
লেখক- খোয়ারিতে থাকা এক পুরুষ
ম্যোঁরস,
তপ্ত সাগরবালুকায় অনামা কোনো আরবকে থেমেথেমে করা তোর সেই পাঁচটে গুলির মতো করেই তুই গেঁথে আছিস জাগতিক অথচ পরম আরাধ্য ‘অচেনা’ হয়ে- আমার ভেতর। গিলোটিনে প্রাণ যেতে পারে জেনেও আদালত কিংবা পাদ্রীর ভ্রুকুটিকে পাত্তা দিবি সে মানুষ তো তুই নস! ‘যা তো, ভালো লাগতেছে না তোরে’ বা ‘আমি জানি তোর পকেটে সিগারেট আছে, সিগারেট দে; নাটক করিস না’ বলতে তোকে দুদণ্ড অপেক্ষা করতেও দেখিনি আমি কোনোদিন; শুধু মেরিকে বলার মতন করে বলিসনি কোনোদিন, “হ্যাঁ, ভালোবাসি তোকে। তুই ভালোবাসিস তাই…”; বলবিও না কোনোদিন-সেও জানি।
অন্য অজস্র হুক-আপের মতন ভুলে যাওয়া যেকোনো হুক-আপের ঘটনাই হতে পারতিস তুই; ঘরের দেওয়ালে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আর শহীদুল জহির কেন ঝুলাতে গিয়েছিলি? কেনইবা ঘরে সাজানো থাকবে গৌতম বুদ্ধ কিংবা আনুবিস? সেদিন তোর রোল করা বেহিসেবি জয়েন্টের সাথে পৃথিবীর ইতিহাস, প্রাণের বিবর্তন, দেশভাগ, ধর্মতত্ত্ব, মিথোলজি, পিঙ্ক ফ্লয়েড, মেঘদল, ফয়েরবাখ, নীৎসে বা আলথুসের নিয়ে এত এত আলাপ না হলেই বোধহয় ভালো ছিলো; তোর সাথে হয়ে যাওয়া প্রতি স্পর্শাস্পর্শের মূহুর্ত আমার প্রতিটি ন্যানোস্ফিয়ার দখল করে বসে থাকতো না তাহলে; ভুলে যেতাম- আর যেগুলো যেভাবে যাই ঠিক সেভাবে।
তোর প্রতি আমার কোনো ইনফ্যাচুয়েশন নেই; প্রথমত সেই মানসিক বয়স বেশ আগেই পার হয়ে গেছে, দ্বিতীয়ত এতো দীর্ঘসময় ইনফ্যাচুয়েশন থাকার যৌক্তিকতাও নেই। কিন্তু তোর প্রতি আমার যেটা আছে সেটা কখনো আমি তোকে বুঝতে দেইনি-দেবোও না-বলবোও না; না, কোনো সংকোচ আমার কাজ করে না; সামাজিক সত্ত্বা এই ‘আমার’ ভেতরে বেড়ে ইগো নামের এক অলীক সংবেদ তোর প্রতি আমার যে অনুভূতি সেটা কখনোই প্রকাশ করতে দেবে না।
সবার কাছে জোরালো গলায় ‘এ আমার বন্ধু’ বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, ‘চল তো, জয়েন্ট খাই’ বা ‘আয়, তোরে বাটাম (বাংলা যার মাইর, আসলে ভালোবাসা- আমি তো জানি) দেই’- এসবের জন্য তোকে আমি কখনোই ধন্যবাদ দিবো না। আমার নাম ধরে তোর মুখের ঐ ডাকটা শোনার জন্য আমি তোকে দেখেও না দেখার ভান করবোই; যেমনটা করে গেছি সবসময়- আমি ভীষণ স্বার্থপর, জানিস তো!