আমি তোমাদের পাশে থাকতে চাই

যদিও ফেক আইডি দিয়ে পেজ ফলো করি … রিয়েল আইডি দিয়ে ফলো করতে ভয় পাই পাছে কেউ রিয়েক্ট বা কমেন্ট বা পেজ টায় লাইক দিছি সেটা দেখে আমাকে কেউ নক দেয়! 

সম্প্রতি এই পেজটার সাথে সম্পৃক্ত হয়েছি। রেগুলার পাঠক…

আমি আমার জীবনে কখনো কোন সমকামী মানুষের সাথে মিট করিনি বা দেখিনি। তবে একজন কে সন্দেহ করি যে অযাচিত ভাবে আমার গায়ে হাত বুলিয়েছিল। সে নারী … বুঝে গেছেন আমিও একজন মেয়ে… যাইহোক কথায় আসি। আমার কল্পনাতেও ছিল্না মানুষ সেম সেক্সের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে… কোন এক কবির এই নেচার সম্পর্কে জানার পর আমি টাশকিত হই। পায়ের নিচে মাটি সরার মতই।কিন্তু আমরা কাছের কাউকে ফেলে দিতে পারিনা… তাই হয়ত ধীরে ধীরে তার ব্যাপারটার সাথে মানিয়ে নেই আর ব্যাপারটা নিয়ে ভাবতে শুরু করি।  আমি মনে করি আর আট দশটা মানুষেরও নিজের সাথে যুদ্ধ করা উচিত, ব্রেইন কে চাপ দেয়া উচিত কারণ মানবতার উপরে কোন ধর্ম নাই। এখানে নিজের পার্শিয়ালটিকে কিছুটা দোষ দিতে চাই কারণ ওই কবি সমকামী/বাইসেক্সুয়াল না হলে হয়ত এটা নিয়া চিন্তা ব্যতিত আমি সরাসরি এটাকে ঘৃণা বা কল্পনাতেও আনতাম না। কালজয়ী কবি একজন (মৃত) … আমার মাঝে মাঝে আনইজি লাগলেও শেষমেষ যে চিন্তায় উপনীত হয়েছি তা হল তারা কোনভাবেই মানসিক কোন রোগি না। কারণ পেশেন্ট বা রোগী তখ্নই তাদের বলি যখন তার রোগের জন্য তার সহ অন্য সবার জীবন ব্যহত হয়, জীবন সংকটের সম্মুখে পড়ে, রোগ হলে তা স্বাস্থহানী ঘটে, কিংবা তার আচরণ অন্যের জন্য হুমকি স্বরুপ। কিন্তু সমকামীতা শুধুই সেক্সুয়াল প্রিফারেন্স… এরা চুরি করেনা, ডাকাতি করেনা, মানুষ জবাই করেনা, মানসিক রোগীর মত যে সব সিম্পটম থাকা উচিত সেসব নেই। আর আট দশটা মানুষের মতই তাদের চলাফিরা। তারা তাদের বেডরুমে যা ইচ্ছা তা করুক কিন্তু বাহিরে তারা আমাদের মতই সামাজিক, অনুভূতিপ্রবণ চিরাচরিত মানুষ! তাদের ভাল খারাপ তাদের সেক্সুয়াল প্রিফারেন্স দ্বারা কোনভাবেই জাজ করা উচিত না! ৯ বছরের শিশুর বিয়ে আমরা সাপোর্ট করি, কচি যোনিতে বুড়োর শিশ্ন আমাদের কাছে খুব হালাল কিন্তু প্রাপ্তবয়্স্ক মানুষ কারও কোন অর্থনৈতিক, যৌন ক্ষতি না করে সম্মতির ভিত্তিতে আর সবচেয়ে বড় কথা মিউচুয়াল আবেগের মাধ্যমে মিলিত হবে এটা কেন স্বাভাবিক নয়! আমরা যারা স্ট্রেইট তাদের কাছে ব্যাপারটা অবশ্যই আন ইজি কিন্তু কখনই ঘৃণার যেন না হয়। আন্কম্ফোর্ট এবং ঘৃণা দুটা সেইম না। তাই আনকম্ফোর্ট ব্যাপারটা লাগলেও আমি তাদের ভালবাসি , ঘৃণা তো নয়ই বরং আগ্রহ অনুভব করি … যদি তাদের সাথে মিশার সুযোগ পেতাম তাহলে আমার আগ্রহ আর কাজ করতনা আর আনকম্ফোর্ট আর কাজ করতনা। তাদের সাথে মিশিনা বলেই, তাদের অস্পৃশ্য করে রেখেছি বলেই ভয় টা আরও বেশি করে আমাদের ভীত করে রেখেছে।

এবার আরেকটি মূল কথায় আসি… আমি রেগুলার পাঠক এখানকার। একবার ভুলে একটি সমকামি গ্রুপে এড হয়েছিলাম । কারণ নামটা বিভ্রান্তিকর ছিল… ওখানে এড হবার পর হাসব না কাঁদব বুঝতে পারিনা কারণ ছেলেগুলার মাঝে দুটা দল, একদল সেক্স ছাড়া আর কিছু খুজেনা, আর একদল হতাশায় মরে কারণ বেশিরভাগ শুধু সেক্স করার জন্য গ্রুপে এড হয়। মাঝে মাঝে এই সমাজ টাকে দোষ দেই আমি কারন তাদের বর্জন এর কারণে

