প্রেম অথবা পিছুটান (শেষাংশ)

সজল আহসান

২.

আবীর হিন্দু । আবীরের সাথে আমার সম্পর্ক শুরু হয় এক স্বরসতী পুজায় যখন আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ি। সেবার ভার্সিটিতে প্রথমবার স্বরসতী পুজা উৎযাপন দেখতে গিয়েছিলাম। আর আমার মত অনেক মুসলমানকেও দৃষ্টিবদ্ধ করেছিলাম । বিদ্যার দেবী বলে কথা, আসতে তো হবেই। একটু ঘোরাঘুরি করার পর ঢোলের আওয়াজ শুনে পুজার স্থানে গিয়ে দেখি হিন্দু ছাত্রদের কপালে ফোঁটা দেয়া হচ্ছে। আমি দাঁড়িয়ে থেকে ফোঁটা দেয়া দেখছি।

এরপর হঠাৎ আবীরকে ফোঁটা নেয়ার জন্য যজ্ঞের স্থানে বসতে দেখে খানিকটা বিস্মিত হলাম। আবীরকে এতদিন মুসলমান হিসেবেই জেনেছি। কিন্তু এই দৃশ্যটাকে কিছুতেই নিজের বিশ্বাসযোগ্য স্থানে ঠাঁই দিতে পারছিলামনা। আবীরকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম সেদিন থেকেই ওর প্রতি একটা অচেনা দুর্বলতা অনুভব করতাম। এরপর কোন উপায়ে ওর নাম, কোন সাবজেক্টে পড়ে এসবের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি কারো কাছ থেকে আয়ত্ত করেছিলাম। কিন্তু সাহস হয়নি তার সাথে মুখোমুখি আলাপ করার পাছে আমার দুর্বলতা তার কাছে ধরা পড়ে এই ভয়ে। তবে আজ আর নিজেকে সামলিয়ে রাখতে পারলাম না। আবীর মন্ডব থেকে বের হবার সাথে সাথে তার পিছু হাঁটতে হাঁটতে তাকে ডাকলাম। আবীর ডাক শুনে থেমে বলল,

: কিছু বলবে?

: আপনার সাথে একটু কথা বলতে পারি?

: হুম বল

: আপনি কি হিন্দু?

: হ্যা অবশ্যই, কেন?

: না মানে… আপনাকে দেখে বোঝা যায়না। আমি তো এতদিন আপনাকে মুসলমান ভেবেছিলাম এবং এখনোও ভাবি।

: হা হা হা। তোমার মত এই ভুলটা অনেকেই করে।

: আপনি মুসলমান হলেই ভাল হত।

: হুম আমারও তাই মনে হয়।

: তাহলে আমি আপনাকে এখন থেকে আবীর ইসলাম বলে ডাকব।

: হা হা, ওকে ডাকিও।

এভাবেই একটি অনাকাঙ্খিত আলাপন আবীর আর আমার সম্পর্ক স্থাপনের প্রথম সাক্ষী হিসেবে সহায়ক ছিল।

সেদিন আবীরের সঙ্গে প্রসাদ খাওয়া,ভার্সিটির বকুল তলায় বসে আড্ডা দেয়া তারপর আমাদের নাম্বার বিনিময় এবং সবশেষে একরাশ ভাললাগা নিয়ে বিদায় নেয়া এর আমার কাছে সবকিছু যেন মেঘ না চাইতে জলের মত মনে হতে লাগল।

ভাগ্যক্রমে দুজনের ভালবাসায় দুচোখ বুজে দুজনেই প্রেমের নদীতে হাবুডুবু খেতে লাগল। এমন একটা সকাল ছিল না যে সকালে আমি আবীরকে ভাবিনি। এমন একটা রাত ছিল না যে রাতে ঘুমাবার আগে আবীর আমাকে আই লাভ ইউ কথাটা বলেনি। দুজনে একসঙ্গে সপিং করা, একরঙের টিশার্ট, প্যান্ট কেনা, মাসে একটা হলেও সিনেমা হলে মুভি দেখা সবই ছিল আমাদের অন্ধ ভালবাসার প্রাণ।

