মুখোমুখি

লিখেছেনঃ লৌহ কপাট

ঘুম ভাঙ্গার পর থেকেই মেজাজটা গরম হয়ে আছে
আমি জানি সমস্যাটা কোথায় কিন্তু কিছু করতে পারছি না
মনে হচ্ছে একটা ঘিনঘিনে সরীসৃপ আষ্টেপৃষ্ঠে বেড়িয়ে ধরেছে আমাকে
ক্রমাগত তার চাপ বাড়ছে, বাড়ছে আর বেড়েই যাচ্ছে!

অনেক বড় হা করে নিঃশ্বাস নিয়েও বুকটা ভরছে না
যেন কানের কাছেই শুনতে পাচ্ছি এল্ভিওলাইগুলোর আর্তনাদ
‘একটু মুক্ত বাতাস দাও, সামান্য একটু হলেই চলবে’!
আমি হা আরো বড় করছি যেন চোয়ালটা ছিড়ে একেবারে ব্যাটম্যানের জোকার এর মত হয়ে যাবে দেখতে; তবুও লাভ হচ্ছে না!

চোখের কোণে চিকচিক করে ওঠা স্বচ্ছ শব্দগুলো আমায় বলছে, তুমি বন্দি
দুহাতের শক্ত মুঠো থেকেও ধমনী কিংবা শিরা বেয়ে মস্তিষ্কে পৌঁছে গেছে সেই বার্তা
যার সারমর্ম হল, আমি বন্দি
মটমট করে ওঠা পাজরের হাড়গুলো শবযাত্রায় ওঠা কান্নার রোলের মত আমার অভ্যন্তরীন
বেঁচে থাকার যন্ত্রগুলোকে বুঝিয়ে দিচ্ছে, আমার পুরোটাই একটা সামাজিক ছদ্মবেশ!

ঘুম ভাঙ্গার পর থেকেই বুঝলাম চোখের সামনে সাজিয়ে রাখা স্বচ্ছন্দের আয়নাটা ভেঙ্গে গেছে
নিজেকে সুখি ভেবে যত্নভরে লেখা মানপত্রটা ছিড়ে কুটিকুটি করে ফেলা হয়েছে
এই যে আমি, যে কিনা সবার সাথে মিলেমশে একটা প্রশংসনীয় মিথোজিবিতার দাবিদার হয়ে উঠেছিলাম, সেই আমি আসলে চূড়ান্ত অসামাজিক, অপাংক্তেয়, নষ্ট, ভ্রষ্ট
এই আমি আসলে নিন্দুকের বন্দুকের মূল লক্ষ্য,
ভ্রুকুটির চাবুক ফালাফালা করবে আমার সাহসী ত্বকের আচ্ছাদন (যদি খুলে না ফেলি)
অভিশাপের বোবাকান্না ডুবিয়ে মারবে আমাকে যদি না পড়ি খুব সহজেই মেনে নেওয়া যতসব আপাত রঙ্গিন সম্পরকের মালা!
ধর্মের বর্ম যদি না পড়ি তবে একেবারে উন্মুক্ত এই শরীর কিংবা আত্মায় আয়াতের কামান দেগে শেষ করে দিতে একটুও দ্বিধা করবে না তাঁরা!

ঘুম ভাঙ্গা, জেগে ওঠা, জেনে যাওয়া, বুঝে নেয়া-এসবই আসলে একেকটা ইঙ্গিত কিংবা নির্দেশ
অসহায়ত্বের, অপারগতার কিংবা আরো একটা লম্বা সময় অভিনয় করে যাবার

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.