মানুষ ব্যাপারটাকে মিনিমাল সেক্স ফরম্যাটে নিয়ে এসেছে…  এখন আমি আমার নিজের ব্যাপারে কিছু বলতে চাই… আমি স্ট্রেইট, কিন্তু সমকামী ভাই বোনদের হাহাকার আমাকেও কাঁদায় … আমাকেও অসহায় করে। মাঝে মাঝে মনে হয় কি এক কেইজড একাকিত্বে তাদের মুখ চেপে নিজের আদিম এবং একই সাথে সহজাত, প্রেমিক দিকটি রিপ্রেস করতে হচ্ছে। একটা রোলে অভিনয় করতে হচ্ছে … আমি ইচ্ছা হয় এই পেজ এর কাউকে কাউকে নক দেই, খোঁজ নেই কিন্তু আমি থেমে যাই কিছু জটিল চিন্তার কারনে, আমি তাদের সঙ্গ দিতে চেয়েও থেমে যাই কারণ – তারা হয়ত আমাকে পছন্দ করে বসতে পারে, আমার উপর ইমোশনালি ডিপেন্ডেন্ট হয়ে পড়তে পারে, আমি স্ট্রেইট বলে (যদি কেউ পছন্দ করে আমায়) সে যদি উপরে বর্ণিত একাকিত্বে ভুগে… তাই ভয় পাই… আমি কাউকে কষ্ট দিতে চাইনা… এমনকি কোন ছেলে আমাকে পছন্দ করুক এসব  আমি ঘৃণা করি… ( আমি a s e x u a l না)  কারণ যাকে পছন্দ করবনা সে যদি রিজেক্ট হয়ে মনে কষ্ট পায়। কারণ আজ হোক কাল হোক যে মানুষটি সহানূভূতিতে আপনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে কিংবা   শত জনমের না বলা কষ্টের কথা শুনবে, তাকে সেটাই বলবেন যেটা অন্য কাউকে বলা যায় নাহ!

 সেখানে আকৃষ্ট হবার চান্স অনেক! আমি নিজেকে ধিক্কার দেই কারণ এই সেইম রিজনটির জন্য একজন বিবাহিত বা মানুষের প্রতি আমি আকৃষ্ট হয়েছি… কিন্তু সামাজিকতার কারনে কঠিনভাবে দমন করেছি…… নিজের কিংবা অন্যের প্রত্যাখ্যাত হবার কষ্ট আমি একেবারেই সইতে পারিনা!  আজ থেকে ৬ বছর আগে এক সনা তন ধর্মের ছেলে আমাকে ( আমি মুসলিম)  প্রত্যাখ্যানের রাম রাজ্য দেখিয়েছে…

আমি চাইনা কারও কাছে কষ্ট পাইতে , চাইনা কাউকে কষ্ট দিতে… তাই আমার না মেশার প্রতি সন্দেহ কারও কাছে হাস্যকর লাগলেও সেটার যথেষ্ট ইমোশনাল ভ্যালু আছে।

 মানুষের পাশে দাঁড়াতে ভাল লাগে কিন্ত ভয় পাই এই কারণগুলা র জন্য…………

যারা পরিবারের সাথে মানাতে সমস্যা হচ্ছে তারা  নিজের পায়ে দাঁড়ান, অনার্স প্রথম বর্ষে আমারও এমন মনে হত ৪ টা বছর কষ্ট করে পড়াশুনা শেষ করেন। আর অভিনয় করতে শিখেন যারা আপনার সহজাত প্রবৃত্তি কে অস্বীকার করে শুধু এই ৪ টা বছরের জন্য… ‘টাকাই সব’  এ কথাটা সবসময়  সত্য না হলেও কখনো কখনো সাময়িক একটা সময়  অতিক্রান্ত হবার জন্য এটা খুব সত্য!

দরকার হয় একা থাকুন কিন্ত ফ্রি  S E x এর মেন্টালিটির মানুষজনদের পরিহার করুন সেটা যে জেন্ডারই হোক… কারণ এতে নারীর ভূমিকা পালন কারী জেন্ডারটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়… হোক সেটা অর্থনৈতিক ভাবে আর মানসিক ভাবে … বাহিরের দেশে ধরেন আমেরিকায় হয়ত আপনাকে গে হিসাবে মেনে নিয়ে  নাচানাচি করে উদযাপন করবে কিন্তু তাদের সোশাল সিকিউরিটি, হ্যান বীমা, ত্যান মর্টগেজ এটা সেটা… সেখানে দেখার কেউ নাই কিন্ত উদযাপন করার আছে অনেকেই। তাই কষ্ট করুন কিছু সময়, এদেশে একটু নিজের মত করে থাকতে অনেক টাকা পয়সা লাগেনা…

Blue is the warmest color – এই মুভিটা দেখার রিকমেন্ডেশন রইল…

Best of luck….  <3

Source: BAH ( Bangladesh Against Homophobia)

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.