আবীর ওর মামার বাসায় থেকে লেখাপড়া করত। মাঝে মাঝে আমাকেও নিয়ে যেত তার মামার বাসায়। সেও আসত আমাদের বাসায়। তবে আমাদের বাসায় সে সময়ে অসময়ে ছুটে আসত। রাস্তায় কোন ভাল খাবার দেখলেই আমার কাছে নিয়ে এসে বলত, তোমাকে ছাড়া একা খেতে ভাল লাগছিল না তাই নিয়ে এলাম। ভরা পূর্ণিমার রাত গুলোতে আবীর অনেক রাতে আমাদের বাসায় আসত মোঘলাই পারাটা কিংবা চানাচুর নিয়ে আমার সাথে জোসনা বিলাস করবে বলে। আমার হাত ধরে সে এক ছুট দিয়ে খোলা কোন মাঠে গিয়ে আমাকে বসিয়ে আমার কোলে মাথা রেখে বলত, খাইয়ে দাও আমায়। আমি আবীরকে খাইয়ে দিতাম। সেও আমাকে খাইয়ে দিত। কখনো আমার মুখে পারাটা ডুকিয়ে দিয়ে অর্ধেক পারাটা সে আমার মুখ থেকে তার মুখে নিয়ে নিত। কি দুর্গাপুজা কি ঈদ সব উৎসবেই দুজনের সঙ্গে দুজন আটার মত লেগে থেকে ঘুরেছি,খেয়েছি,মজা করেছি। সময়ের সাথে এভাবেই পার হল আমাদের ছন্দময় ভালবাসার দুই বছর।

এরপর একদিন, ভার্সিটির একবন্ধুর কাছে আবীরের মামার বাড়ির একটু গোলাযোগের কথা শুনে আমি সেখানে ছুটে গিয়ে ঘটনা জানতে পেরে আকাশ যেন আমার বুকে ভেঙ্গে পড়ল।

আবীরের সঙ্গে তার মামা বাড়ির পাশের বাড়ির এক অন্য জাতের মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক জানাজানি হবার কারনেই এই ঝগড়া বেঁধেছে। আবীর ক্ষত্রীয়, আর মেয়েটি ব্রাহ্মনের মেয়ে। মেয়েপক্ষ আবীরকে মারার জন্য ঐ বাড়ি থেকে হুমকি দিচ্ছে। আর আবীরকে তার মামী ঘরে বন্দী করে রেখেছে। আমি আবীরের রুমে ঢুকতেই আবীর মাথা নিচু করে রইল। ওকে দেখেই আমার ভেতরটা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। বুকভাঙ্গা কান্না চোখের কোণে এসে জমে আছে। খুব কষ্ট হচ্ছিল তখন কথা বলতে তবুও বললাম..

: আবীর তুমি এটা কিভাবে করতে পারলে, আমরা এত দিন ধরে একসঙ্গে ছিলাম তবুও আমায় বললেনা, তুমি একটা মেয়েকে ভালবাস?

