কুইয়্যার স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা

লিখেছেন-জয়ন্ত

কুইয্যার স্বাস্থ্য: 

উন্নত বিশ্বের মত আমাদের দেশেও কম বেশি মানুষ কুইয়্যার জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত আছে। তাদের মধ্যে বেশীরভাগই তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন নয়। হতাশাজনক হলেও সত্যি যে আমরা অনেকে জেনে বুঝেও বিষয়গুলো মানি না। আসুন বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক:

হাস্যকর হলেও সত্যি যে আমরা অনেকেই আমাদের যৌনকেশ পরিস্কার করি না। নিজের সুস্থতার পাশাপাশি ব্যাক্তিগত পরিচ্ছনতার জন্য এটা করা জরুরী। যৌনকেশ পরিস্কারের ক্ষেত্রে ভালো রেজর ব্যাবহার করা উচিৎ। অনেকেই হেয়ার রিমুভেল ক্রিম বা লোশন ব্যাবহার করে, সেক্ষেত্রে ঐ স্থানের লোম আরো মোটা ও ঘন হয়ে যায়। পাশাপাশি সেখান কার ত্বক কালো হয়ে যায়। বাজারে স্বল্প মূল্যে রেজর পাওয়া যায়, আমরা এগুলা ব্যাবহার করতে পারি।

আমাদের মধ্যে অনেকেই চুম্বন করতে পছন্দ করি, কিন্তু পার্টনারের মুখের গন্ধের কারনে এটা অনেক সময় বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়ায়। দেখা যায় অনেকেরই পেটের সমস্যা বা গ্যাস্ট্রিক এর কারনে মুখে দূর্গন্ধ হয়। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মত ঔষধ সেবন করা যেতে পারে। আর গ্যাস্ট্রিক না থাকলে নিয়মিত ২ বেলা দাঁত ব্রাশ এবং মাউথওয়াশ ব্যাবহার করা যেতে পারে। প্রয়োজনে চুম্বন করার আগে চুইংগাম বা মাউথ ফ্রেশনার ব্যাবহার করা যেতে পারে।

ত্বক ও চুল পরিস্কারের ক্ষেত্রে আমাদের আমাদের সাধ্যমত ভালো কোন ব্যান্ডের শ্যাম্পু, বডিওয়াশ ও ফেসওয়াশ ব্যাবহার করা ভালো। শরীরের দূর্গন্ধ এড়াতে ভালো ব্যান্ডের সুগন্ধি ব্যাবহার করা। পোশাক পরিচ্ছদের পরিচ্ছনতার জন্য দীর্ঘদিন একই কাপড় না পরিধান করা। খুব বেশি অসুবিধা না হলে ১ কাপড় সর্বোচ্চ ২ দিন পরিধান করা উচিৎ। অর্ন্তবাস প্রতিদিন পরিবর্তন করা এবং প্রতিদিনেরটা প্রতিদিনই জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে ফেলা।

নিয়মিত যৌনাঙ্গ পরিস্কার করা। বিশেষ করে যৌন কর্ম শুরু করার আগে গোসল করে হালকা সুগন্ধি ব্যবহার করা, এবং মিলন শেষে ভালোভাবে গোসল করা। নিরাপদ যৌন জীবনের জন্য কনডম ব্যবহার করা, সম্ভব হলে একজন সঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকা। অনেকেই দেখা যায়  ইন্টারকোর্স এর এনাল পার্টের  জন্য লোশন,  তেল বা থুথু ব্যাবহার করে, যেটা পরবর্তীতে পায়ুপথে জটিলতা বাড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে ব্যাথা কমানোর জন্য লোকাল এনেস্থিসিয়া (জেসোকেন জেল), ল্যুব্রিকেটিং জেল কে-ওয়াই, কিংবা ডিওরেক্স ব্যান্ডের ওয়াটার বেইস জেল ব্যাবহার করা যেতে পারে। এনাল ইন্টারকোর্স এর পরে ব্যাথা বা রক্তপাত রোধের জন্য আনুষ্টাট ক্রীম ব্যাবহার করা যেতে পারে।

ব্যক্তিগত নিরাপত্তা:

বাংলাদেশের মত রক্ষণশীল দেশে আমাদের কুইয়্যার দের নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত লক্ষ্যনীয় বিষয়। আমরা অনেকেই হুক আপের জন্য নানা ধরনের সাইট বা এপ্লিকেশন ব্যাবহার করি। নিজেদের নিরাপত্তার জন্য সেগুলো লক করে রাখা বা পাশাপাশি পাবলিক প্লেসে প্রকাশ্যে এসব ব্যাবহার না করার জন্য অনুরোধ করছি। বর্তমানে অনেকেই বিভিন্ন রকমের ট্রাপের শিকার হচ্ছে, ব্যাক্তিগত ভাবে আমি বলবো কিছু কতিপয় ব্যাক্তি বা গ্রুপ মিলিতভাবে ঢাকা সহ ঢাকার বাইরে বিভিন্ন এপস বা ফেইসবুক ফেইক একাউন্টের মাধ্যমে যৌনকর্ম করার লক্ষে মানুষকে আকর্ষিত করে ডেকে নিয়ে তাদের সর্বস্ব হাতিয়ে নেয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে এই সমস্ত সমস্যার সম্মুক্ষীন হয়েছে। আমার ব্যাক্তিগত অভিমত থাকবে পুরোপরি পরিচিত না হয়ে কারো কাছে যাওয়া উচিৎ না। সম্ভব হলে একজন সঙ্গীর প্রতি বিশস্ত থাকা। বর্তমানে ভার্চুয়াল সেক্স বা ন্যুড অনেকেই শেয়ার করে থাকে। দেখা যায় পরবর্তীতে কোন ভূল বোঝাবুঝি বা মনোমালিন্য হলে কেউ একজন সেটা সোশ্যাল নেটওয়ার্কে বা মিডিয়াতে ছড়িয়ে দেয়।  আমাদের নিজেদের নিরাপত্তা আমাদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে। 

আশা করছি উপরোক্ত আলোচনা সবার সুস্থ ও নিরাপদ যৌন জীবনযাপন করতে সহযোগিতা করবে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.