বিদায় অর্ঘ্য

লেখকঃ অরিত্র হোসেন

(১)

-তুমি প্রস্তুত?

হুমায়ুন বিছানায় নড়েচড়ে বসে মুখ কুঁচকে পায়ের দিকে তাকাল। পাতায় ভীষণ চাপ পড়েছে। এখন প্রচণ্ড ব্যথা করছে। পায়ের পাতা উল্টিয়ে দেখার চেষ্টা করলেও সফল হল না। পা নাড়াচাড়া করার বলয় নেই। উপায় না পেয়ে পা সোজা মেলে দিয়ে ঘাড় কাত করে ডানদিকে তাকাল। অর্ঘ্য হুমায়ূনের পিঠে হালকা স্পর্শ করে বলল, উত্তর দিলে না যে!

-আমি জানি না।

-জানো না মানে?

-দেখো ওসব পুরনো কথা কেন বারবার টেনে নিয়ে আসো। তুমি আর বড় হলে না!

-তুমি দিন দিন আজব হয়ে যাচ্ছ!

-মোটেও না।

অর্ঘ্য হুংকার দিয়ে বলল, তুমি তোমার শার্টটাও এখন খুলতে চাও না।

হুমায়ূন পিছন ঘুরে অর্ঘ্যের দিকে তাকাল। মুখ শক্ত করে তাকিয়ে আছে। চোখের পাতা নড়ছে না। আজ কি সব হিসাবনিকাশ হবে? আজই কি সেই দিন? গত ৬ মাস ধরে হুমায়ূনের পরিবর্তিত আচরণ অর্ঘ্যকে বিরক্ত করে তুলেছে। হঠাৎ করেই বিরাট পরিবর্তন। ধর্মকর্মে যার মন একবারেই ছিল না সে নিয়মিত নামায পড়া শুরু করেছে। দাড়িও রাখছে। এ নিয়ে অর্ঘ্য তাকে কোন প্রশ্ন করেনি। প্রয়োজনবোধ করেনি। হুমায়ূনের তার নিজ ধর্ম পালন করার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে। সবচে বড় ব্যাপার হল হুমায়ূন কি করবে না করবে, সেটা তার নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপার। ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলাতে পছন্দ করে না অর্ঘ্য। জীবনসঙ্গী হলেও সম্পর্কে ফাঁকা জায়গা রাখতে হয়। নাহলে বাতাস যাবে কি করে? আর যদি বায়ু প্রবাহ ঠিকমতো না হয় তাহলে সম্পর্ক স্বাস্থ্যসম্মত হবে কি করে? অর্ঘ্য নিজেকে অধার্মিক হিসেবে দাবি করে। বানানো কেচ্ছা-কাহিনি বিশ্বাস করার মতো হাস্যকর বিষয় আর একটিও নেই। কিন্তু নিজের মত অন্যের উপর চাপাতে অসহ্য লাগে তার। হুমায়ুনের আচরণ দিন দিন অসহনীয় পর্যায়ে চলে গিয়েছে। সহবাস তো দূরের কথা ঠোঁটে চুমু খেতেও যেন একধরণের দ্বিধা, এক ধরণের অস্বস্থি কাজ করে হুমায়ূনের মধ্যে। অর্ঘ্যের ধৈর্য শক্তির নাশ ঘটেছে।

ঘরে মৃদু আলো। টেবিল ল্যাম্প জ্বলছে। আবছা-মৃদু আলোতে খুনসুটি করতে, প্রণয় করতে এক অন্যরকম অনুভূতি জাগ্রত হয় – কথাটা খোদ হুমায়ূন বলেছিল। আজ আলো জ্বলছে কিন্তু হুমায়ূনের মধ্যে অনুভূতি জাগ্রত হচ্ছে না। হয়তো হচ্ছে। হয়তো সে অনুভূতিকে ধামচাপা দেবার চেষ্টা করছে। প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে। কয়েক মিনিট পর পর আকাশ গর্জে উঠছে। বৃষ্টির পূর্বাভাস পেয়ে দেরি না করে হুমায়ূনকে প্রায় জোর করেই নিয়ে এসেছে সে। বৃষ্টির দিনে ভালোবাসার মানুষের সাথে না থেকে পারা যায় কি? অর্ঘ্যের মনে হচ্ছে আজ যেন বৃষ্টি তাদের মধ্যে দুঃখ নেমে নিয়ে এসেছে।

হুমায়ূন পরনের শার্টটা ঠিক করে বলল, আগের মতো সবকিছু নেই।

অর্ঘ্য হুমায়ূনের কথায় পাত্তা না দিয়ে বিছানা থেকে উঠে পড়লো। টেবিলে রাখা সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করলো। হুমায়ূন শান্ত গলায় বলল, আমি তোমাকে সিগারেট খেতে মানা করেছি।

