
শঙ্খদীপ মুসাফিরানা
বিশ্বায়নের যুগে দাঁড়িয়ে বিকল্প লিঙ্গ-পরিচয় ও প্রান্তিক যৌনতার অন্দোলন যা মূলত LGBTQ+ Movement বা Queer Movement নামে প্রসিদ্ধ তা সম্বন্ধে আমরা সবাই কম বেশি অবগত। অনেকেই এই আন্দোলনকে সমর্থন করেন এই গোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে, কেউ সমর্থক হিসাবে। অনেকেই সমর্থন করেন না। সমর্থন না করার কারণ বিভিন্ন। কখনও তা ধর্ম, কখনও তা ‘সংস্কৃতি’, কখনও (ছদ্ম-)বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী যে অনুদপাদনশীল যৌনতাকে সমর্থন করলে সৃষ্টি ধ্বংস হয়ে যাবে ইত্যাদি (এবং তাই সমকামিতাসহ অন্যান্য বিকল্প যৌনতা বা লিঙ্গ-পরিচয়ের কপালে বিভিন্ন বিশেষণ জোটে, যেমনঃ ‘অপ্রাকৃতিক’, ‘অবৈজ্ঞানিক’ ইত্যাদি)। শেষ প্রকার লোকেরা দাবী করেন তারা বৈজ্ঞানিক মনোভাবাপন্ন, কিন্তু তাদের চিন্তায় বিজ্ঞানচেতনার অভাব ক্ষণে ক্ষণে অনুভূত হয়। কারণ প্রকৃতি কি বা প্রকৃতি কতখানি বা প্রকৃতির যে বৃহত্তর অর্থ, তার মধ্যে আদৌ ‘অপ্রাকৃতিক’ বলে কিছু সম্ভব কিনা, তা তারা তলিয়ে ভেবে দেখেন না। আর, যদি বিজ্ঞান-বোধের কথায় আসা যায়, তাহলে বিজ্ঞানের নিয়ম মেনেই কাউকে অবৈজ্ঞানিক তকমা আঁটতে হলে তাকে একটি নির্দিষ্ট পথ অবলম্বন করে তাকে ‘অবৈজ্ঞানিক’ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হয়। সেটা তারা কতটা করেন, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে বৈকি।
পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যান তাঁর নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির জবাবী ভাষণে বলেছিলেন ‘ইতিহাস, বিজ্ঞান ও সাংবাদিকতা যতটা না একটা স্টেটমেন্ট, তার থেকে অনেক বেশি একটা প্রক্রিয়া’। আমরা ‘অমুক অবৈজ্ঞানিক’ বলে বিবৃতি দিয়ে দি বটে, কিন্ত তা ‘কেন অবৈজ্ঞানিক’ তার জবাব অনেকাংশেই দি’না। যদি সেই বিবৃতি আমাদের ধর্ম বা সংস্কৃতির ধ্বজাধারী স্বযাচিত পন্ডিতদের দ্বারা স্বীকৃত হয়, তাহলে সেই ‘কেন অবৈজ্ঞানিক’- এই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তাও অনুভূত হয় না। অনেকসময়, ছাপোষা আমরা সাহসও সঞ্চয় করে উঠতে পারি না তাদের সেই প্রশ্ন করার। অথচ প্রফেসর ফাইনম্যান বলছেন সেই ‘বিবৃতি’টি আসলে বিজ্ঞানের ‘ফিনিসড্ প্রোডাক্ট’, বিজ্ঞান নয়। বিজ্ঞান হল সেই প্রোডাক্টে (বা বিবৃতিতে বা বিবৃতির সত্যাসত্যে) উপনীত হওয়ার প্রক্রিয়াটা। প্রক্রিয়ার সাফল্য ব্যর্থতা সবটাই বিজ্ঞান শিক্ষার বা বিজ্ঞান বোধের অঙ্গ।
বিজ্ঞান সমকামিতা বা অন্যান্য অনুদপাদনশীল যৌনতা সম্বন্ধে কি বলছে, অর্থাৎ অভিযোজন ও অভিব্যক্তি নিয়ে ডারউইনের যে বক্তব্য সেই অবকাঠামোয় কিভাবে অনুদপাদনশীল যৌনতাকেও অংশীদার করার চেষ্টা হচ্ছে, সেই নিয়ে অন্য প্রবন্ধে আলোচনা করা যাবে। আজ এই প্রবন্ধে, যে ‘বিজ্ঞান’-সামাজিক চালচিত্রে দাঁড়িয়ে লোকজন এটিকে ‘অবৈজ্ঞানিক’ বা ‘অপ্রাকৃতিক’ বলেন, তার সীমাবদ্ধতা বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা যারা এই গোষ্ঠীভুক্ত তাদের