
লেখিকা- বারোভাতারি
প্রিয় প্রাক্তন,
তুমি ঠিক বলেছিলে, সহজে পাওয়া জিনিসের দাম দিইনা আমরা! তাই তুমি নেই বলে আজকে তোমার দামটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি!
তুমি ছিলে বলেই বুঝতে পারিনি কতটা জুড়ে ছিলে, আজকে নেই বলেই তোমার শূন্যস্থান কতটা বড় তা অনূভব করছি প্রতিনিয়ত!
হাত বাড়ালে পাই না তোমায় তাই মন বাড়িয়ে ছুঁই !
একটা ভূল কিংবা তোমার ভাষায় “পাপ” আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে আমার উইকনেস এবং বোকামি একসাথে!
তুমি বললে, আমি সোনা ফেলে ডায়মন্ড এর পেছনে ছুটেছি ! তুমি “সোনা” ঠিকই কিন্তু ওইটা ব্রোঞ্জ ছিল!
ঘুমের ঘোড়ে হাতড়ে বেড়াই, আজো খুঁজি তোমাকে! পরিচিত নিশ্বাস এর ঘ্রাণটা আশেপাশে অনুভব করি ভীষণ রকম! মিস করি তোমার স্পর্শ এর মাদকতা, তোমার আদরগুলো! একসাথে রান্নাকরা ,খাওয়া, কাজে যাওয়া, বাজার করা ইত্যাদি ইত্যাদি ! আমি জানি আমি তোমার কোথাও নেই, সবখানে এখন অন্য কেউ বিচরণ করে! তোমার মনে, স্মৃতিতে এখন অন্যকারো বসবাস! তোমার আমার স্মৃতি গুলো ইরেজার দিয়ে মুছে ফেলেছ, তবু তোমাকে নিয়ে ভাবতে ভাল লাগে!
আমার ট্যাটু দেখলে অন্য কাউকে মনে পরে তোমার, তাই তোমার নামে ট্যাটু করেছি! আমার হেয়ার কালারে অন্য কাউকে দেখতে পেতে তাই রং বদলেছি! আমি রাগী বললে, তাই রাগ কমিয়েছি !
আমি চুপচাপ বললে তাই কথা বলা শিখেছি! আমি বোরিং বললে তাই গান শিখেছি!
সবাই বলে, তোমার প্রতি আমার এতো ডিপেন্ডেন্সী ভাল নয়, ঠিক না! কিন্তু আমি জানি, আমি উইক আর তুমি স্ট্রং, আমি অন্ধকার আর তুমি আলো! আমি নারভাস হলে কে সব সামলে নেবে বলো?
কত অনায়াসে বলো, ভালবাসিনি কখনো! এতগুলো বছর তোমার ছাঁয়া হয়ে কিভাবে থাকলাম তবে?
একটা বাজে রকমের ইনফ্যাচুয়েশনে পরেছিলাম আমি, সেটি বারবার বলেছি লিখেছি কিন্তু ভালবাসিনি! তোমাকে কতটা ভালবেসেছি সেটি তোমাকে হারিয়ে বুঝেছি! তোমায় ছাড়া প্রতিটি দিন এক বর্ষ মনে হয় আমার!
তোমায় ভুলে যেতে বলো, কিভাবে ভুলে যাব বলো? আমার প্রত্যেকটি জিনিসে তুমি, প্রত্যেকটি স্মৃতিতে তুমি, আমার শিরায় শিরায় তুমি! আমার সকল স্বপ্ন পূরণেও তুমি!
জানো, একটি মেয়ে একা একা “পতিতা” হয় না! তার জন্য সুশীল ভদ্রবেশী খদ্দের দরকার হয় যে সারারাত মজা নিয়ে ভোর হলে ওই মেয়েটিকে বলে “তুই খারাপ”! অথচ এই পুরো প্রক্রিয়ায় ওই খদ্দেরেরও অংশগ্রহণ ছিল!
যে মানুষটি তোমার আমার রেস্টুরেন্ট এ খাওয়া নিয়েও হিংসা করতো, যে মানুষটি তোমার জায়গায় নিজেকে কল্পনা করতো আজ সে সাধু! আমি ধরে-বেঁধে এনেছি বলে এসেছে এই লজিকটা ঠিক “মেয়েটির গায়ে ওরনা ছিলনা, মেয়েটি প্রভোক করেছে বলে আমি ধর্ষণ করেছি” এই লজিকের মতো!
যাইহোক, আমি পাপ করেছি তার প্রায়শ্চিত্ত আমিই করব!!সাধু বাবারা ভাল থাকুক! দূরে চলে যাব, যতটা দূরে গেলে তোমার শান্তি ঠিক ততটা!
আচ্ছা, কেউ সেকেন্ড চয়েসের সাথে কেনো থাকবে?কিংবা থাকতে চাইবে? সাধুবাবার দাবি অনুযায়ী “প্রথম পছন্দ”, সে যতদিন পেছনে পরে ছিল তখন কেনো তাকে চুজ না করে কেউ সেকেন্ড চয়েসকে চুজ করবে? প্রথম পছন্দ সেটিই হয় যাকে নিয়ে মনে কোনো দ্বিধা থাকে না, যার সাথে থাকার কথা ভাবতে হয় না! আর সেকেন্ড চয়েস তারা যাদের নিয়ে দ্বিধা থাকে, যারা না থাকলেও চলে কিংবা অনেকবেশি ভাবতে হয়!
ভাল থেকো প্রাক্তন , নতুন প্রেম/ভাল লাগা আর তাকে ঘিরে স্মৃতি গুলো নিয়ে!
ইতি,
“বারোভাতারি” আমি!