অর্ঘ্য তোয়াক্কা না করে সিগারেট জ্বালিয়ে আয়েশ করে টান দিলো। হুমায়ূন তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তার দিকে তাকাল। হাতাকাটা একটা কালো গেঞ্জি পরে আছে অর্ঘ্য। পেশীবহুল হাত দুটো যেন দিন দিন আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। জিমে যাওয়ার পর থেকে হাতগুলোর পরিবর্তন লক্ষণীয়। বুকে একগাদা লোম গিজগিজ করতো। সেগুলো সে ছেঁটে ফেলেছে। গেঞ্জিটা ছিঁড়ে যাবে যেকোনো মুহূর্তে। অর্ঘ্যের কি অস্বস্থি লাগে না? আঁটসাঁট গেঞ্জি পরে থাকছে কি করে?

৪ বছর আগের অর্ঘ্য আর এখনকার অর্ঘ্য! বিরাট পার্থক্য! আকাশ-পাতাল পরিবর্তন! সদ্য মফস্বল থেকে আসা হাবাগোবা ছেলে ঢাকা শহরের কিছুই চিনে না। কিছুই জানে না। মেডিকেলে কোচিং করতে এসে কাঠখোট্টা শহরের জীবনে সঙ্গে তাল মিলাতে হিমশিম খাচ্ছিল। পান্থপথে চাচার বাসায় থেকে কোচিং করতো। পান্থপথ থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ছিল তার দৌড়। কোচিং এ কারোর সঙ্গে কথা তো বলতোই না, প্রশ্নও করলেও জবাব দিতে পারতো না। হা-করে দাড়িয়ে থাকতো। যেন বেমানান জায়গায় তাকে দাড় করে রাখা হয়েছে। অর্ঘ্যকে যখন হুমায়ূন প্রথম দেখেছিল তখনই আঁচ করে ফেলেছিল ছেলেটা ভিন্ন। প্রথমদিনে এক সাদা ধবধবে লম্বা সুন্দর ছেলের পাশে বসেছিল। আর হুমায়ূন ঠিক পিছনে। সারাটা ক্লাস সে ভালোভাবে লক্ষ্য করছিল অর্ঘ্যকে। হাতের সঙ্গে হাত লাগলেই চমকে উঠছিল সে। গালে খোঁচা-খোঁচা দাড়ি, চুলগুলো ঘাড় অবধি বড়, চিকনচাকন লম্বা ছেলেটা হুমায়ূনের মন জয় করতে পেরেছে খুব দ্রুত। হুমায়ূনের নিজ থেকে যেচে কথা বলার চেষ্টা বিফলে যায়নি। বন্ধুত্ব হতেও সময় লাগেনি। পরিশেষে প্রেম। যেন সিনেমার কল্পকাহিনী বাস্তবে রূপ নিয়েছে।

মেডিকেলে দু’জনের একজনও সুযোগ পায়নি। যেদিন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল দিলো সেদিন তারা দু’জন বেড়াতে গিয়েছিলো ঢাকা শহর থেকে একটু দূরে। জাতীয় উদ্যানে। আর সেখানেই প্রকাশিত হয় দু’জনের আসল পরিচয়। অর্ঘ্য প্রায় ভুল করে সুনসান জায়গায় হুমায়ূনের ঠোঁটে চুমু খেয়ে বসে। হুমায়ূনকে স্তম্ভিত অবস্থায় বেশ কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকতে দেখে অর্ঘ্য ছুটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সেদিন তো তাদের এক হওয়া নির্ধারিত ছিল!

চান্স না পেয়ে অর্ঘ্য বিবিএ তে ভর্তি হল আর ওদিকে হুমায়ূন ইঞ্জিনিয়ারিং এ। পরিবারের একমাত্র ছেলে অর্ঘ্যকে রাজশাহী থেকে ঢাকায় এসে  তেমন কোন ঝামেলা পোহাতে হয়নি। চাচার বাসা ছেড়ে মাঝারী সাইজের একটা ফ্ল্যাটে ভাড়া নিয়ে একাই বসবাস শুরু করে। আর তার সবকাজের সঙ্গী হুমায়ূন। শহুরে জীবন-নীতির হাতেখড়ি তার কাছ থেকেই পায়।

