
সজল আহসান
চারিদিকে মধ্যরাতের নিস্তব্ধ নীরবতা,
ঘুটঘুটে কালো রঙের পর্দা শরীরে জড়িয়েছে কৃষ্ণপক্ষের রাত।
আঁধারের কারাগারে বন্দি বুক পকেটের মাঝ থেকে ভেসে আসা
আমার নিঃশ্বাসটা ধীরে ধীরে গাঢ় হয়ে যাচ্ছে,
বেদনাগুলো আঁধারের সাথে পাল্লা দিয়ে উপচে পড়ছে
আমার সর্বাঙ্গের শিরায় শিরায়।
স্মৃতিগুলো মিছিল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সম্মুখপানে,
দীর্ঘশ্বাস থেকে বেরিয়ে আসছে মনপোড়া কষ্টের আর্তনাদ,
দুঃখের সাথে সুখগুলো ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায়
আমার অনুভূতিকে গ্রাস করে নিচ্ছে বুঝতে পারছি।
নিষ্ঠুর বাস্তবতারা পাটকেল ছুড়ে উত্তাল করে তুলছে
আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছেগুলোকে,
চোখের সামনে আমার সঞ্চিত স্বপ্নগুলো
আমাকেই আঙ্গুল দেখিয়ে দেহ ত্যাগ করছে।
দুচোখে যেন ধেয়ে আসছে ঘোর অমানিশা,
পৃথিবীর কোন আওয়াজ আমার শ্রবণ ইন্দ্রিয় ভেদ করতে পারছে না।
আঙ্গুলের ডগা থেকে ছুটে যাচ্ছে জীবনের সময়। টের পাচ্ছি
আস্তে আস্তে আমার দেহে, অনুভূতিতে অসারতা নেমে আসছে,
বুকের উপর যেন মস্ত পাথরের চাপায়
ধীরে ধীরে নিঃশ্বাসটা ছোট হয়ে যাচ্ছে।
অসহ্য বড্ড অসহ্য এ যন্ত্রনা,
গলার ভেতরটা প্রচন্ড তৃষ্ণায় কেমন যেন চর হয়ে যাচ্ছে।
মৃত্যুপ্রায় নিঃশ্বাসটাকে ফিরে পেতে
আমি প্রাণপণ চেষ্টায় চিৎকার করে যাচ্ছি,
মরীচিকার মত আশাটাকে আঁকড়ে ধরে
বেঁচে থাকার আকুতিতে কাতরাচ্ছে আমার দেহতল,
কিন্তু আমার গলাফাটা চিৎকার কেউ শোনে না,
কেউ বোঝে না এ অসহ্য যন্ত্রনা।
এক ঝলক আলোর মত পৃথিবী আমার থেকে বিদায় নিচ্ছে,
আমিও চলে যাচ্ছি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে না ফেরার দেশে।
উৎস: অন্যভুবন