
কবিঃ-জনি ড্যানিয়েল
দেখা হলো বছর কয়েক পর,
তুই এখন হয়েছিস আমার থেকে পর।
এখন অনেক হালকা চাপদাড়ি,
লম্বা চুলগুলোও আর নেই।
শতলোকের ভীড়ে তোকে দেখতেই দাঁড়িয়ে গেলাম।
জানিস,
দেখতে এখন অনেক সুবোধ ছেলে হয়েছিস।
রক্ত রাঙা লাল চোখ দুটো আর নেই…
যেটা দিয়ে আমায় শাসন করতিস।
বছর কয়েক পরে আবার দেখা,
শরীরে সেই ঢিলেঢালা জামাটা আর নেই।
এখন অনেক সুদর্শন হতে শিখেছিস বুঝি?
আমার প্রিয় রঙটা তুই পছন্দ করিস?
সঙ্গীকে আদর করার পর,
তোর লোমশ বুকে তাকে জড়িয়ে রাখিস?
আমার মতন সেও কি অভিমানী?
তোর দাড়ির খোঁচা না পেলে ছটফট করে,
আদর না পেলে,
তোর বুকে কিল ঘুষি দেয়?
আচ্ছা, তোর আদর সে সইতে পারে?
সে কি তোর আদর না পাওয়ার মিথ্যে নালিশ করে?
বুকের বোতামটাওতো এখন লাগিয়ে রাখিস,
আমার বেলায় রাজিই হতিস না যে?
আচ্ছা এখনো দুজনে মিলে সিডি প্লেয়ার দেখিস?
পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে তাকে উষ্ণতা দিস?
নাকি আমায় মনে করে তাকে আলাদা করে রাখিস?
এখনও কি তোর ঠান্ডা লাগে?
স্নানের পর তোর মাথা মুছিয়ে দেয় সে?
রান্না করার ছুঁতোয় হাতের বুড়ো আঙুল কাটিস ছুরিতে?
ভাল্লাগে তোর এমন গোছানো ছেলে?
আগের মতই দেরী করে জাগায় তোকে?
নাকি ‘নতুন’ আগেই জাগায় তোকে?
জাগানোর বাহানায় সে কি তোর গলায় চুমু খায়?
তুই কী এখনো তার হাত টেনে ধরে জড়িয়ে রাখিস তোর উদোম বুকে?
নতুন মানুষ জ্যোৎস্না ভালবাসে?
আমার মতন তোকে ছাদে নিয়ে যায় চাঁদ দেখার জন্য?
নাকি এখন তোর বারণের জোরে,
মেঘে দিয়ে ঢেকে দেয় চাঁদ?
তোর কী সেই শরীরে মালিশ নেওয়ার অভ্যেসটা আছে?
সেও কি জানে শরীরে মালিশ করে দিতে?
মালিশের বাহানায় সে ও কি তোর পিটে চিমটি কেটে দেয়?
আচ্ছা তখন কী তুই জাপটে ধরিস তাকে?
তোর নীচে ফেলে আক্রমণ করিস তার শরীরের উপর?
এখন নিশ্চয় তোর আগের অসুখটা আর নেই,
নিশ্চয়ই নেই তোর মন খারাপের বিকেল।
আজকে তোকে কেমন শান্ত দেখায়,
হাতের ব্রেসলেটটাও পরিসনা।
অথচ আমার বেলায় গলায় লম্বা চেইন ঝুলিয়ে রাখতিস।
নতুন মানুষ ভালোবেসে পালটে দিয়েছেতো।
কক্ষণো তাকে রাগ করে বলিস? “মার খাবি”।
সিগারেট খেতে আজো ভালোবাসিস?
নেশাখোর নাম কী দিতাম আর সাধে।
আজকে দেখে ভিড়ের মাঝে তোকে,
ইচ্ছে হলো ছুঁয়ে দিই তোর নিকোটিন মেশানো ঠোটে।
আচ্ছা, তোর রাগটা কী এখনো আছে?
সামান্য কথায় খুব ঝাড়ি মারতিস।
নতুন মানুষ অভিমান করার আগেই,
বুকে জড়িয়ে আদর দিয়ে দিতিস।
আচ্ছা সেও কী তোর চুল টেনে ধরে,
জ্বালায় তোকে অহর্নিশ।
সেও কী তোর প্রেমে পাগল?
তোর আগাছোলা জীবনকে গুছিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় হাপিয়ে ওঠে?
সেও কী কষ্ট পেলে তোর বুকে মুখ গুঁজে কাঁদে?
সে বুঝি খুব শান্তশিষ্ট; আমার মত চঞ্চল নয়?
ঠিক যেমনটা চাইতিস তুই।
আজকে কেমন শান্ত দেখায় তোকে।
নতুন মানুষ; নতুন ভালোবাসায় পালটে দিয়েছে তোকে।
আচ্ছা, আমার মত সে ও কী অস্থির সময়ে তোকে কাছে চায়?
তোর গলার স্বরে তার সব অস্থিরতা কেটে যায়।
সে নিশ্চয় গল্পবাজ নয়?
রাত জেগে তোকে গল্প শুনানোর রাত গুলো আর নেই।
আজকাল আমায় দেখতে পেলে এড়িয়ে যাস তুই,
অথচ আমি লুকিয়ে দেখি তোকে।
তোকে দেখে অনেক সুখীই মনে হলো,
নতুন মানুষ হয়তো তোকে বাসে আমার চেয়ে অনেক ভালো।
দেখা হল বছর কয়েক পর।
অথচ আমি তোকে এখনো বানাইনি আমার পর।
(সৃজা ঘোষের কবিতার অনুকরণে রচিত)
সমপ্রেমের গল্প
February 14 2019