এই আন্দোলনকে সমর্থন করার পেছনে স্বাভাবিক স্বার্থ রয়েছে। আমরা অনেকসময়েই বলি এটা আমাদের চয়েস না, ডেস্টিনি। অনেকে এও ভাবেন এবং বলেন যদি নিজের যৌনতা বদলানো যেত তারা হয়ত সেই পথেই হাঁটতেন। কারণ আমাদের তথাকথিত সংস্কৃতি, ধর্মবোধ ও ধর্মভীতি আমাদের অনেককেই এক অদ্ভুত অনুশোচনার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এটা ‘ভালো না খারাপ’, ‘নৈতিক-না-অনৈতিক’ এই দোলাচলে আমরা ভুগতে থাকি। অন্যদিকে, যারা এই গোষ্ঠীভুক্ত না হয়েও এই আন্দোলনকে সমর্থন করেন, সমর্থন করেন এই মানুষদের নিজস্ব দাবিদাওয়াগুলোকে, বেশিরভাগ সময়ই তাদের এই সমর্থনের কারণও মানবিক। মানবিকতাই আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে নৈতিকতা। মানবিক-নৈতিকতা প্রয়োজন অবশ্যই। কিন্তু, সেই নৈতিকতাকে একটি শক্ত বিজ্ঞানভিত্তিক মননে প্রতিষ্ঠিত করাও ততটাই প্রয়োজন, যাতে ‘নৈতিকতা’কে মানুসিক বলে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে, ‘প্রকৃতি’ যুক্তিবলে (কারণ প্রকৃতি মানুষের থেকে বৃহত্তর ও মৌলিক), একে ‘অবৈজ্ঞানিক’ বা ‘অপ্রাকৃতিক’ বলে অপাংক্তেয় করার স্পর্ধা কেউ না দেখাতে পারে।
থিয়োরি সবসময় প্রেডিক্ট করে। যে থিয়োরির প্রেডিকশন ক্ষমতা যত বেশি তার গ্রহণযোগ্যতাও তত বেশি। বিজ্ঞানে যখন থিয়োরি লেখা হয়, তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ‘প্রোপোজিশন’। ধারেকাছে বাংলা করলে হয় বিবৃতি বা দাবী। যে সে বিবৃতি নয়, সংশ্লিষ্ট গবেষণার ফল বা গবেষণার সাম্ভাব্য ফলের পূর্বাভাসস্বরূপ হাইপোথিসিসের যে বয়ান তাই-ই হল প্রোপোজিশন। এই বিবৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট হল এই যে, বিবৃতি যদি কতগুলো অংশে বিভক্ত হয় তাহলে সেই অংশ যেন একে অপরের সাথে স্ববিরোধীতায় অবস্থান না করে। করলে, পুরো বিবৃতি বা প্রপোজিশনটিই ভুল। যেমনঃ আমি বললাম ‘আমি বাংলা, ইংরাজি, হিন্দি, চাইনিজ, থাই, কোরিয়ান ভাষা জানি, অর্থাৎ আমি তিনটেরর বেশি ভাষা জানি না’। এই বাক্যটিকে যদি একটি সম্পূর্ণ বিবৃতি ধরা হয় এবং ‘অর্থাৎ’ এই সংযুক্তিটির আগের ও পরের দুটি বাক্যকে যদি এই বিবৃতির দুটি বিবৃতাংশ ধরা হয়, তাহলে তারা স্ববিরোধীতায় অবস্থান করছে। ফলে পুরো বিবৃতিটিই ভুল।
নারী-পুরুষের শারিরীক-মানসিক লৈঙ্গিক সম্পর্কও এরকম একটা প্রোপোজিশন। একটা দাবী। দাবীটা কি? ‘শিশ্ন নিয়ে জন্মালেই সে ছেলে, যোনি নিয়ে জন্মালেই সে মেয়ে’। এটাই প্রাথমিক লিঙ্গ-শর্ত। বাংলা ভাষার শব্দভান্ডারের দিকে তাকালে এর একটা আভাস পাওয়া যাবে। আমাদের বাংলা ভাষায় শারীরিক লিঙ্গ বা (biological) Sex এবং সামাজিক লিঙ্গের বা gender-র জন্য একটাই পরিভাষা নির্দিষ্ট হয়েছেঃ ‘লিঙ্গ’। তাই নামকরণ থেকে জামা কেনা, খেলনা পছন্দ থেকে সাজগোজ সবেতে ছোটো থেকেই পুরদস্তুর এই দ্বিত্ব (binary) ভাব চোখে পড়ে।