তারা দু’জন সমবয়সী হলেও অর্ঘ্য অল্পদিনেই বড়সড় হয়ে যায়। উচ্চতার সঙ্গে শরীরের গড়নে সামঞ্জস্যতা আসতে থাকে। মফস্বল থেকে এসে রাতারাতি পরিবর্তন। পোশাকআশাক থেকে শুরু করে কথাবার্তা সব দ্রুত রপ্ত করে ফেলে অর্ঘ্য । ওদিকে শহরের ছেলে হয়েও হুমায়ূন নিজেকে ট্রেন্ড বহির্ভূত হিসেবেই আখ্যায়িত করে। জামাকাপড়ে কোন চাকচিক্য নেই। সাদামাটা গোলগাল চেহারায় মোটা ফ্রেমের একটা চশমা, মাঝারী ওজন। অর্ঘ্য অনেক চেষ্টা করেও হুমায়ুনকে জিমে পাঠাতে পারেনি। পারেনি খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস পরিবর্তন করতে। হুমায়ূন দেখতে সাদামাটা হলেও বেশ শক্ত ব্যক্তিত্বের অধিকারী। একগুঁয়ে এবং মাঝেমধ্যে অতিরিক্ত ঠ্যাঁটা! দু’জনের স্বভাব বিপরীত। একজন ঠাণ্ডা আর একজন গরম। ঠাণ্ডা স্বভাবের হলেও অর্ঘ্য রাগলে তাড়াতাড়ি রাগ পড়ে যায়। তাদের পছন্দের ব্যাপক মিল পাওয়া যায়। দু’জন বই পড়তে ভালোবাসে। দু’জনে সাংঘাতিক সিনেমাপোকা। একটা সময় হুমায়ূনের নিজ বাসায় থাকতে ইচ্ছাই করতো না। একসাথে থাকতে থাকতে তাদের বন্ধন লোহার মতো শক্ত হয়ে গিয়েছিল। অবশ্য ৪ বছর পর সম্পর্কে বজ্রপাত পড়েছে। কার কতটুকু ক্ষতি হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখার উপর্যুক্ত সময় আজ।

অর্ঘ্য টেবিলের উপর বসে কর্কশ গলায় বলল, আমরা এ নিয়ে কতদিন ধরে আলোচনা করে আসছি?

হুমায়ূন শান্ত গলায় বলল, ৩ বছর।

-আর কবে আমরা বিয়েতে বসবো বলেছিলাম?

-এ মাসের ১১ তারিখ।

-আমরা ঠিক কতবছর বয়সে বিয়ে করবো বলেছিলাম?

হুমায়ূন ঠাণ্ডা গলায় বলল, ২৫।

অর্ঘ্য ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বলল, আমার বাসায় বিয়ের কথা চলছে।

হুমায়ূন কৌতূহলীকণ্ঠে বলল, রাজি হয়ে যাও।

অর্ঘ্য বিরক্ত হয়ে বলল, চল পালিয়ে যাই।

হুমায়ূন শক্তকণ্ঠে বলল, আমি যাবো না।

অর্ঘ্য সিগারেট শেষ করে অবশিষ্ট টুকরো নিচে ফেলিয়ে স্যান্ডেল দিয়ে নিভিয়ে দিলো। হুমায়ূন এ কান্ড দেখে অবাক হল না। অর্ঘ্য যখন রেগে যায় তখন অদ্ভুত সব কাজ করে। হুমায়ুনকে খ্যাপানোর জন্য। নতুন কিছু নয়।

অর্ঘ্য গেঞ্জিটা খুলে নিচে ছুড়ে ফেলল। হুমায়ূন আড়চোখে তার দিকে তাকাল। অল্প ঘেমে আছে অর্ঘ্যের শরীর। মৃদু আলোতে আকৃতি বোঝা যাচ্ছে। অস্পট অবয়ব । হুমায়ূন আয়োজন করে নিঃশ্বাস ফেলল। কাম উত্তেজনা বড়ই অদ্ভুত। অসময়ে ফাল দিয়ে উঠে। তার ইচ্ছে করছে অর্ঘ্যকে জড়িয়ে চুমু খেতে। কোমরে হাত রেখে তার শরীর টিপতে ইচ্ছে করছে। তার বুকে হাত বুলাতে ইচ্ছে করছে। হুমায়ূন আরেকবার সজোরে নিঃশ্বাস ফেলল। অর্ঘ্য ধীরে ধীরে কাছে আসতে শুরু করলো। হুমায়ূন মাথা নেড়ে বলল, না। যেখানে আছো সেখানেই থাকো অর্ঘ্য। সামনে আসবে না।

অর্ঘ্য পিছন দিকে পা বাড়িয়ে আবার টেবিলে বসে পড়লো। বুকের ঘাম হাত দিয়ে মুছে ট্রাউজারে ঘষাঘষি করতে লাগলো। হুমায়ূন ব্যাপারটা না দেখার ভান করে ঠাণ্ডা গলায় বলল, আমি মানসিক দ্বন্দ্বে ভুগছি।

অর্ঘ্য ডানদিকে মাথা কাত করে বলল, যেমন?

-আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবো না।

অর্ঘ্য রাগান্বিত স্বরে বলল, কেন?

আমতা আমতা করে হুমায়ূন বলল, এটা নীতিবিরোধী।

-হঠাৎ করে অনুধাবন করলে?

-নাহ। আমি বেশ কিছুদিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে ভেবে আসছিলাম। আমি অপেক্ষায় ছিলাম কবে তুমি প্রসঙ্গটা তুলবে।

-নীতিবিরোধী কোন আঙ্গিকে?

-আমি সেটা বলতে পারবো না।

অর্ঘ্য দরাজ গলায় বলল, জাস্ট বিকজ আমি হিন্দু?

হুমায়ূন মাথা নেড়ে বলল, হ্যাঁ।

অর্ঘ্য নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারলো না। তার হাত-পা কাঁপা শুরু করলো। হ্যাঁ বলার পর হুমায়ূনের হুঁশ আসলো। এতক্ষণ ঘোরের মধ্যে সে বেফাঁস কিছু কথা বলে ফেলেছে। বিছানা থেকে উঠে অর্ঘ্যের কাঁধে হাত রাখতে গেলে অর্ঘ্য ধাক্কা দিয়ে তাকে সরিয়ে দিলো। অর্ঘ্য জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে বলল, আজকে ধর্মের দোহাই দিয়ে তুমি আমাকে প্রত্যাখ্যান করছ?

হুমায়ূন তার কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। কিভাবে নোংরাভাবে হ্যাঁ বলতে পারলো! তার মন একবারও সতর্ক করলো না কেন? দেয়ালের দিকে শরীর ঠেকিয়ে মাথায় দু’হাত রেখে দিয়ে কাঁদো স্বরে বলল, অর্ঘ্য আসলে ব্যাপারটা ওরকম না…

অর্ঘ্য টেবিলে হাত দিয়ে আঘাত করে বলল, আমি কখনও তোমাকে বারণ করেছি ধর্ম পালন করতে? কখনও? তাহলে এখন কি যাইতাই বলছ? হ্যাঁ?

-আমি জানি না। আমার মন, আমার চারপাশ সবকিছুই চেঞ্জড।

-তাই বলে আমার প্রতি তোমার অনুভূতিও চেঞ্জ হয়ে যাবে?

-তুমি বোঝার চেষ্টা করো…

-৬ মাস ধরে তোমাকে আমি ভালোভাবেই লক্ষ্য করেছি। সেক্স তো দূরের কথা, তোমাকে ছুঁলেই তুমি আঁতকে উঠো।

-মনের দ্বন্দ্ব কাটিয়ে উঠতে পারছি না।

-রাখো তোমার দ্বন্দ্ব। যখন তখন তাবলীগে দৌড় দিচ্ছ। না জেনে শুনে অপরিচিত মানুষদের সাথে খাতির লাগাচ্ছ। কি হয়েছে তোমার? কেউ তোমাকে বশ করেছে? জ্বিনে ধরেছে?

হুমায়ূন ফিক করে হেসে বলল, তুমি যে না!

অর্ঘ্য চোখ বড় বড় করে হুমায়ূনের দিকে তাকাল। তার সারা শরীর ঘামে ভিজে গেছে। সে নিচ থেকে গেঞ্জি তুলে তা পরে নিলো। ঘরের সবকটা বাতি জ্বালিয়ে কড়াকন্ঠে বলল, চলে যাও।

হুমায়ূন ভুরূ কুঁচকে বলল, মানে?

-চলে যাও। আজকে মতো এখানেই কথা শেষ। বাসায় যাও।

হুমায়ূন অর্ঘ্যের দিকে শান্ত গলায় বলল, হুম এখানেই শেষ। এখানেই সব শেষ।

অর্ঘ্য অবাক হয়ে বলল, ওয়েট ওয়াট?

হুমায়ূন স্যান্ডেল পরতে পরতে বলল, তোমার সঙ্গে আমার থাকা হবে না অর্ঘ্য। বয়স বাড়ছে। কদিন পরে বিয়ে বসতে হবে। বাস্তবতা অনুযায়ী আমাদেরকে আলাদা হতে হবে।

অর্ঘ্য মূর্তির মতো কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে বলল, আর কিছু?

-আমার মধ্যে পাক-পবিত্রতা নিয়ে বিরাট দ্বন্দ্ব কাজ করছে। তুমি কি আমার জন্যে ধর্ম পরিবর্তন করতে পারবে?

