
কথায় কথায় বউকে একবার বলে ফেলসি, “ডিএইচএল করে কুরিয়ার পাঠাতে কত টাকা লাগে আইডিয়া আছে তোমার? কেজিতে আড়াই হাজার!”
সে সন্দিহান গলায় বললো, “তোমার এত আইডিয়া হইলো কইত্থেকে শুনি? কাকে পাঠাইসো বিদেশে কুরিয়ার? প্রাক্তন প্রেমিকাকে?”
বউয়ের কাছে মিথ্যা বলতে পারি না। কারণ মিথ্যা বললেই ধরা খেয়ে যাই। কাঁচুমাচু কণ্ঠে উত্তর দিলাম, “ওই আর কী!”
বউ সহজ মেয়ে না। ফোনের ওইপাশে স্পষ্ট ঝাঁঝ টের পেলাম, “তা কী কী পাঠাইসিলেন শুনি একটু?”
ফিরিস্তি দেয়া লাগলো। শুনে সে বললো, “হুঁ!”
নিজেকে অপরাধী লাগলো। আয়োজন করে মেয়েটাকে কুরিয়ারে কিছু পাঠানো হয়েছে অনেকদিন আগে। বললাম, “গরীব হয়ে গেসি তো, তোমাকে কিছু পাঠাতে পারি না। মাফ করে দিও প্লিজ।”
ঝগড়াটে, অল্পতে গাল ফোলানো, অভিমানী মেয়েটা আমাকে অবাক করে দিয়ে বললো, “প্রেমিকাদের জন্য এইসব করা লাগে। আমি তো তোমার প্রেমিকা না। বলো, আমার সাথে তুমি কি শুধু প্রেম করো?”
আমি বললাম, “না। তোমার সাথে আমি ঘর করি, সংসার করি।”
বউ বললো, “যার সাথে সংসার, তার জন্য আয়োজন করে কিছু করা লাগে না।”
প্রেমিকার জন্য আবেগ ছিলো। বউয়ের জন্য আবেগের সাথে অধিকারবোধ আছে। পাগলামির সাথে পরিপক্বতা আছে। ভালো থাকার দাবীর সাথে ভালো রাখার দায়িত্বটুকু আছে।
বউ ডাক্তার। কালকে বউকে কুরিয়ার পাঠাবো। ডিএইচএলের দশভাগের একভাগ খরচে সাদা দু’টুকরো কাপড় যাবে তার ঠিকানায়, লোকে সেই কাপড়কে পিপিই বলে জানে। কোন একদিন এই দুর্দিন পার হবে। সেদিন সাদা পিপিইর বদলে লাল শাড়ি পাঠাবো। দুজনে শাড়ি পরে হাত ধরাধরি করে হাঁটবো এই শহরের রাজপথে। পিপিই বা শাড়িতে, প্রেমে বা অপ্রেমে, নৈকট্যে বা দূরত্বে, তাকে জড়িয়ে থাকা মানুষটা যেন আজীবন এই আমিই থাকি।
Source: BAH ( Bangladesh Against Homophobia)