বিষাদমৃত্যু

লেখকঃ অরিত্র হোসেন

আজকালকার সব আধুনিক পোলাপান! কানে হেডফোন দিয়ে হেঁটে বেড়ায়! চোখে আর দেখার প্রয়োজন হয় না তাদের!’ 

মোটরসাইকেল চালক আমার দিকে ক্ষ্যাপা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন। 

তাড়াহুড়ো করে রাস্তা পার করতে গিয়ে এক মোটরসাইকেল এর সামনে পরে গেলাম আমি। আরেকটু কাছে এলেই আমার পা যে সেই চাকার তলে পড়তো এবং আমাকেও বলি চড়তে হত! 

আমি কিছু না বলার পেয়ে, একটু মুচকে হেসে সেখান থেকে দ্রুত কেটে পড়লাম। চালক সাহেব প্রলাপ করতে লাগলো! আমার ওসব দেখার কোন প্রয়োজন নেই! বেঁচে গেছি, এতেই হাজার শুকরিয়া আল্লাহ্‌র কাছে।

এতো কাহিনী হত না, যদি শান্ত মনে আসতাম আমি। মিতুল হঠাৎ আমাকে ফোন দিয়ে বলল,

দোস্ত! জরুরী কথা আছে, প্লিজ আয় না আমাদের এ’দিকটায়’।

কথাগুলো খুব পেরেশান ভঙ্গিতে বলল মিতুল, সে কিছু একটা বলতে চায় এরকম অস্থির ভাব কথায় বুঝা গেলো। আমি কোন কিছু না ভেবেই বললাম, ‘আসছি, বটতলায় থাকিস ৫:৩০।’

ঠিক আছে?’

মিতুল বলল, ‘অ্যায়, দোস্ত! তাড়াতাড়ি’

মিতুল কোন সমস্যায় পরলে, তার জগত অন্ধকার হয়ে যায় এমনভাব করে। একটা সমাধান যে হতে পারে, এটা তার মাথায় খেলে না! সমস্যা মানেই ঝামেলা, সমস্যা মানেই একগাদা দুঃখ তার কাছে। 

ভাবতে ভাবতে চলে এলাম বটতলায় সামনে। হাতঘড়িতে বাজে ৫:৩৪ মিনিট, ৪ মিনিট লেইট। অবশ্য মিতুল লেট করে সবসময়, বড়োজোর ১০ মিনিট! আমি একটু কাছে যেতেই দেখলাম একটা বিমর্ষ চেহারা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি চিনতে পারছিলাম না, কে ওটা! আরও কাছে যেয়ে আবিষ্কার করলাম, এ আর কেউ না! ‘মিতুল’। 

প্রাণচঞ্চল, উত্তেজনায় পরিপূর্ণ যে ছেলের মুখে সবসময় হাসি দেখেছি সে ছেলে কিনা মুখ গোমড়া করে বসে আছে! অবশ্য যেকোনো সমস্যায় পরলে তাকে চিন্তিত দেখা যায়, কিন্তু এরকম মরা মরা ভাব এ এই প্রথম দেখলাম! আমি বললাম,

কি রে! এতো রোগাটে দেখাচ্ছে কেন তোকে? এমন কি হল তোর? 

মিতুল আস্তে আস্তে বলল, চল ঐদিকটায় যাই। কথা আছে।

মিতুল দাঁড়িয়ে গিয়ে হাঁটা শুরু করলো, আমিও তার পিছনে পিছনে আসতে লাগলাম। কি হল এমন? 

উত্তরা লেকের পাশে বসে আছি আমরা। মিতুল হাঁপানি রুগীর মতো শ্বাস নিচ্ছে, আমার কাছে ব্যাপারটা বেশ বিরক্ত লাগছে। আমি বললাম,

এইবার বল! কি হয়েছে?

মিতুল খুব হতাশ ভঙ্গিতে বলল, আমার একটা রিলেশন হয়েছে। 

আমি একটু অবাক হয়েই বললাম, কার সাথে?

