
লিখেছেনঃ আ.আ
আমারে দয়া করে রিকোয়েস্ট কইরেন না। আবার কিছু জিগায়েনও না। আবার গায়ে পইড়া উপদেশ দিতে আইসেন না। আমি আসলেই সব ছাইড়া দিসি। এখন কিছুই করি না, কিছুই পারি না। আমি কাউরে কিছু বলতেও যাই না, কারোর কাছে কিছু শুনতেও যাই না। কি না করে কি করতে পারতাম, কি করা উচিত-অনুচিত কেন আমার জীবনে এতো হতাশা এইসব বইল্লা প্যারা দিয়েন না প্লিজ। আমারে ক্ষমা কইরা দেন। এই জনমে আর আসলেই তেমন কিছু করার ইচ্ছা নাই আমার। আমারে নতুন কইরা কোন কিছুর মইধ্যে টাইনেন না। কাজ থাকলে কাজ করি নাইলে বাসায় বইসা থাকি, বিকালে চা বিড়ি খাই। এইডাই আমার বর্তমান জীবন। এর বাইরে আমার তেমন কিছু নাই, রাখতেও চাই না। আমি আমার মত আমারে নিয়ে খুব আছি, আমারে আমার মতোই থাকতে দেন। ছাইড়া দেন একটু। একটু একা থাকি।
আমি কেমনে যে কই তুমি যদি এইহানে থাকতা…
ভাই, শিকড়ের টান খুব খারাপ জিনিস। এক সময় আমাদের কোন টান ছিলো না। আমরা ব্যাগ ভর্তি কেরুর বোতল নিয়ে ফার্মগেটের পুলিশরে ফাঁকি দিসি, পকেট ভর্তি গাঁজা নিয়ে থানায় গেসি, রাত তিনটায় কমলাপুরের বস্তির এক মাথা থেকে আরেক মাথা ঘুরসি, মাঠ ভর্তি আর্মির সামনে বসে জয়েন্ট বানায়ে খাইসি। আরেক জনের এলাকায় গিয়ে তারে মাইর দিয়ে আসছি। আমাদের আসলেই কোন রক্তের টান ছিলো না তখন। আমরা আমাদের মতো ঘুরে বেড়াইতাম। তারপর একদিন আমাদের অনেক পিছুটান হইলো। আমরা আবার আটকায়ে গেলাম। সমাজের কথামতো আস্তে আস্তে আমরা ঠিক হইতে লাগলাম। আমাদের পিছুটান বাড়তে লাগলো। আমরা প্রতিদিন নিজেদের আস্তে আস্তে হারায়ে নিজেদের সুখী বলতে থাকলাম। আমরা কিন্তু সমাজের কথা না শুইনাও সুখী আসিলাম। রক্তের টান থাকলে ঈশ্বরের কাছে মাথা নোয়ানো লাগে। পরিশুদ্ধ হইতে গিয়ে মোহ আইসা পড়ে। শিকড়ের টান খুব খারাপ জিনিস। ভাই, শিকড়ের টান খুব খারাপ জিনিস।
অনেকদিন অনেকসময় অনেকমুহূর্ত চলে যাওয়ার পর…
আমার ভাইরে যখন রাস্তায় পিটাইসে তখন আমি পাগলের মত কাঁদছি, আমার মানুষটা যখন ফোন করে বলছে সে অন্য কারো সাথে সুখে আছে তখনও আমি কাঁদছি। শেষবার কাঁদছি আম্মারে যখন আইসিইউতে শোয়ায় রাখছিলো তখন। এছাড়া সারা পৃথিবীর হাজার কষ্টের মধ্যেও তেমন একটা কাঁদি নাই। বুক ফাটছে তাও কাঁদি নাই। সমাজ বলে পুরুষ মানুষের বলে কাঁদতে নাই। বাপরে কোনদিন বলতে পারি নাই, আপনি যতবার কাঁদেন আমি টের পাই, ততবার আমারও বুকটা খাঁ খাঁ করে।
কেউ প্রশ্ন করে তখন বলতে পারি না আমি নেশা করি না, চোখ লাল হয় অন্য কারণে।