
তাজিম আবরার
-প্রথম খন্ড
( আমার লেখা প্রথম গল্প । বানান বা অনেক কিছু ভুল থাকতে পারে । ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন , আশাকরি। )
সোহাগ পরিবহণের বিজনেস ক্লাস এসি বাসটি মাত্রই সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ল ।শরীর টা খুব ব্যাথা আজকে । কি হাস্যকর যেখানে আমার পেট চলে না , সেখানে আমি বিলাস বহুল এসি বাসে করে যাচ্ছি । কি আর করার শরীরের এই বেহাল অবস্থা নিয়ে , নরমাল বাসে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না ।
আমি সৃজান ,বেঁচে আছি কোন রকম ………… প্রতিটি মুহূর্তে টিকে থাকার জন্য জীবনের সাথে যুদ্ধ করতে হচ্ছে , ভালো আছি বা ভালো নেই , এরকম কোন শব্দ আমার জানা নেই ।শত কষ্ট হলেও যুদ্ধ করে টিকে আছি , মা বাবাকে কখনো বুজতে দেই নি , হাজারো বিলাসিতার মাঝে বেড়ে উঠা এই আমি এত কষ্টে আছি । জীবন যেখানে পিপীলিকার মত সেখানে টিকে থাকা টাই অনেক বড় ব্যাপার ।
উফস নো ………… বাসের করা ব্রেক । কোমরের নিচের অংশে প্রচণ্ড ব্যাথা । আর পারছি না । গত রাতের বাসে করে সিলেটে এসেছিলাম , সারাদিন থেকে আজকে রাতের বাসে করে আবার ঢাকায় ফিরে যাচ্ছি ।
আগে ঢাকার বাইরে যেতাম না , তখন চাহিদা কম ছিল , অল্পতেই অভাব পূরণ হয়ে যেত ।
অনেকটা অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঢাকার বাইরে যেতে হয় , সময়ের সাথে অভাব টাও বড্ড বেরেছে ।
হঠাৎ ফোনে একটা মেসেজ আসলো , আজকের ঐ লোক টা মেসেজ দিছে , ঠিক মত বাসায় পৌঁছে একটু ইনফরম করিও , লাইক ইউ , । লোকটা বেশ হৃদয়বান কিন্তু পয়সা উশুলের বেলায় এরা সবাই একি রকম । হোটেল রোজ ভিউ তে উঠেছিল আমাকে নিয়ে , এক বোতল রেড উয়াইন , দুই বোতল বিয়ার আগের থেকেই রেডি করা ছিল , আমি হোটেলে ঢুকেই অবাক , অস্থির রুম । দামি ব্র্যান্ডের সব কিছু রাখা আছে , আমার কথা বার্তায় আভিজাত্তের ছাপ লক্ষণীয় তাই হয়ত , আমাকে খুশি করার চেষ্টায় কোন কার্পণ্য করে নাই ,ড্রিঙ্কসে আমি অভ্যস্ত নই কিন্তু কিছুই করার নেই এখানে , করতেই হবে ।লোকটার টার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আমার ঠোঁটের দিকে , এক নজরে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে , বলে উঠলো , ইউ আর সো সেক্সি , বলেই শুরু হল রামলীলা । শরীর মন কোনটাই , আমার সাঁই দিচ্ছে না , তার পরেও আমাকে শ্রুতি মধুর , উফ , আহ , হা , শব্দ করতে হচ্ছে ।
খুব খারাপ লাগছে , জীবনে একবার সুখের সন্ধান পেয়ে ছিলাম , এই আমিও কাওকে ভালোবেসে , আবেগ নিয়ে গভীর আবেশে চুমু খেয়েছিলাম , সেগুলো এখন অতিত , ওসব কথা বলে লাভ নেই , কপাল আমার ভালো না , যতই ভালো থাকতে চাই না কেন , কপাল আমার সব সময়ই পুড়া ।এসব ভাবনা বাদ দিয়ে কাজে মন দিলাম , প্রায় দুই ঘণ্টা হয়ে গেল , উফস শেষ হছে না কেন ।লোকটা বলছে প্লীজ সৃজান কিছু বল , বার বার একি কথা বলছে , আমি কিছুই বুঝতে পারছি না , কি বলব এখানে আমি , আজব ,