: বিশ্বাস কর আকাশ আমি তোমাকেও ভালবাসি।

: অনেক বিশ্বাস করলাম। আর কি বিশ্বাস করতে বল।সুখে থেকো , ভাল থেকো।

আবীরের দেয়া এত বড় আঘাত বড্ড অসহনীয় পর্যায়ে উপনীত হতে লাগল দিন দিন। বন্ধ করে দিলাম আবীরের সাথে সব ধরনের যোগাযোগ। আবীরও আমার কোন প্রকার খবর নিল না। পরে একদিন শুনলাম আবীর ঐ মেয়েটির পিছু ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু এও শুনেছিলাম আবীরের সাথে মেয়েটির গোপনে সাক্ষাত হয়। এসব নানা চিন্তায়, অসহ্য যন্ত্রনায় কত রাত কেঁদে কেঁদে কাটিয়েছি, কত রাতে জেগে জেগে অতিবাহিত করেছি তা একমাত্র রাতটাই জানে। অনেকেই আমার চোখের নিচে গাঢ় কালো দাগ বলেছিল, আমি প্রেমে ছ্যাকা খেয়েছি এজন্য আমার এরুপ হাল হয়েছিল। আবার অনেকের কাছেই বলতে শুনেছি, আমার শরীরে হয়তো কোন গোপন রোগ বাসা বেঁধে আছে, ডাক্তার দেখানো উচিত। আমি তাদের কথার জবাব দিতে পারিনি। কারণ আমার ভেতরের ব্যাথাটা যে কাউকে বলার মত নয়। এ ব্যাথাটা শুধুই আমার দহনের।

আবীরের আশায় থেকে থেকে ওর রেখে যাওয়া মনপোড়া স্মৃতি নিয়ে নিঃসঙ্গতায় কাটিয়ে দিলাম একটা বছর। অবশেষে আমার জীবনে নিলয়ের আর্বিভাব ঘটল। মুছে গেল সব বর্ণহীন স্মৃতি, সব অতীত বিরহ। আবীরের জায়গায় নিলয় প্রতিষ্ঠিত হল আমার হৃদয়ের শ্রেষ্ঠ স্থানে।

৩.

আবীর আমাকে রুমে দেখে বিছানা থেকে উঠে বসল। আমি রাগান্বিত স্বরে বললাম… : তুমি এখানে কেন, আর কার অনুমতিতে আমার রুমে প্রবেশ করেছো?

: এইটাই তো আমার রুম, তুমি যে আমার।

: তোমার এসব ফালতু কথা শোনার সময় নেই আমার। অনেক রাত হয়েছে, খুব ঘুম ধরছে আমার তুমি চলে যাও। আর কখনো আসবেনা এখানে।

: চলে যাব বলে তো আসিনি। তোমাকে ঘুমে ধরেছে তাইনা, এবার আমিও ধরব তোমাকে। বলা মাত্রই আবীর আমাকে জাপটে ধরে বিছানায় শুঁইয়ে দিল।

আবীর আমার চোখে, মুখে, ঠোঁটে অনবরত চুমার শিহরণ দিয়ে বুঝাতে চাইছে যেন সে একবছরের ভালবাসা চোকাতে ব্যস্ত। আমি ওকে সরিয়ে দেয়ার জন্য বারংবার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। আবীরের নগ্ন ভালবাসার উষ্ণতায় ১ঘন্টা পর দুজনেই ঘুমে আসক্ত হলাম।

সেই রাতে আবীর আমার কাছে ছিল। আর সেদিন থেকে আবীর আবার পূর্বের ন্যায় আমাকে ভালবাসতে শুরু করল। কিন্তু আমি দোটানায় আবদ্ধ হয়ে গেলাম। একদিকে আবীর একদিকে নিলয়। কাকে ছাড়ব কাকে ধরব তা মানিয়ে উঠতে পারছিলামনা। যখন আবীরের বাহুডোরে জড়াই তখন নিলয়ের মায়াভরা মুখটি চোখের সামনে স্পষ্ট ভেসে ওঠে। আবার যখন নিলয়কে নিয়ে ভাবি তখন আবীর যেন আমার ভাবনায় ভালবাসার দাবি তুলে ধরে। এভাবে অবিরাম মনের সাথে গোপন যুদ্ধ করতে করতে একদিন আবীরকে নিলয় আর আমার সম্পর্কের কথা জানালাম।

আবীর কথাগুলো শোনার পর আমার সাথে আর একটা কথাও বলল না। মাথা নিচু করে রইল। সন্ধ্যা হয়েছে বিধায় আমি ওকে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলাম। কিন্তু অনুরোধটা যেন ওরই জোরালো ছিল একটু একা থাকার। ওর অনরোধ রাখতে আমি ওকে একা রেখে বাড়ি চলে আসি।