মিতুল খুব আস্তে বলল, ‘একটা ছেলের সাথে, নাম ‘আয়ান’।’

যে ব্যাপারটা আন্দাজ করেছিলাম সেটাই হল! হ্যাঁ, মিতুল আসলেই সমকামী! আমি ব্যাপারটা প্রথম আন্দাজ করেছিলাম যখন সে আমাকে প্রপোজ করে। হঠাৎ নাই কথাতে একদিন মেসেজ পাঠায়, ‘তোর সাথে সম্পর্ক রাখা সম্ভব না, বাই দোস্ত’

এরপর কলেজে যেয়ে আসল কাহানী শুনলাম, ছেলে আমাকে বড্ড পছন্দ করে। আমি কিছুই তেমন বলিনি, আমার বলার কিছুই নেই! কারণ আমার নিজের একটা রিলেশন আছে, আমি তখন অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছি, ‘রিয়া’র সাথে! ছেলেদের প্রতি আমার আকর্ষণ নেই বললে একটু ভুল হবে, আমার সব আকর্ষণ মিতুলকে ঘিরে! কিন্তু কখনও কাম প্রবৃত্তি জন্মেনি তার প্রতি, এই টান অন্য টান! হয়তো বন্ধুত্তের টান, যে টানে বাস্তবিক রুপ নেই, এই টান শুধু মনেই রয়। খুব কষ্ট করে মিতুলকে শান্ত করলাম, সে স্থবির হল। এরপরের ঘটনাগুলো অপ্রত্যাশিত ছিল। আস্তে আস্তে যোগাযোগ কমে যায়, আমি নিজেও একটু দূরে সরে আসি। আমি বুঝতে পেরেছি সে নতুন এক জগত তৈরি করে ফেলেছে, সেখানে নিজের সমমনা মানুষের সাথে মিশে যেতে শুরু করেছে। যেখানে আমার জায়গা নেই, কিন্তু তার মনের একটা জায়গা আমি এখনও দখল করে আছি! সেটা মুখে প্রকাশ করতে হয় না মিতুলের, আমি বুঝি। 

মিতুল, তুই কি জানিস আমি ব্যাপারটা আন্দাজ করতে পেরেছিলাম তুই যে একটা…

মিতুল তড়িঘড়ি করে উঠে বলল, হ্যাঁ! সেজন্যই বলে ফেললাম! দোস্ত, আমি এগিয়ে গিয়েছি অনেক, সম্ভব না ফেরা! তোরা Straightরা…

-মানে, এখানে আমার ভেদাভেদও হয়ে গিয়েছে! সোজা, বাকা! এইসব কি!

-বুঝবি না, আবির!

-বুঝেলেই বুঝবো!

মিতুলের ভাবসাব দেখে বুঝে গেলাম সে ইচ্ছুক না আমাকে এই ব্যাপারে জ্ঞানদান করতে। আমিও ছেড়ে দিলাম আশা। একটা কথা মুখে এসে পড়লো এবং বলেই দিলাম,

দেখ! বেশি জ্ঞানী হতে গিয়ে নিজের জীবনটাকে অন্ধকারে ঠেলে দিস না কিন্তু!

মিতুল কিছু বলল না, সে কুঁকড়ে বসে রইল।

-মিতুল, তোর বয়ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করাবি না? 

মিতুল চমকে উঠে বলল, তুই দেখা করবি ওর সাথে? আবির, তুই কি ব্যাপারটা মেনে নিতে পেরেছিস? না, এমনেই আমাকে শান্ত রাখার জন্য বলছিস!

আমি বললাম, মেনে নিবই না বা কেন? তুই একটা ছেলেকে ভালোবাসিস, হতেই পারে! সবার পছন্দ-অপছন্দ ভিন্ন হতেই পারে!

মিতুল বলল, না তা না! Straight রা সাধারণত মেনে নিতে পারে না!

আমি কড়া কণ্ঠে বললাম, আবারো শ্রেণী বিন্যাস করছিস তুই? সমস্যা কি তোর? 