কাজ শেষ , ওহ বাঁচলাম ,
এই লোকটা তবুও একটু ভালই ছিল , কষ্ট কম দিছে । মাঝে মাঝে দুই একজনে যা করে , বলার মত না , তাদের ভাবটা এমন যে প্রতিটা পয়সা যেন কড়ায় গণ্ডায় উসুল করতেই হবে , তাতেই যেন তাদের শান্তি ।আমি আর কি বলব আমার কোন চাওয়া পাওয়া এখানে মূল্যহীন । একবার ঢাকায় একজন খুব বেশী সময় নিচ্ছিল , আমার অনেক কষ্ট হচ্ছিল , বললাম একটু তাড়াতাড়ি প্লীজ , সে তো তাড়াতাড়ি করলই না বরং পাঁচ মিনিট বিরতি দিয়ে আবার শুরু করল , কি যে কষ্ট হচ্ছিল । টানা তিনদিন আমি বিছানা থেকে উঠতে পারি নি । ভাবতে ভাবতে চোখ দিয়ে জল চলে আসলো , কি আশ্চর্য তারা আমার শরীর টাকে পছন্দও করে আবার শরীরটার উপর নির্যাতনও করে , হা হা হা হা হ ………।কি হয় এতটা নির্দয় না হয়ে একটু রয়ে সয়ে কাজ করলে , কিন্তু কিচ্ছু করার নেই , এরা এরকমই । লোকটি আমার বিপরীত দিকে মুখ করে শুয়ে ছিল , বুঝতে পেরেছে যে আমি কিছু একটা নিয়ে ভাবছি , সে আমাকে বলল – কোন সমস্যা ? বেশী কষ্ট দিয়ে ফেলেছি ? আমি বললাম না ঠিক আছে , কিন্তু আমি বুঝতে পারছিলাম , কি ঠিক আছে , কতটা কষ্টের আগুনে আমি জ্বলে পুড়ে ছাড় খাঁড় হয়ে যায় প্রতিটা মুহূর্তে ।এরা শুধু বলা পর্যন্তই শেষ , অনেক দেখেছি , ঠিক আছে শব্দটার আড়ালের অর্থটা কেও বুঝতে চায় না । খুব কষ্ট হচ্ছে আমার , আর কত , আর কত ………।আর পারছি না আমি , এই নরকিয় জীবন থেকে আমি মুক্তি চাই ।নিজের শরীরটাকে আর কতজনের ভোগের বস্তু বানাতে হবে । উফস ড্রিঙ্কস করা বেশী হয়ে গেছে , মাথা ঝিমুনি দিচ্ছে ।
লোকটা আগে ফ্রেশ হতে গেল , সে বের হওয়ার পর আমি গেলাম । আমি ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি , শার্ট , প্যান্ট পরে লোকটা রেডি । টেবিলের উপড় তিন হাজার টাকা রেখে লোকটা রুম হতে বের হয়ে যাচ্ছিলো , দরজার কাছ থেকে আবার ফিরে আসলো , তুমাকে কিছু জিজ্ঞাস করতে পারি ,
আমি – ইয়েস ইউ ক্যান ।
সে – তুমার আচরণে , কথা বার্তায় সব কিছু মিলিয়ে তুমাকে ঠিক এই লাইনের সাথে মিলানো যাচ্ছে না , কেন তুমি এপথে , আমি একটু বিরক্ত ভাব নিয়ে ঘাঁটি বেশ্যাদের সুর নকল করে বলতে চাইলাম “ এসব দিয়ে আপনার কোন কাজ নেই ,আপনার কাজ শেষ , নাও ইউ মে গো ,……।।
সে – বি কুল , ই ইউল কল ইউ , বাই ……
চোখ বন্ধ করে বাসের সিটের সাথে হেলান দিয়ে ভাবছিলাম এগুলো ,
গায়ে কার যেন হাত পরল । শরীরে বিদ্যুতের ন্যায় ঝাঁকি খেলাম , কোন পুরুষ মানুষের হাত আমার আর এখন সহ্য হয় না , পুরুষের হাত গায়ে পরলেই মনে হয় এই বুঝি আমাকে ছিরে খাবে , শরীরের স্পর্শকাতর প্রতিটা অঙ্গে লাল লাল খামছি কেটে যাবে । বাসের হেল্পার টিকেট চেক করতে এসেছে ।