অর্ঘ্য দরজা খুলে আঙ্গুল দিয়ে হুমায়ুনকে বের হয়ে যাওয়ার ইশারা করলো। হুমায়ূন কিছু বলতে গেলে অর্ঘ্য জোরপূর্বক তাকে ঘর বের করে দিয়ে ঠাস করে দরজা বন্ধ করে দিলো।

বৃষ্টি নেই। পিচধালা রাস্তা কমলা স্ট্রিট লাইটে ঝকঝক করছে। আকাশ গমগম করছে। কিছুক্ষণ পর আবার বৃষ্টি নামতে পারে। ৬তলা বাড়ির দিকে বিমর্ষ হয়ে তাকিয়ে আছে হুমায়ূন। বাড়িটা সদ্য রঙ করা হয়েছে। বিচ্ছিরী রঙ নিয়ে বাড়িটি কিভাবে দাড়িয়ে আছে? গেটের পাশে মাধুরিলতা গাছটা ঝাঁকড়া হয়েছে। অবশ্য পোকায় ভর্তি গাছটা এক প্রকার বিরক্তির কারণ হয়েও দাঁড়িয়েছে। তাতে কি! তার তো আর আসা হবে না! বুকে চাপা একটা কষ্ট টগবগ করছে। ফেটে বের হয়ে আসতেও পারছে না আবার ভিতরে থাকতেও পারছে না। কিন্তু তার বিশ্বাসকে সে প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না। ইহলোকে আর পাপ করবে না বলে সে কসম কেটেছে। কষ্টের পর সুখ আসে। আবার হয়তো সুখ আসবে। ধৈর্য ধরতে হবে। হুমায়ূন ফিসফিস গলায় বলল, বিদায় অর্ঘ্য। 

(২)

কুয়াশার পরিমাণ টগবগিয়ে বাড়ছে। জানালা-দরজা খোলা রাখা যাচ্ছে না। ঘরের গরম বের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কাজ করছে। ঝাঁকিয়ে শীত পড়েছে। অর্ঘ্য একটা পাতলা কালো চাদর পরে বারান্দায় দাড়িয়ে আছে। বারান্দার দরজা খোলা। কুয়াশায় আশেপাশের বাড়িগুলো চোখে ধরা পড়ছে না। সকাল ১১টা বাজে কিন্তু পরিষ্কার হওয়ার কোন নাম গন্ধ নেই। হাড় কাঁপানো শীতে পাতলা চাদর পরে ওম পাওয়া আশা করা শুধু বোকামি নয়, অবাস্তবও বটে। ঠাণ্ডার দিনে গোসল করতে ইচ্ছা করে না। দাঁড়ি কাটতেও নয়। সবকিছুতেই আলস্য কাজ করে। টবের গাছগুলোর মাটি ভেজা-ভেজা থাকলেও পাতা দেখে বুঝা যাচ্ছে অনেকদিন পানি পায় না। আজকাল গাছের পরিচর্যা করতে ইচ্ছা করে না। যে তার গাছের শখ তৈরি করেছিল সেই নেই! টেলিফোনের শব্দে অর্ঘ্যের চেতন ফিরল। ডাইনিং রুমে থাকা সাদা টেলিফোনটি কাছে ছুটে গেলো। রিসিভার কানে দিয়ে বলল, জী বলুন।

ওপাশ থেকে বাড়ির দারোয়ান বলল, হুমায়ূন নামে একজন এসেছেন। 

অর্ঘ্য অবাক-স্বরে বলল, আমি আসছি।

ফোনটা রেখে দরজার কাছে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেলো। দরজা পেরিয়ে সিঁড়ির কাছে যেয়ে থমকে দাঁড়ালো অর্ঘ্য। হঠাৎ খবর না দিয়ে হুমায়ূন হাজির হল কেন? অবশ্য দেখা করার ইচ্ছা মরে যাইনি। আজ দেড় বছর পর হুমায়ূন এসেছে ফিরে। তার বাড়িতে। ঘর থেকে বের করে দেওয়ার পর হুমায়ূন কোন প্রকার যোগাযোগ করেনি। উল্টো অর্ঘ্য হুমায়ূনের বাড়িতে গিয়ে অনেকবার তার খোঁজ করেছে। সে দেখা দেয়নি। হুমায়ূনের রাগ দিন যতই যায় শক্ত পরিপক্ব হয়।

সিঁড়ি দিয়ে নামতে উদ্যত হলে লিফটের দরজা খুলে একজন বের হয়ে এলো। পিছন ঘুরে অর্ঘ্য তাকিয়ে দেখল হুমায়ূন দাড়িয়ে আছে। আপাদমস্তক চোখ বুলিয়ে অবাক হল অর্ঘ্য। মুখে দাড়ি নেই। ওজন কমেছে। চোখের চশমা বদলে গেছে। চিকন ফ্রেমের একটা চশমা পড়েছে। গায়ে উজ্জ্বল সবুজ রঙের শার্ট। টাখনুর উপর প্যান্ট পরেছে। কিন্তু হাসিটা বদলায়নি। ঠোঁট টিপে হেসে হুমায়ূন বলল, সিঁড়ি দিয়ে নামছিলে কেন?