এরপর রাত ১০টার পর বাড়ির সদর দরজায় টোকা শুনে দরজা খুলে আবীরকে দেখে চমকে গেলাম। তখন আবীরের চোখগুলো ফোলা আর ওকে খুব ক্লান্ত লাগছিল। আবীর দাড়িয়ে থেকে আমাকে শুধু একটা কথাই বলল, I Love you আকাশ।

আমি আবীরকে রুমে আসার জন্য করজোড় অনুরোধ করলাম। আবীর কিছুক্ষণ আমার দিকে একটানা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আমাকে বিদায় বলে চলে যেতে লাগল। আমি আবীরকে অনেকবার পিছু ডাকলাম কিন্তু সে শুনল না। একমাস পর, নিলয় আমাকে দেখার জন্য আমার কাছে আসতে ব্যাকুল হয়ে উঠল। ফোন করলেই বলত কবে যাব তোমার কাছে, কখন দেখব তোমায়?

সেদিন রাতে আমার কাছে একটা বিয়ের কার্ড চলে আসে। কৌতুহল মনে কার্ডটা খুলে চোখ ঝাঝসা হয়ে গেল আমার। আবীর এবং ঐ ব্রাহ্মনের মেয়ের বিয়ে। কার্ডটা দেখতে দেখতে কখন যে একবিন্দু জল গাল গরিয়ে কার্ডে পড়ল তার লেশমাত্র টের পেলাম না। সেই মুহূর্তে আবীরের ফোন এল। ফোন করার উদ্দেশ্য, আমি যেন নিলয়কে নিয়ে তার বিয়েতে যাই এটাই তার সর্বশেষ অনুরোধ ছিল আমার প্রতি। আমিও কথা দিলাম তাকে।

এসব কিছু গোপন রেখে বিয়ের দুদিন আগে নিলয়কে আসতে বললাম বগুড়ায়। নিলয় চলে এল। ওকে অনেকদিন পর দেখে যেন একটা অমৃত সুখ অনুভবে জেগে উঠল আমার। পরদিন, নিলয়কে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে আবীরের বাড়ির উদ্দেশ্যে রাজশাহীর বাসে উঠলাম। রাজশাহীতে পৌছে আবীরকে ফোন দিলাম। আবীর বাসস্টেশনে আসল আমাদের নিতে।

আজ আমার সামনে আমার দুই প্রেমিক। এই মুহৃর্তে আমার কিরকম অনুভূতি হচ্ছিল সেটা হয়তো ভাষায় প্রকাশ করার মত না। আবীরকে নিলয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলাম। তারপর অটোতে উঠে আবীরের বাসায় পৌছালাম আমরা। নিলয়কে এখনও জানাইনি আবীরই আমার সেই স্মৃতিমাখা অতীত, আমার ভালবাসা। আবীরের পুরো বাড়িতে বিয়ের সাজ, ঢোলের আওয়াজে মুখরিত এক আড়ম্বর পরিবেশ। আবীর আমাদের তার ঘরে বসিয়ে বাইরে গেল। এদিকে নিলয় আমার দিকে প্রশ্নসূচক ভঙ্গিতে তাকিয়ে বলল,

: বাবু এটা তো একটা হিন্দু বিয়ে বাড়ী, তুমি এখানে এলে কেন, আবীর কে হয় তোমার?

আমি একটা লম্বা শ্বাস ছেড়ে নিলয়কে সব খুলে বললাম। নিলয় আমার কথা শুনে অতি আশ্চার্যে হতবাক হয়ে থমকে গেল। সে কখনো কল্পনাও ভাবেনি যে, সত্যি সত্যি একদিন তাকে আমার অতীতের মুখোমুখি হতে হবে।