এখানে সমস্যা হল, যে পরিচয়টির ভিত্তি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত স্তরে ব্যক্তির নিজস্ব মানসিক লিঙ্গ-অভিমুখতার (gender inclination) দ্বারা নির্ধারিত হওয়ার কথা ছিল সেটা হয়ে গেলো একটা সামাজিক রীতি। সেখানে যেন সমাজের সকলের বক্তব্যের গুরুত্ব রয়েছে, এক ব্যক্তি হিসাবে ব্যক্তি-মানুষটি বাদে। তাই বলা হয়, জেন্ডার হল সামাজিকভাবে আমাদের উপর যে লিঙ্গ-পরিচয় (চাপিয়ে) দেওয়া হয়েছে। সমস্যা বাধে যদি বড় হতে হতে সেই বাচ্চাটি সমাজের চাপিয়ে দেওয়া এই শারীরিক-মানসিক সম্পর্ক তত্ত্বটি মানতে না পারেন। না মানার কারণ একটাইঃ শারীরিক লিঙ্গ এবং সামাজিক লিঙ্গ বা লিঙ্গ পরিচয়ের যে নিত্য সম্পর্কের কথা সমাজ আমাদের শিখিয়ে এসেছে, সে নিজে সেটা অনুভব করতে পারছেন না। তিনি মনস্তাত্ত্বিকভাবে, তার ওপর সামাজিকভাবে চাপিয়ে দেওয়া লিঙ্গ-পরিচয়ের নিরিখে সমাজের থেকে আশা রাখা অভিব্যক্তির সাথে নিজের মনস্তাত্ত্বিক-সামাজিক অভিব্যক্তির ইচ্ছাকে একাত্ম করতে পারছে না। তারা প্রতিবাদ করছেন বা তাদের অজান্তেই (কখনো বা জ্ঞানত) তাদের ব্যবহারিক জীবনেও এই দ্বন্দ্বের ছাপ পড়ছে। সমাজের বেঁধে দেওয়া লিঙ্গ-শর্তকে এরা অতিক্রম করছেন বা transcends করছেন তাই তাদের বলা হয় ট্রান্সজেন্ডার।
নারী-পুরুষের শারিরীক-মানসিক দাবীর মতই আরেকটি দাবীঃ যেখানে উভয় লিঙ্গের জন্য কিছু আদর্শ ব্যবহার বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেটা সাজগোজ থেকে কথাবলা, হাঁটাচলা থেকে বসা, কার কোনটা কাজ থেকে কে কাকে ভালোবাসবে, কে কার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে সবেতেই বিস্তৃত। কিন্তু এই ‘আদর্শ ব্যবহার পঞ্জিটি’ অত্যন্ত অস্বচ্ছ, আমাদের মাথায় ছাড়া এটা কোথাও লেখা নেই। ফলে যুগে যুগে যারাই সমাজের মূলস্রোতের বিপরীতে হাঁটার চেষ্টা করেছেন, বা ‘চলে আসা’ ‘মেনে নেওয়া’ রীতি বা প্রথার সাথে নিজের লগ্নতা দেখাতে পারেননি, তাদের ওপর সমাজের শক্তিকেন্দ্রে বসে থাকা পান্ডারা তাদের মর্জি মত জোরজুলুম চালিয়ে এসেছে (আসছে), দেশ কাল ধর্ম অভেদে।
কিন্তু, বিজ্ঞানেও অনেকসময় থিয়োরির প্রোপোজিশনে সীমাবদ্ধতা থাকে। অর্থাৎ থিয়োরি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও বোধগম্য ঘটনার বাইরেও অনেক ঘটনা থাকে যা সেই থিয়োরি ব্যাখ্যা করতে বা প্রেডিক্ট করতে অপারগ। যাদের বলা হয় ব্যতিক্রম। ‘কেন এই ব্যতিক্রম?’ সেই নিয়েও গবেষণা হয়। চেষ্টা করা হয় কি’করে আগের থিয়োরির প্রোপোজিশনের গাঁটটিকে আলগা করে বা নতুনভাবে বিবৃত করে আরো বেশি সংখ্যক প্রাকৃতিক ঘটনাবলীর ব্যাখ্যাস্বরূপ সেই থিয়োরিটিকে প্রস্তুত করা যায়। যাতে ব্যতিক্রমের সংখ্যা কমে। যে থিয়োরি যত ভালোভাবে যত বেশি সংখ্যক প্রাকৃতিক ঘটনাবলীকে ব্যাখা করতে সক্ষম, সেই থিয়োরি তত বেশি ব্যবহারিক। ‘ব্যতিক্রম’কে বিজ্ঞানে ‘অবৈজ্ঞানিক’ বলা হয় না। বরং, যে থিয়োরি সাপেক্ষে সেটি ‘ব্যক্তিক্রম’, সেই থিয়োরিটিকেই সীমাবদ্ধ ধরে নিয়ে সেটিকে উন্নত ও যুক্তিগ্রাহ্যভাবে উদার করার চেষ্টা করা হয়।