অর্ঘ্যের মুখ দিয়ে একটা শব্দও বের হল না। আজ দেড় বছর পর হুমায়ূনকে দেখছে। তেমন কোন পরিবর্তন আসেনি। মনে হচ্ছে সেই প্রথমদিকার হুমায়ূন ফিরে এসেছে। যে হুমায়ূনকে সে প্রাণভরে ভালোবেসেছিলো। চট করে অর্ঘ্যের মাথায় একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে লাগলো। সে কি এখনও তাকে ভালোবাসে? অর্ঘ্যের মুখমণ্ডলে একধরণের গাম্ভীর্যভাব চলে এলো।

অর্ঘ্যের শরীরের দিকে তাকিয়ে হুমায়ূন মুচকি হেসে দিলো। সে বলল, তোমার তো দেখি বড় একটা ভুঁড়ি হয়েছে।

-আম… আসলে জিম ছেড়ে দিয়েছি তো!

হুমায়ূন অর্ঘ্যের ফ্ল্যাটের দিকে পা বাড়াতে গেলে অর্ঘ্য হাত দিয়ে থামিয়ে দেয়। হুমায়ূন চোখ বড় বড় করে বলল, ভিতরে যেতে দিবে না?

অর্ঘ্য ম্লান গলায় বলল, তুমি আমার এসএমএস উত্তর দাওনি কেন?

-দিয়েছিলাম। আমি স্পষ্ট করেই বলেছিলাম তোমার সঙ্গে আমি আর সম্পর্ক রাখতে চাই না।

-তোমার বাসায় গিয়েছিলাম অনেকবার।

-বাসায় ছিলাম না।

-সেটা সত্যি নয়।

-হুম। ইচ্ছা করেই দেখা করিনি।

-তো এখন দেখা করবার খায়েশ হল কেন?

-তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছা করছিল।

অর্ঘ্য গম্ভীর গলায় বলল, তোমার ইচ্ছার দাম আছে। আমারটার নেই?

হুমায়ূন দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে গেলো ফ্ল্যাটের ভিতর। চারদিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো। কিছুই বদলায়নি। শুধু বদলেছে সময়। ডাইনিং পার করে অর্ঘ্যের ঘরে ঢুকতে হয়। তার সাহসে কুলাচ্ছে না। গত দেড় বছর আগের ঘটনা স্পষ্ট মনে পড়ে যাচ্ছে।

ঘরে ঢুকতেই বিশাল পরিবর্তন চোখে পড়লো। নতুন ডেক্সটপ কম্পিউটার, নতুন খাট, নতুন আলমারি। অপরিচিত কিছু জামাকাপড় চেয়ারে ঝুলে আছে। পূর্বদিকের দেয়াল জুড়ে তাদের দু’জনের অসংখ্য ছবি ছিল। ছোট-বড় সরকমের স্মৃতি সংরক্ষণ করা হতো দেয়ালে। আজ সেখানে মাত্র একটা ছবি আছে। তাও অর্ঘ্যের সিঙ্গেল ছবি।

হুমায়ূনের বুক ধক করে উঠলো।

অর্ঘ্য শান্ত গলায় বলল, কাপড়গুলো সরিয়ে চেয়ারটায় বসো।

হুমায়ূন কাপড়গুলো হালকা সরিয়ে চেয়ারে ধীরে বসল। চারদিকে নজর বুলাতে বুলাতে বলল, তোমার সঙ্গে কেউ থাকে?

-সেটা তোমার জানতে হবে?

কথার ধরণ বুঝে হুমায়ূন মাথা নাড়াতে লাগলো। সে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বলল, বিয়ে করছ কবে?

অর্ঘ্য অবাক স্বরে বলল, কে আমি?

হুমায়ূন মাথা নাড়িয়ে বলল, হ্যাঁ।

-জানি না কবে।

-চাকরী করছো নিশ্চয়!

-হ্যাঁ করছি। কম বেতনের একটা চাকরী। চলে যায়। তুমি কি করছ?

-বিয়েটা সেরে চাকরীতে ঢুকবো। তো বাসায় পাত্রী ঠিক করেছে?

অর্ঘ্য ভুরূ কুঁচকে হুমায়ূনের দিকে তাকাল। তার মুখমণ্ডল দেখে মনে হল সে জীবনেও এমন অদ্ভুত কথা শুনেনি আগে।

জেদি গলায় অর্ঘ্য বলল, তুমি হঠাৎ করে কিভাবে বদলে গেলে?