মিতুল কিছু বলল না, সে হাঁটাহাঁটি শুরু করলো। 

আমার মেজাজটা কেমন জানি বিগড়ে গেলো। আচ্ছা, ভালোবাসার মধ্যে কি শ্রেণিবিন্যাস আছে? তুমি মেয়েকে ভালোবাসো বলে তুমি হবা, Straight। তুমি ছেলেকে ভালোবাসো বলে তুমি হবা Gay। মানে এইসবের ভিত্তি আমি বুঝি না। ভালবাসার মধ্যে কিসের ভেদাভেদ। এতো এক পবিত্র অনুভূতি, এক বিশেষ মানুষের প্রতি। সেটা ছেলে হোক বা মেয়ে হোক, সেটা দেখার প্রয়োজনীয়তা কি আদৌ আছে? ‘সমাজ’ অবশ্য মনগড়া কথায় বিশ্বাসী না, তারা বিশ্বাসী কাগজে কলমে লেখা, মুখে প্রচলিত গোঁড়া রীতিনীতিতে। যেখানে একটা ছেলে, একটা মেয়ে কে পছন্দ করে বিয়ে করাটাই কটু দৃষ্টিতে দেখা হয় সেখানে একটা ছেলে আরেকটা ছেলেকে ভালবাসবে, বিয়ে করবে, তাতেই যে সমাজ ধর্মে বিশাল কলঙ্কের দাগ পড়বে বলে আমাদের সমাজবিদরা সেই অংক কষেন! 

-মিতুল, আমি চললাম। কথা হবে পরে।

মিতুলের কাছ থেকে কিছু জবাব আশা করিনি, কিন্তু অবাক করেই সে বলল,

আদনানের সাথে দেখা করবি না?

একটু মিষ্টিস্বরে বললাম, করবো! একদিন অবশ্যই করবো!

মিতুল তার বয়ফ্রেন্ড নিয়ে আমার সামনে বসে আছে। আমরা আছি এখন একটা রেস্টুরেন্টে। মিতুলের চোখে মুখে কেমন জানি এক ভয়ঙ্কর আতঙ্কের ছাপ। সে নিশ্চয় আবার শ্রেণী বিভেদের অংক কষছে। আমার ইচ্ছে করছে ওকে একটা কষে চড় দেই, এত্ত উদ্ভট টাইপের ছেলে সে কেন! মিতুল ঠিকমতো সিটে বসে থাকতে পারছে না, ক্রমাগত নড়াচড়া, অদ্ভুত অঙ্গভঙ্গি করছে। আমি বিরক্ত সুরে বললাম,

মিতুল, সমস্যা কি তোর?

মিতুল একটু চমকে বলল, কই! নাহ তো! কিছুই না! কথা বল আদনানের সাথে!

আমি বললাম, বলছি। তুই এখান থেকে ৫ মিনিটের জন্য উঠে যাবি। তোর অঙ্গভঙ্গি মোটেও ভালো লাগছে না আমার। বিরক্তিকর! 

-কেন? কেন?

-তোকে যেতে বললাম, চলে যা। প্লিজ, নো বাহানা!

মিতুল আদনানের দিকে একবার তাকিয়ে দেখল, আদনান মুখের ইশারায় অনুমতি পেল। মিতুল তড়িঘড়ি করে উঠে গেলো, মনে হয় অনেকক্ষণ ধরে টয়লেট চেপে রেখেছে।

-তো, আদনান সাহেব। আছেন কেমন?

আদনান আমার দিকে ভুরু কুচকে বলল, ভালো আছি কোনোরকম। কিন্তু একটা জিনিসের জন্য আক্ষেপ হয় এখনও! 

-মানে?

-মানে, তোমার বন্ধুকে বললাম তার বেস্ট ফ্রেন্ডকে খুব পছন্দ আমার। সেতো দিবেই না, তাই আর কি বন্ধুর সাথেই থাকতে হচ্ছে! 

বলেই অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো আদনান।

একটা মানুষ কিভাবে এতো বাজে রসিকতা করতে পারে? আসলেই কি মিতুলের ব্যাপারে সে সিরিয়াস, না অন্যকিছু! লক্ষন সুবিধাজনক নয়! 