কি আজব প্রায় তিন ঘণ্টা যাবত আমি বাসে , অথচ একবারের জন্য ফিরেও তাকাই নি ।
যে কে বসছে আমার পিছনে , আর না এবার একবার তাকিয়ে দেখি, ও মাই গড , অসম্ভব সুন্দর একটা ছেলে বসে আছে , এক নজর তাকিয়েই আমি চোখ নামিয়ে ফেললাম । সুন্দর মানুষের দিকে আমি তাকাই না ,বাহ্যিক রুপটাকে খুব ঘৃনা করি আমি । মা কে একটা ফোন করা দরকার , সে জানে যে আমি একটু পড়াশুনার কাজে ঢাকার বাইরে আসছি , আম্মু কে কল দিলাম , ভালই আছে , মা , বাবা দুইজন খেয়ে দেয়ে এক এখন ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে , আমার শান্তির জায়গা , আস্থার জায়গা আমার , আমার যত কষ্টই হোক না কেন আমি আমার মা বাবাকে কখনই বুঝতে দিতে চাই না যে জিবনের তাগিদে আমাকে এসব করতে হচ্ছে । এসি বাসে জানালা খোলা যায় না , রাতের বেলা বাসে জার্নি করলে জানালা খুলে রাখতে আমার খুব ভালো লাগে , এখন যেহেতু জানালা খোলা যাবে না , সো , জানালার পর্দাটা সরিয়ে দিলাম , আকাশ দেখা যাচ্ছে , সিটটা হেলিয়ে দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলাম , আমার অতিত , বর্তমান , ভবিষ্যৎ
অনেক সুন্দর একটা অতিত আমার , মা বাবার একমাত্র ছেলে । খুব আদরে বড় হয়েছি , কষ্টের ছিটে ফোটাও মা বাবা কোনদিন আমাকে বুঝতে দেই নি ।পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা আহামরি সচ্ছল কখনই ছিল না , আবার খুব একটা অভাব , টানাপোড়ান ও ছিল না ।মা বাবার স্বপ্ন ছিল , ছেলেকে শিক্ষিত করবে , তাই ছোট বেলা থেকেই যথেষ্ট ভালো ভালো প্রতিষ্ঠানে রেখেই আমাকে পড়াশুনা করিয়েছেন।নাম করা একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরছি এখন । এখানে টিউশন ফি অনেক , শুরুতে সমস্যা হত না , বাবা কর্মঠ ছিল , একটু কষ্ট হলেও , টিউশন ফি , ঢাকাতে থাকা , খাওয়া সব কিছু মিলিয়ে ভালোই যাচ্ছিল দিন, কিন্তু ঐ যে কথায় আছে না , অভাগা যেদিকে যায় সাগরও শুকিয়ে যায় ।সত্যি বলতে কথায় আছে না , কিছু মানুষ যতই চেষ্টা করুক না কেন তাদের ভাগ্য আসলে কখনই পরিবর্তন হতে চায় না । পরিবারের এক মাত্র কর্মক্ষম বেক্তি বাবা অসুস্থ হয়ে যাওয়াতে , আকাশ ভেঙ্গে পড়ল , যদিও আমার একাজের পিছনে আমার মা , বাবার কোন ভূমিকা নেই , তারা কখনো আমাকে ভুলেও বলে নি যে তুমাকে টাকা পয়সা দিতে পারবো না , পড়াশুনা ছেরে দাও , কিছু একটা কর , এরকম কিছুই তারা কখনো আমাকে বলে নি কিন্তু তার পরেও চার মাস পর পর প্রতি সেমিস্টারে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে দিতে হয় , তার উপড়ে আবার প্রতি মাসের থাকা খাওয়া , সব মিলিয়ে আমার মা বাবা আমাকে না বললেও আমি বুঝতে পারি এটা তাদের জন্য কতটা কষ্টসাধ্য ।তাদের কষ্টের কিছুটা উপশম করতে
