা।
মাঝনদীতে সেদিন কেও শুনেনি মনার চিৎকার।
তার চিৎকার চাপা পড়ে গিয়েছিলো ইঞ্জিনের শব্দে।
সেদিন অনেক কেদেছিলো মনা।
পায়ে লুটিয়ে পড়েছিলো
করিমের।
বিকৃত মস্তিষ্কধারী করিমের মন তখন যৌন তৃষ্ণা মেটাতে কঠিন হয়েছিলো পাথরের মত।
কামড়ে খেয়েছিলো মনার শরীর।
চুষে চুষে লাল করে দিয়েছিলো দুটি ঠোট।
কচলে দিয়েছিলো মনার দুটি স্তন।
সারা শরীরে ছিলো কামড়ের দাগ।
কিন্ত নিস্তার পায়নি করিমের হাত থেকে।
করিমের আঘাতে রক্তাক্ত হয় মনার দেহ।
সেই রক্ত পতিত হয়ে কাঠের পাটাতন ভিজে গিয়েছিলো।
অবশেষে আশা ছেড়ে দিয়ে মনা মেনে নিয়েছিলো তার নিষ্ঠুর পরিণতি ।
বাড়ি এসে কাওকে কিছু বলতে পারেনি সে।
প্রতাপশালী এই করিমের সাথে কিছুতেই পেরে উঠবেনা সে একা।
উলটো ঘরছাড়া হয়ে পথে যেতে হবে তাকে।
প্রতিশোধে মন বিষিয়ে উঠছিলো মনার।
বিয়ের আগের রাত্রে করিম কে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলো নদীর পাড়ে।
ঝিরঝির বৃষ্টির সেই বজ্রপাতের রাতে করিম ও গিয়েছিলো যৌনতার সুখ পাওয়ার লোভে সেই নদীর পাড়ে।
নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলো সেদিন করিমের কাছে।
নিয়ে গিয়েছিলো পরিকল্পনা মাফিক স্থান ধানক্ষেতের আড়ালে।
মনে ছিলো কঠোর প্রতিহিংসা।
সব কিছুর প্রস্তুতি শেষে করিম যখন উত্তেজনায় জাপটে ধরেছিলো মনার শরীর।
ঠিক তখনি
ধানক্ষতের আইলের ওপাশে লুকিয়ে রাখা কাস্তেটা বের করলো।
বসিয়ে দিলো করিমের পিঠে।
কিন্ত মনার স্বল্পবুদ্ধির সেই খুনের পরিকল্পনার উপকরণ টা ছিলো অত্যন্ত ভূল।
সে ভাবতে পারেনি, কাস্তে দিয়ে শুধু ধান ই কাটা যায়।
কোন মানুষকে খুন করার জন্য উপযুক্ত নয়, বড়জোর কয়েকটা ক্ষত সৃষ্টি করতে পারবে।
কাস্তের আঘাত পেয়ে প্রথমে চমকে উঠেছিলো করিম।
কিন্ত ঘটনা বুঝতে দেরী হয়না করিমের।
তাড়তাড়ি বগলদাবা করে নেয় মনার হাত।
কাস্তেটা পড়ে যায় মাটিতে।
কাস্তের আঘাতে আক্রান্ত জায়গার জ্বালানো হিংস্র করে দিলো করিমকে।
একের পর এক আঘাত করতে করতে জর্জরিত করে মনাকে।
দ্বিতীয়বারের মত মনার নিতম্বে দেখা যায় রক্তের ধারা বৃষ্টির পানিতে মিশে মাটিতে পতিত হচ্ছে।
সেই পানিতে বৃষ্টির ফোটা পড়ে সৃষ্টি হচ্ছে লাল বুদবুদ।
বজ্রের আলোয় সেই রক্তের বুদবুদ সামান্য কালচে দেখাচ্ছিল।
পুরোটাই বৃষ্টির পানির সাথে মিশে একাকার হয়েছিলো।
তারপর করিম হাতে নেয় কাস্তে টা।
এই জঞ্জাল সে বাচিয়ে রাখতে চায়না।
আগামীকাল থেকে শুরু হবে তার নতুন জীবন।
নিস্তেজ শরীরের মনাকে নিজের পরনের লুংগিটা দিয়ে হাত পা বাধে সে।
কাস্তেটা
বসিয়ে দেয় মনার গলায়।
ভোতা কাস্তে এক বিশ্রি শব্দ করে কেটে দিচ্ছে মনার ভোকাল কর্ড।
গরগর শব্দ বের হচ্ছে মনার গলা দিয়ে।
নিস্তেজ শরীরের মনা হাত পা নাড়িয়ে চিৎকার করতে পারেনা।
সে শুধু আস্তে করে বলেছিলো,
তোর বিচার হবে।
তোর বিচার হবে।
মনার কথা শুনে সেদিন ভীষন হাসি পেয়েছিলো করিমের।
করিম উপহাস করে বলেছিলো,
এই নির্জন বৃষ্টির রাতে তোকে খুন করার সাক্ষী এখানে কেও নেই।
মনা বলেছিলো ,
এই যে দেখছিস বুদবুদ।
আমার শরীরের রক্তে তৈরী বুদবুদ সাক্ষী।
সে তোর সত্য সবার সামনে প্রকাশ করবেই।
তারপর মনার শরীরটা নিস্তেজ হয়ে যায় চিরদিনের মতো।
নাসিকা দিয়ে কোন বাতাস বের হয়না।
করিম সেইরাতে মনাকে মেরে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিলো বুদবুদের দিকে।
মনে একটা কাপন ধরিয়ে দিচ্ছিলো আবার হাসিও পাচ্ছিলো।
তারপর মনার লাশটা সেখান থেকে তুলে ফেলে দিলো খরস্রোতা পনাতীর্থের পানিতে।
সেদিন এর কথা কেও জানেনি।
পরের দিন থেকে মনা নিখোজ।
কেও বুঝতেই পারেনি।
সবাই করিমের বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত ছিলো।
কেও খোজ করেনি মনার।
৩.