হুমায়ূন বলল, সরি?

-তুমি আমাদের অস্তিত্বকে কিভাবে অস্বীকার করো।

-দেখো এগুলো আমাদের বানানো রীতি। আল্লাহ্‌ তায়ালা যেভাবে আমাদেরকে থাকতে বলেছেন সেভাবেই আমাদের থাকতে হবে।

-ঠিক আছে তুমি থাকো। আমাকে টানছ কেন?

-না মানে…

-ভুলে যেও না এই ধর্মের দোহাই দিয়ে তুমি ৪বছরের সম্পর্ক নষ্ট করেছ।

হুমায়ূন গলা পরিষ্কার করে বলল, দেখো অর্ঘ্য। তোমার ধর্ম নিয়ে আমি চিন্তিত ছিলাম না। কিন্তু শেষ দিকে ব্যাপারটা আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। যদি একজন মুসলিম ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক হতো…

অর্ঘ্য রাগী গলায় বলল, তুমি মানুষ নয়। তুমি একটা নোংরা পতঙ্গ।

হুমায়ূন চোখমুখ শক্ত করে অর্ঘ্যের দিকে তাকাল। যেন এক্ষণই সে একটা খুন করতে পারবে। কোন দ্বিধা কাজ করবে না।

সে ভাঙ্গা গলায় বলল, সত্যি কথা। কিভাবে আমি ধর্মের দোহাই দিয়ে তোমাকে ছেড়ে দিলাম। আমি জানি না। আমার তখন অস্বস্থি লাগা শুরু করেছিল। তোমার সঙ্গে থাকলেই ধর্মের কথা বারবার মনে পড়ে যেতো। বারবার আমার মন বলতো, আমি পাপ করছি। প্রথমত একটা ছেলের সঙ্গে প্রেম করে। দ্বিতীয়ত এক হিন্দুর সঙ্গে সহবাস করে।

অর্ঘ্য বারান্দার দরজা বন্ধ করে পর্দাগুলো সরিয়ে দিলো। ঘরটা ফ্রিজের মতো ঠাণ্ডা হয়ে আছে। রুম হিটারটা চালু করে বিছানার এককোণে বসে মাথা নিচু করে অর্ঘ্য বলল, আমি বিশ্বাস করতে পারছি না তুমি এ কথাগুলো বলবে।

-আমি যখন আমার এক বন্ধুর সঙ্গে কথাগুলো শেয়ার করলাম তখন সে আমাকে অনেক বুঝিয়েছিল। পৃথিবীর সবকিছুই অর্থহীন, সময় থাকতে সঠিক পথে আসতে বলেছিল। আমি আমার ধর্মকে প্রত্যাখ্যান করতে পারিনি। তাই বাধ্য হয়ে তোমাকে প্রত্যাখ্যান করেছি। সহবাস, প্রণয় সবকিছু বিসর্জন দিয়েছি সাচ্চা মুসলিম হওয়ার জন্যে। আমি জানি না হতে পেরেছি কিনা কিন্তু আমার মধ্যে কোন অপরাধ-বোধ কাজ করে না।

অর্ঘ্য মাথা নাড়াতে নাড়াতে বলল, ভালোবাসার মানুষকে প্রত্যাখ্যান করা কোন অপরাধে পড়ে না?

হুমায়ূন চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। টেবিলের উপর আঙ্গুল স্পর্শ করে বলল, ধুলো পড়ে আছে। মুছে নিও।

অর্ঘ্য ঠাণ্ডা গলায় বলল, আমি আগামী মাসে বাসাটা ছেড়ে দিচ্ছি।

হুমায়ূন বলল, কেন?

অর্ঘ্য শান্ত গলায় বলল, স্টুডিও ফ্ল্যাট নিয়েছি। আমি আর রিয়াজ থাকবো সেটাতে।

-রিয়াজ কে?

অর্ঘ্য বলল, আমার বয়-ফ্রেন্ড।

হুমায়ূন বিস্ময়ের সীমানা  হল না। বিমর্ষ গলায় বলল, সুখে থাকো।

-তোমার শুভ বার্তা আমার দরকার নেই।

হুমায়ূন ধরা গলায় বলল, স্টুডিও ফ্ল্যাটে থাকার স্বপ্নটা আমাদের দু’জনের ছিল।

অর্ঘ্য হুমায়ূনের কাছে এগিয়ে গেলো। তার কাঁধে হাত রেখে বলল, সবকিছু বদলে গেছে। সবকিছু।

হুমায়ূন অর্ঘ্যের গালে হালকা স্পর্শ করে বলল, আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমার ধর্ম আমাকে সেক্স করতে বাধা দিয়েছে, ভালোবাসতে নয়।