চেয়েছিলাম , যদি প্রেসার টা একটু কমে । কতই আর প্রেসার দিব , আর কাকেই বা দিব ,আমি তো জানি আমার পরিবারের খবর । আমি অন্য কোন কাজ খুজেছি , অনেক খুজেছি , একটা টিউশনি , একটাপার্টটাইমজব , কিন্তুপাইনি , ঢাকাতেআসলেআপনজনকেওনাথাকলেটিউশনিপাওয়াযেনযুদ্ধজয়েরসমান ।
ভালো সাবজেক্ট এ পড়াশুনা করে বাইরে সময় দেওয়াটাও অনেক কঠিন ।যত কষ্টই হোকনা কেন অন্য কোন কাজ পেলে এপথে আমি নামতামনা। মা বাবার প্রেসার একটু কমাতে ইচ্ছা করেই এপথে নামা । যদি অন্তত থাকা খাওয়ার টাকাটা যোগান হয় ।
সেমিস্টার ফি গুলা বাসা থেকেই পাঠায় , থাকা খাওয়া বাবদ কিছু টাকা পাঠায় , বাকি টা এবং আমার পকেট খরচ টা আমাকেই গুছাতে হয় । মাঝে মাঝে ভাবতে অবাক লাগে , যেই আমার আগে হাত খরচই ছিল , পাঁচ , সাত হাজার টাকা । আর এখন সেই আমাকেই মাত্র পাঁচ হাজার টাকা মান্থলি সাপোর্টের জন্য এতটা নীচে নামতে হয়েছে । আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে , দুনিয়াতে কি আর কোন কাজ নাই , আছে হয়ত , কিন্তু আমার জন্য আছে কি না আমি জানি না , অনেক খুজেছি একটা টিউশনি , কিন্তু এই ঢাকার শহরে আপনজন না থাকলে একটা টিউশনি পাওয়াটাও খুব মুশকিল । কণ্ঠ এবং বাঁচন ভঙ্গি ভালো ছিল , চেষ্টা করেছিলাম , কল সেন্টারে একটা পার্ট টাইম জবের কিন্তু তাও পেলাম না । বাধ্য হয়েই এই কাজ । মাঝে মাঝে খুব খারাপ লাগে ।
আবেগহীন ভালোবাসাহীন শুধু মাত্র কিছুক্ষন শারীরিক যুদ্ধ । আমি প্রতিনিয়ত জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছি । লোকটি আবার ফোন করেছে , কিছু জানতে চাচ্ছে আমি বললাম ঠিক আছে জিজ্ঞাস করুন কি জানতে চান । দেখলাম পাশের ছেলেটা অঘোরে ঘুমাচ্ছে । সো যাই বলি না কেন কোন চিন্তা নেই ,
সে – তুমি কত দিন এ রাস্তায়।
আমি যতই গলার সুরের সাথে কর্কশ একটা ভাব আনার চেষ্টা করছি বাট কিছুতেই আসছে না ,
তার পরেও চেষ্টা করে যেতে লাগলাম , লোকটা শিক্ষিত , স্মার্ট , মে বি উনি বুঝতে পেরেছেন আমার বাপ্যার টা , আমি ভাবলাম যেহেতু লোকটা এতকরে জানতে চাচ্ছে সো বলি , আমি বলতে লাগলাম , দেখুন যৌন তারনায় প্রবিত্ত হয়ে বা শরীরের সুখের জন্য কখনো কোনদিন আমি কারো সাথে গিয়ে শুই নি , একজন ভালবাসার মানুষ ছিল , অনেক ভালোবেসে গভীর আনন্দে , আবেশে শীতের এক চাঁদনী রাতে তার কাছে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলাম ।মিথ্যা বলব না , সে আসলেই আমাকে অনেক ভালোবাসতো , আমিও বাসতাম , কৈশোরের উথাল পাথাল আবেগ নিয়ে ভালবেসেছিলাম । চুটিয়ে প্রেমও করেছি , কিন্তু আমাদের কপালে হয়ত সুখ সয় নি । ব্রেক আপ হল আমাদের , ও আমাকে ছেরে যায় নি ,আমিও ওকে ছেরে আসি নি , ভালোবাসাই আমাদের ছেরে পালিয়েছে , ও যেদিন আমাকে পর করেছে সেদিন থেকেই সুখ পাখিটা আমাকে বিদায় জানিয়েছে । তার পরেও অনেক চেষ্টা করেছি কাওকে আপন করতে । পারি নি আমি কাওকে আপন করতে , কেও কেও হয়ত চেষ্টা করেছে কিন্তু তারাও ব্যাথ হয়েছে । যেখানে আমার ব্যাহিক রুপ টাই তাদের কে
