স্মৃতি

লেখক- Aiden

October 22,2018

আমার ১৭তম জন্মদিন। অনলাইনে অনেক দিন যাবৎ একটা মেয়ের সাথে ভালো বন্ধুত্ব ছিল। তবে সেদিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম নিজের ব্যাপারে বলবোই বলবো। বললাম ও।এর পরে আর তার সাথে কথা হয়নি তেমন। কারণ দেখতাম আমি টেক্সট করলেই সে কেমন যেন এড়িয়ে যেত। সে আমাকে নিজের ভাই এর মত ভাবলেও আমি সমকামী এটা শুনার পরে তার ব্যবহার পালটে যায়। আর কথা হয়না আমাদের একেবারেই।ফ্রেন্ডলিস্টেও আমি তাকে রাখিনি আর।

November 15,2018

ব্রেক আপ এর ট্রমা দিয়ে যাচ্ছিলাম।সে সময়ে আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু ছিল ২ জন। একজন এর সাথে বন্ধুত্ব সেই ছোটবেলা থেকেই,সেদিন আর না পেরে বলে দিলাম, ভাই আমার সাথে এগুলা হয়েছে আমার কিচ্ছু ভালো যাচ্ছিল না। সে এটা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লো। ভাবতেও পারিনি যে মানুষটা আমাকে নিজের আপন ভাই থেকেও আপন মনে করত সে আমাকে তার সাথে বন্ধুত্ব শেষ করে ফেলতে বললো।আর ধর্মের দোহাই দিতে থাকলো,আমাকে বললো যে এসব নাকি চেষ্টা করলেই ভালো করা যায়,হায় অদৃষ্ট। তার সাথেও আর আমার কথা হয়না।

December 01,2018.

আমি আস্তে আস্তে কমিউনিটির নতুন নতুন মানুষের সাথে মিশা শুরু করেছি।আগে কারো সাথেই যোগাযোগ রাখা দরকার মনে করতাম না। তবে আগের তখন কনফিডেন্স বেড়েছিল অনেকটাই বেশি। সেদিন সাহস করে আমার কলেজের খুব কাছের এক ফ্রেন্ড কে বলে দিয়েছিলাম যে আমার এক্স বয়ফ্রেন্ড ছিল,সে প্রথমে খুব অবাক হল,পরে বললো “দেখ,আমি এগুলা সম্পর্কে কিচ্ছুই জানিনা। এব্যাপার টাই পুরোটা খালি আমার মাথায়,তবে আমি তোকে ফ্রেন্ড মানি আর মানবো।জাস্ট আমি যদি অফেন্ড করে ফেলি একটু জানাইস।” এরকম কথা শুনতে কার বা খারাপ লাগে বলুন?

February 12,2019

যাই যাচ্ছিল, ভালো যাচ্ছিল।হাই স্কুলের একটা ফ্রেন্ডের সাথে সারাদিন অ্যানিমে নিয়ে কথা বলতাম। তার সাথে সেই সময়টাতে বন্ধুত্ব ভালোই হয়েছিল।একদিন তার মন খারাপ বলে আমি তার সাথে দেখা করতে যাই।কারণ শুনতে চাইলে সে বললো,”তুই কি বুঝবি,আমার অবস্থায় তোরা কেউই নেই” পরে সেই বললো যে তার বয়ফ্রেন্ড আছে এবং এখন সম্পর্কটি শেষ হতে চলেছে। সবকিছু শুনার পরে নিজের ব্যাপারেও আমি বলে দিলাম।দুজনেই প্রচন্ড অবাক ছিলাম।পরে সাহায্য করলাম তাদের কে এক করার জন্যে। কে জানতো যে মানুষটার সাথে ক্লাস সিক্স থেকে পরিচয় সে আমার কমিউনিটির হবে। আমার এটুকু জীবনেই যে কতটা পরিমাণ এসবের উদাহরণ দেখা লেগেছে তার হিসেব নেই। তবে যখন আপন কেউ দূরে সরিয়ে দেয় বা কোনো ক্লাসমেট এসে বলে যে “এগুলো ঠিক করা যায়”/”দোস্ত ডাক্তার দেখাইস”/”নামাজ রোজা পড়িস এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে”/”ধর্মের পথে আয় এসব ভালো না”/”আরে এগুলা কিচ্ছু না,কিছুদিন আমাদের থাক এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবি দেখিস” বলে তখন উত্তর দেয়াটা কঠিন লাগে,হোক সেটা ঠাট্টার ছলেই বলা। Internalized homophobia নামক বস্তুটির জন্যে আজো হাজার মানুষ নিজের মধ্যকার সত্যিকারের রুপ টা কে ঘৃণা করে। আমিও চাই একদিন এ আকাশ ঘৃণার মেঘ থেকে রেহাই পেয়ে বিশাল এক রংধনু একেঁ দিক নিজ বুকে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.