আদনান সামনে থাকা টিস্যু নিয়ে ছিঁড়তে ছিঁড়তে বলল,মহোদয়! কিছু মনে করো না, আমি ফান করছিলাম। তোমাদের বিষমকামীদের সাথে রসিকতা করতেই আমার খুব ভালো লাগে।

-আর সমকামী হওয়াটা কি খুব গৌরবের বিষয়?, আমি ক্রুদ্ধকণ্ঠে বললাম।

-তা সব কামি হওয়াতেই গৌরব আছে। গৌরব তো কর্মে, না ধর্মে? হা হা হা!

-আমি এইসব কথাতে আগ্রহী না বেশি। কিছু যদি না মনে করেন তাহলে একটা কথা -জিজ্ঞেস করতে চাই।

-করেন, মহোদয়! 

আমি কড়াকণ্ঠে বললাম, আপনার বয়স ২৭ আর মিতুলের ১৯। বয়সের ডিফারেন্স অদ্ভুত বেশি। আপনি বিয়ে করবেন কবে?

আদনান হাসতে লাগলো। এই হাসি, ভিলেন হাসি। সে কি বাংলা সিনেমায় ভিলেনের রোল করে নাকি? না এই এক বিরল প্রতিভা?

-যা জিজ্ঞেস করলাম তার জবাব দিলে খুশি হই!

আদনান বলল, তোমাকে খুশি করা তো আমার দায়িত্ব না! তাও মিতুলের ফ্রেন্ড হিসেবে করতে পারি। কিভাবে করবো জনাব?

-বাজে বকেছেন অনেক, মাথা গরম হচ্ছে। আপনার মত মানুষের সাথে মিতুল কি করে থাকে সেটাই বুঝলাম না। আমি হলে তো … 

আদনান কৌতূহলী হয়ে বলল, কি করতে? 

-জীবনে সম্পর্কে জড়াতাম না!

আদনান মুচকি হেসে বলল, তোমাদের এই ধরনের মতের মানুষের সাথে এইজন্যই আমাদের মানুষের মিল হয় না। তোমরা যা তা নিয়ে খুশি থাকো, এখানকার মানুষদের বুঝতে এসো না। কারণ, তাদের তোমরা কখনই বুঝবে না, তাদেরকে কোনদিন আপন করে নিবে না। দেখানো জিনিস না করার চেয়ে, দূরে দূরে থাকো। ওইসব মিথ্যা, লোক দেখানো স্বীকৃতি প্রয়োজন নেই। 

আমি কথাগুলো কোন মতেই হজম করতে পারলাম না। দোষটা কার ছিল, আমার না তার? আমি জোরে জোরে ডাকতে লাগলাম মিতুলকে। মিতুল সম্ভবত আশেপাশেই ছিল। সে দৌড়ে চলে আসলো। আমি সিট থেকে উঠে বললাম,

যেকোনো একজনের সাথে সম্পর্ক রাখবি! আমি নাহলে তিনি! ডিসিশন তোর! আমি গেলাম।

গটগট করেই চলে এলাম। আমি রাগে পরিপূর্ণ। আমার দোষটা আসলেই কোথায়? আসলেই সমকামীরা এমনি হয় নাকি?

সেদিনের পর থেকে মিতুল সাথে কোনো যোগাযোগ রাখিনি। সেও আমার সাথে যোগাযোগ করার প্রয়োজনবোধ করেনি, তারমানে সে তার বয় ফ্রেন্ডকেই বেছে নিয়েছে। এই ২বার হল আমাদের মধ্যে ফাটল ধরল। আমি নিজেকে খুব কষ্টে কন্ট্রোল রাখলাম, যোগাযোগ করতে গিয়েও করলাম না। কিন্তু এক পর্যায়ে মনে হল, না! উচিত যোগাযোগ করা। আমিও কি পাষাণ হয়ে গেলাম? মিরাকল কিভাবে ঘটে তা জানি না কিন্তু অবাক করেই এই কথাগুলো ভাবার সময় মিতুলের ফোন আসলো। আমি ধরেই বললাম, 

কিরে! আমাকে মনে পরল? 