যে কোনো থিয়োরির একটি ব্যতিক্রমই সেই থিয়োরির সীমাবদ্ধতা বোঝাতে যথেষ্ট। অতএব, সমাজে উপস্থিত ট্রান্সজেন্ডার মানুষরা যেমন একদিকে প্রমাণ করেন সমাজে প্রচলিত শারীরিক লিঙ্গ ও মানসিক লিঙ্গের যে অলঙ্ঘনীয় গাঁটছড়ার প্রপোজিশন তা সীমাবদ্ধ, সেরকমই অন্যদিকে সমকামীরা , যারা সম লিঙ্গের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করেন (যারা উভয় লিঙ্গের প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করেন, তারাও), তারা প্রমাণ করেন প্রাথমিক লিঙ্গ-শর্তের যে স্বযাচিত নিত্যতা, তা প্রকৃত পক্ষে একটি ছলনা, অন্যান্য নিদানের মতই একটি নিদান।
তাই, প্রশ্ন উঠেছিল শারীরিক ও মানসিক গাঁটছড়ার প্রোপোজিশনের ব্যবহারিকতা নিয়ে। এটির মীমাংশা স্বরূপ বলা হল, আদতে শারীরিক লিঙ্গ ও মানসিক লিঙ্গ (সামাজিক লিঙ্গও) সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র দুটো সিস্টেম। একই কথা প্রযোজ্য যৌনাভিমুখতা বা সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশনের ক্ষেত্রেও (এটিও প্রাথমিক লিঙ্গ-শর্তের মধ্যে পড়ে)। তাই বলে এই নয় যে এই দুটি সিস্টেমের মধ্যে কোনো সম্পর্ক বা correlation নেই। বরং correlationটিই ঐতিহাসিকভাবে এতদিন ধরে আসতে আসতে তৈরি করা হয়েছে। যাকে আজকের ভাষায় বলতে পারি normativity। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আদর্শ লিঙ্গের যে ধারনা, সেটা তৈরিই হয়েছে জৈবিক শরীরের ব্যবহারিকতার ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখার জন্য। কিন্তু সাধারণ মানুষ তো এত বিজ্ঞান বোঝেন না। ফলে আমাদের থেকে আলাদা যারা, যারা পূর্বোল্লিখিত correlationটি দেখাতে পাচ্ছেন না তাদেরকে ‘আলাদা’ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের প্রত্যেকেরই সমাজে ‘একঘরে’ হয়ে যাওয়ার ভয় আছে। তাই আমরাও নয় নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছি, অত্যাচার মেনে নিয়েছি, নিজেকে বোঝাতে শুরু করেছি ‘আমারই ভুল’, ‘আমিই আলাদা’, পাপীতাপী ইত্যাদি ইত্যাদি। যখন আসতে আসতে বুঝতে শিখেছি আমি একা নই, আমার মত আমার আশেপাশেই বহু ‘আলাদা’ মানুষজন আছেন, আর এই আলাদা মানুষজন শুধু আমার ধরাছোঁয়া গন্ডির মধ্যে নয়, বাইরের দেশেও সারা পৃথিবীব্যাপী রয়েছে তাতে আমরা প্রবোধ পেয়েছি বটে, কিন্তু পৃথিবীর সব জায়গাতেই ব্রাত্যতার নিদর্শন আমাদের নিজেদের অস্তিত্ব সম্পর্কে আশ্বস্ত করতে পারে নি। আজ পৃথিবীর নানা প্রান্তে ক্যুইয়ার আন্দোলন চলছে। কিছু দেশে তা স্বীকৃত হয়েছে। অনেক দেশই বাকী। যে দেশগুলিতে এটি স্বীকৃতি পেয়েছে সেখানেও রাতারাতি সবাই এই আলাদা মানুষদের মেনে নিয়েছেন তা নয়। আইনী স্বীকৃতির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কিন্তু সামাজিক (আত্মিকও বটে) গ্রহণযোগ্যতার গুরুত্ব অস্বীকার্য নয়। আমাদের এই আন্দোলনের লক্ষ্য নিজেদেরকে শুধুমাত্র মানবিকতার খাতিরে গ্রহণযোগ্য করে তোলা নয়, নিজেদের হকের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া। তাই আন্দোলনকে মানবিকতার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে বিজ্ঞানের শক্ত ভীতের উপর।