কিছুক্ষণ পর আবীর রুমে এসে আমার পাশে বসল। আমি আবীর এবং নিলয়ের মাঝখানে। কারো মুখে কোন কথা নেই। যেন মরুভূমির বুকে দাড়িয়ে থাকা তিন তৃষ্ণার্ত যুবক প্রানের আকুতির মাঝে বাঁধা পড়ে বাকশূন্য হয়ে আছে। নিলয় তখন থেকে নিশ্চুপ হয়ে মনে মনে যেন অভিমানের প্রলাপ গাইছে, তার মুখের দিকে তাকায়ে তা বুঝতে পেলাম। ওদিকে আবীরের দিকে আমি তাকাতে পারছিনা ওর আকুল করা বিমর্ষ মুখ দেখলেই আমার বুক ব্যাথায় নড়ে ওঠে। নীরব ক্ষণের অবসান ঘটিয়ে একসময় আবীর আমার হাতটা নিলয়ের কাছে তুলে দিয়ে বলল,

: নিলয়… আকাশ খুব ভাল একটা ছেলে… সে তোমাকে অনেক ভালোবাসে… প্লিজ ওকে কখনো কষ্ট দিওনা।

বলেই আবীর চোখ মুছতে শুরু করল। ওর চোখ মুছা দেখে আমার হৃদয়টা যেন দুমড়ে মুচড় যাচ্ছে। চোখের কিনারা থেকে জল উপছে পড়তে চাচ্ছে।

বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ সকালে আমাদের বিদায় নেবার সময়। আজ রাতে আবীরের বাসর হবে। আবীরের অনুরোধ ছিল আজকে রাতটা থাকার জন্য কিন্তু আমি থাকতে চাইলাম না। এরপর স্টেশনে পৌছালাম ট্রেন ধরার জন্য আবীরও জোর করে আমাদের সাথে এলে স্টেশনে। আমাদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ট্রেন চলে এল। ট্রেনে ওঠার আগে আবীর আমার হাতটা টেনে ওর বুকে জড়িয়ে নিয়ে কাঁদতে শুরু করল। আমিও শেষবারের মত ওর কাঁধে মাথা রেখে কাঁদতে লাগলাম। আবীরের চোখের পানিতে আমার শার্ট ভিজে একাকার।

এদিকে ট্রেনে ওঠার হুইসেল বেজে উঠল। নিলয় জানালা দিয়ে আমাকে ট্রেনে ওঠার জন্য ডাকতে লাগল। আমি আবীরের গালে শেষ চুমা দিয়ে ওকে ছেড়ে যেতে ধরলাম। সে পিছন থেকে আকাশ বলে আমাকে একটা মায়াবী ডাক দিল। আমি ফিরে তাকাতেই আবীর পলকহীন ভাবে আমাকে দেখতে লাগল।

আমি একপা দুপা করে ট্রেনে ওঠে সিটে বসে জানালা দিয়ে আবীরকে দেখতে লাগলাম। ট্রেন চলতে শুরু করল। আবীর ঐখানেই দাড়িয়ে হাত নেড়ে আমাকে বিদায় জানিয়ে একদৃষ্টিতে দেখতে লাগল। আমিও ইশারা দিয়ে তাকে বিদায় জানালাম। চলতে চলতে ট্রেন স্টেশন ত্যাগ করল, কিন্তু তখনও আবীর আমাদের ট্রেনের দিকেই তাকিয়ে রইল। আবীরকে ছেড়ে যাওয়ার কষ্টে আমার দুচোখ বেয়ে অনর্গল জল পড়তে লাগল। আমাকে কাঁদতে দেখে নিলয় ওর বুকে আমাকে জড়িয়ে নিয়ে বলল,

: এই পাগল এত কাঁদছো কেন, আমি কি তোমার কেউ নই? বুঝেছি তুমি আমাকে ভালইবাস না। আবীরই তোমার সব। চোখ মুছ না হলে আমিও ট্রেনের মধ্যে ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে উঠব কিন্তু।

আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে আমার সব পিছুটানকে পিছনে ফেলে নিলয়কে জাড়িয়ে ধরে ওর কানে কানে বললাম, আমাকে বিয়ে করবে বাবু?

*****সমাপ্ত*****

উৎস: অন্যভুবন

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.