মিতুল কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, দোস্ত! আমাকে মাফ করে দিস। আমি অনেক ভুল করেছি। 

-কিরে! কি হল তোর? 

-আদনান, বিবাহিত। সে আমাকে মিথ্যা বলেছে। ওই কথা তুই জিজ্ঞেস করাতে সে ভয়ে ক্ষেপে গিয়েছিল। কিন্তু আমি গাধার মতো, তাকেই সিলেক্ট করলাম। নাহ, আমারই ভুল। আমার প্রথম ভালবাসা এমন হয়ে গেলো। মিথ্যা দিয়েই …

আমি বললাম, চুপ কর গাধা। হয়েছে তো! এতো ভেঙ্গে পরলে কিভাবে হবে?

-দোস্ত রাখি, পরে কথা বলবো!

মিতুলের এই শোচনীয় অবস্থা দেখে গায়ে কাটা দিয়ে উঠলো। মিতুলের মাথায় একটু সমস্যা আছে, সে বিরাট ঝামেলায় পরলে উল্টাপাল্টা কিছু করে বসে। কিছু করে ফেলবে না তো? 

ঘড়িতে বাজে তখন রাত ১১টা। চাইলেও বাসায় যাওয়া যাবে না মিতুলের। কালকে সকালেই যাই, সবকিছু ঠিকঠাক করতে হয়!

হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। চারদিকে আর্তনাদের শব্দ, কান্নার শব্দ। গমগম করছে শব্দে। আমি অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছি, মিতুলের দেহের সামনে। সাদা কাপড় দিয়ে মোড়ানো, মুখখানি বের করা।

আচ্ছা, সব কিছুর সমাধান কি আত্মহত্যা হতে পারে? অবশ্যই না! তোমাকে সৃষ্টিকর্তা তৈরি করেছেন, জন্ম দিয়েছেন মাতা। তাহলে জীবনে হক তাহলে তাদের বেশি না? কেন তুমি নষ্ট করবে? তুমি কে? তোমার দেহকে খাদ্যদানকারী? রক্ষণাবেক্ষণকারী? এই দেহ তোমাকে সৃষ্টিকর্তার আমানত! একটি ঘটনা জীবনে সহ্য করতে পারনি, তাই তুমি ১০ মাসের গর্ভে ধারণ করার কষ্টকে অপমান করে পরলোকে গমন করলে? তুমি মায়ের প্রসব কষ্টকে হেয় করলে? পিতামাতার মুখে কালি লেপন করলে? আসলেই, তুমি কে এইসব করার? কেনই পিতামাতা কষ্ট করলেন, তোমার জন্য? সব কষ্টের বিনিময়ে এই করলে?

আকুতি আমার, কেউ কখনও আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিবেন না। এই পথ অতি ভয়ঙ্কর, এই পথ একসাথে কয়েকটা জীবনকেই ঠেলে দেয় মৃত্যুর মুখে। এই মৃত্যু সুখমৃত্যু না, এই হল হত্যা! দুনিয়াতে তার কষ্টের জন্যই, মাংসগড়া দেহটাই থাকে বেঁচে। আত্মা মরেই যায়।

আদনান তো সংসার করতেই লাগলো, আর ওইদিকে মিতুল নষ্ট করলো তার জীবনকে। আসলে বলার কিছুই নেই। আমি অবাক, বিস্মিত!

আদনানের সাথে একদিন দেখা হয়ে যায় এক শপিং মলে। তার বউয়ের সাথে হাত ধরে হাঁটছিল ঘনিষ্ঠভাবে। আমি সহ্য করতে পারলাম না, চোখ ভর্তি পানি আমার। মিতুল, মরে কি পেলি?

কি পেলি?

আমার এই চাপা আর্তনাদ, আবির নামের দেহটা বহন করছে। তার বুক ফেটে কান্না আসে, কিন্ত যার জন্য কাঁদে, সে কি এখন দেখছে এই কষ্ট?

জবাবটা জানতে ইচ্ছে করে…।

তার এই মৃত্যু আজীবন হয়ে থাকবে, সব আপনের কাছে হয়ে থাকবে বিষাদমৃত্যু।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.