
কবিঃ শুভ্র
গাছ
তোমার কাছে অনেক এসেছি
বসেছি ছায়ায়, ছিড়েছি পাতা
কখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি
আছো কেমন?
মাথার উপর ছাতা মেলে
পাতা নেড়ে দিয়েছো বাতাস
হাওয়ার সুরে গুনগুনিয়ে শুনিয়েছো
বিরহী সুর আপনমনে।
গাছ
নাম কি তোমার?
তোমার কি কোন নাম আছে?
আছে কোন পরিচয়?
ফুলহীন, ফলহীন, চিরবন্ধ্যা
কি নামে চিনি তোমায়
সবাই বলে বড় গাছ!
গাছ
তোমার কোন সঙ্গী নেই কেন?
সঙ্গীহীন একেলা ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছো
বছরের পর বছর
কথাটি শোনার কেউ নেই।
গাছ
তুমি কি বৃহন্নলা
বেড়েছো বহু মাথায় শরীরে
একাকি নির্জনে আপন ভূবনে
মহাভারতের অভিশপ্ত অর্জুনের ন্যায়
একাকী অচ্ছুৎ মানুষের প্রায়।
গাছ
তোমার কি মন খারাপ
তোমার ছায়ায় বসে শরীর জুড়োয়
চুলোর জন্য নেয় শুকনো ডালপাতা
তবু তোমাকে আপন ভাবেনা
আম, জাম, পলাশ, বকুলের মত
খবর রাখেনা কারণ
তুমি বৃহন্নলা গাছ
তুমি ফুল ফল দিতে পারো না।
গাছ
তুমি কষ্ট নিয়ো না
এই মানব সমাজ এমনই
এরা যেমনি ভালোবাসতে জানে
তেমনি জানে অকারণে ঘৃণা করতে
বৃহন্নলা মাত্রই অচ্ছুৎ এই সমাজে
হোক সে মানুষ কি বৃক্ষ!
মাংস দেয় যে পশু
বৃহন্নলা হলে মানুষ কি তারে করে ঘৃণা?
আমাকে এই প্রশ্ন শুধিয়ো না গাছ
সব প্রশ্নের উত্তর হয় না!