অর্ঘ্য উত্তর দিলো না। সে কাঁধ থেকে হাত নামিয়ে দরজার কাছে এগিয়ে গেলো। হুমায়ূনের কান্নার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।

অর্ঘ্য ঠাণ্ডা গলায় বলল, আজ দেড় বছর পর তুমি তোমার ভালোবাসার দাবি নিয়ে এসেছ? কে বলেছিল বিয়ের কথা? কে বলেছিল সম্পর্ক ভাঙার কথা? তুমি তোমার মর্জি ছাড়া কিছুই করো না হুমায়ূন। নিজেকে সংশোধন করো।

হুমায়ূন চোখ মুছতে মুছতে বলল, আমি আসলে বুঝতে পারিনি। কিন্তু আমাদের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নেই।

-তুমি বোলো তাহলে কি করতে চাও!

-আমরা পরিবারের কথা অনুযায়ী বিয়ে করে ফেলি। বিয়ের পরও আমাদের সম্পর্ক থাকবে। 

-আমার পক্ষে একটা মেয়েকে বিয়ে করে সম্পর্ক চালানো সম্ভব না। একটা মেয়ের সঙ্গে প্রতারণা করতে আমি পারবো না। তুমি কিভাবে পারবে কে জানে।

-আইডিয়াটা খারাপ নয় অর্ঘ্য!

-আমি রিয়াজের সাথেই আমার জীবন কাটাতে চাই।

-তুমি আমাকে এভাবে ফেলে দিলে?

-বাজে বকবে না।

-আমি বাজে বকছি না। শহরে এসে অল্পদিনে জাতে উঠে আমাকে না চেনার ভান করছ। ভুলে যাবে না আমি তোমাকে সব ক্ষেত্রেই সাহায্য করেছিলাম।

-তুমি মানসিকভাবে অসুস্থ।

-তুমি একটা পাপী। তুমি একটা নাস্তিক। তুমি কখনও সুখী হবে না।

অর্ঘ্য চাপা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে বলল, ধর্ম তোমাকে নির্দয় করেছে।

হুমায়ূন অর্ঘ্যের গালে ঠাস করে একটা চড় মেরে বসলো।  

কনকনে শীতেও যেন গা গরম হয়ে আসছে। ঠিক দেড় বছর আগে এক বর্ষার দিনে বিমর্ষ ভঙ্গিতে তাকিয়ে ছিল অর্ঘ্যের বাড়ির দিকে। আজও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। সেদিন অর্ঘ্যকে চাইলে হয়তো পাওয়া যেতো কিন্তু আজ হাজার আকুতি করলেও পাওয়া সম্ভব নয়। এককালে দু’জন একা থাকতে পারতো না। যেখানেই যেতো একসাথে যেতো। যাদেরকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি কোন শক্তি আজ তারা আলাদা। হুমায়ূন এক দৃষ্টিতে বাড়ির দিকে তাকিয়ে থাকলো। বাড়িটি বদলাইনি। শুধু রঙ ফিকে হয়ে গিয়েছে। মাধুরিলতা গাছটা শুকিয়ে গেছে। একটা পাতাও নেই।

অর্ঘ্য বারান্দায় কি আসবে? শেষ বারের মতো বিদায় দিতে আসবে না? এতো ক্ষোভ তার বুকে জমিয়ে রেখেছে কিভাবে? ও তো হৃদয়হীন নয়। আর অল্পকদিনের মধ্যেই আরেকজনের সাথে কিভাবে … কিভাবে তাকে ছেড়ে আরেকজনের সাথে থাকতে পারছে? সব ভালোবাসা কোথায় উড়ে গেলো? সে কি আদৌ তাকে ভালোবাসতো?

চড় মারা উচিত হয়নি। নোংরা কথাগুলো বলাও উচিত হয়নি। সে-কি আবার ফেরত যাবে? ক্ষমা চাইতে যাবে? নিজের ভুলগুলো ধরা পড়ছে না কেন তার কাছে? কেন? কেন সে নিজেকে অপরাধী হিসেবে কল্পনা করতে পারছে না।

অভিমান, দুঃখের ভারে তাদের দু’জনের ছোট্ট জীবনটা তছনছ হয়ে গেলো।

অর্ঘ্যের বারান্দার দিকে তাকিয়ে হুমায়ূন ফিসফিস গলায় বলল, বিদায় অর্ঘ্য!     

mondroadmin Avatar

Posted by

One response to “বিদায় অর্ঘ্য”

  1. অরিত্র হোসেন | MONDRO Avatar

    […] বিদায় অর্ঘ্য> f w h fFacebook wTwitter gGoogle+ pPinterest প্রণেতা, […]

    Like

Leave a comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.