সকাল সকাল জমিদার বাড়িতে পুলিশ আসাতে বেশ অবাক হলো মিয়ারচর গ্রামবাসী।
কেও ভেবে পেলোনা,
গ্রামে এমন কী হয়েছে এক রাতে যে পুলিশ আসতে হবে।
লোকজন আরো অবাক হয়েছিলো,
যখন করিমকে কোমড়ে দড়ি বেধে গ্রামের রাস্তা দিয়ে নিয়ে নৌকায় তুলছিলো করিমকে।
সারা গ্রামে গুজব রটে গেলো।
দরজার একটা পাল্লা ধরে দাঁড়িয়ে অঝোর ধারায় পানি ঝরছে মমতার।
সেটা নিজের স্বামীকে পুলিশের হাতে তোলে দেওয়ার জন্য নয়।
গত দশবছর ধরে যার সাথে সে সংসার করছে, সেই করিম এতোবড় নরপিশাচ আর হিংস্র।
এত বড় এক জানোয়ার, পশুত্ব মনের মানুষ্কে নিয়ে সে কীভাবে সংসার করছে।
যার মন এতো কুরুচিপূর্ণ মনা।
বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ।
না জানি কত শত ছেলেদের সাথে এইসব জঘন্য কাজ করেছিলো।
এইজন্যই ওপরওয়ালা তার কোলে একটা সন্তানও দেননি।
দশটা বছর হয়ে গেলো।
কিন্ত তার খোলে একটা সন্তানও এলোনা।
সবই হয়তো এই করিমের পাপের কারণে।
ভেবে ভেবে একসময় আর কাদতে পারেনা মমতা।
একটা নরপশুর জন্য তার এভাবে কাঁদতে নেই।
* * *
একসপ্তাহ হয়ে গেলো।
আজ কোর্টে করিমের মামলার রায় জানাবে।
বাদী হিসেবে নিজের স্ত্রী মামলা করায় বেশ পাকাপোক্ত হয়ে ওঠেছে কেস।
সাক্ষী হিসেবে পিঠে মনার আঘাত করা কাস্তের দাগটা কালো হয়ে আছে করিমের পিঠে।
আর কী চাই
….
মামলার রায় করিমের বিপক্ষে গেলো।
তখন করিমও স্বীকার করে নিয়েছিলো তার অপরাধ।
যাকে সে এতোদিন বিশ্বাস করেছিলো।
নিজের সংগীনি কে বিশ্বাস করে বলেছিলো অপরাধের কথা।
ভেবেছিলো মমতার কাছে মাফ চেয়ে নিবে জীবনের জন্য।
কিন্ত সেই সুযোগ দিলোনা মমতা।
পুলিশে জানিয়ে সারা গ্রাম জানিয়ে দিলো অপরাধের কথা।
এখন সে কীভাবে মুখ দেখাবে সে গ্রামে।
এখম তার মৃত্যু ছাড়া আর কোন শাস্তি নেই।
সে মাথা পেতে নিলো রায়।
*
ফাসির দিন করিমকে যখন মঞ্চে নেয়া হলো তখন করিমের চোখের সামনে মনাকে হত্যার দৃশ্যটা ভেসে ওঠছে।
কানে ভেসে আসছে..
মনার সেই ম্লান কথাগুলো…
“
এই যে দেখছিস বুদবুদ।
আমার শরীরের রক্তে তৈরী বুদবুদ সাক্ষী।”
বুদবুদ……
“সমপ্রেমের গল্প” ফেসবুক পেইজ হতে সংগৃহীত- ২০১৬