মুগ্ধ করে , সেখানে আমার ভিতরের মানুষটাকে দেখার আর সময় কই তাদের , আর এজন্নই অনেক চেয়েও আমি তাদের কাওকে আপন করার মত দুঃসাহস দেখাতে পারি নি । লোকটা এক নাগারে শুনে যাচ্ছে আর আমি বলেই যাচ্ছি । উনি বলে উঠলেন তুমাকে দেখেই আমি বুঝতে পেরেছি একাজ তুমার সাথে যায় না , নিশ্চয়ই কিছু একটা প্রব্লেম এর জন্নই তুমি এই লাইনে , আমি বললাম দেখুন কি যায় আর কি যায় না , এটা বড় কথা না, বড় কথা হচ্ছে আমি এখন এসব করছি , এটাই ফ্যাক্ট , জীবনে টিকে থাকার জন্য হোক আর বেঁচে থাকার জন্য হোক , জীবন আমাকে বাধ্য করেছে এ পথে নামতে ।
লোকটি- তুমাকে কি তুমার মা বাবা , টাকা পয়সা দেয় , না কি টিউশন ফি নিজেকেই জোগাড় করতে হয় ।
আমি – কিছুটা চেঁচিয়ে , , উফস কি বললাম আপনাকে এতক্ষণ যাবত আমি , আমার মা বাবার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই ,তাদের কোন ভুমিকাও নেই আমার একাজে আমার নিজের ইচ্ছাতে নিজের লাইফ স্টাইল ঠিক রাখার জন্য আমি একাজ করছি । এমন না যে মা বাবা টিউশন ফি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে বলে আমি এসব করছি । নিজের কাছে সুধু একটাই সান্ত্বনা আছে ‘যৌন তারনায় প্রবিত্ত হয়ে বা শরীরের সুখের জন্য কখনো কোনদিন আমি কারো সাথে গিয়ে শুই নি ,জীবনে টিকে থাকার জন্য আমাকে করতে হয়েছে । কিন্তু আপনার এসব জেনে কি দরকার , আপনার পয়সা তো উসল হয়েছে না কি ?
লোকটি – দেখ , সৃজান , তুমার সাথে এরকম কর্কশ কণ্ঠস্বর যায় না , তুমি যতই চেষ্টা কর না কেন , আমি তুমার ভিতরের মানুষটিকে দেখতে পেরেছি , এর জন্নই এত কিছু জিজ্ঞাসা করা । যদি তোমার কষ্ট হয় তাহলে কিছুই বলার দরকার নেই।
আমি – আপনার এত আমার ভিতরের মানুষ দেখার দরকার নেই , প্লিয। খুব ভালো মতই বুঝতে পারলাম , মানুষটার গলা ধরে আসছে, গলার স্বর টা খুব নরম হয়ে গেছে ।
লোকটি – সৃজান , হয়ত তুমি আমাকে অনেক খারাপ ভাবতে পারো , কারন যে দোষে তুমি দোষী , আমি নিজেও কিছুটা দোষী ।আমি হাজার ভালো কথা বললেও তুমার ভালো লাগবে না । তুমার ব্যাহিক আকর্ষণীয়তা আমার ভালো লেগেছে সত্য । কিন্তু তার চেয়েও ভালো লেগেছে তুমার অভ্যন্তরীণ মানুষটাকে । সৃজান , আমরা কি অন্য কিছু ভাবতে পারি না , প্লীজ । শর্তহীন সুন্দর একটা ভালোবাসার সম্পর্ক , বিশ্বাস কর তুমার অমর্যাদা হবে না কোনদিন , যে কিছুর বিনিময়েই হোক আমি তুমাকে হ্যাপি রাখবো ।
আমি – দরকার নাই আপনার , আমাকে হ্যাপি রাখার , এসব বলার জন্য আমাকে আর কোণ দিনও ফোন দিবেন না ,বলেই ফোন রেখে দিলাম । আজাইরা ভাবের কথা শুনাইতে আসছে
এত এনার্জি যে এরা কই পায় , আল্লাহ মাবুদ জানে , ভালোবাসা , ভালো সম্পর্ক , কিভাবে আশা করে , এরা আমার থেকে , এর আগেও একজন সেম কাহিনি করেছে , শালা , বিড়বিড় করে বকতে লাগলাম । ভাগ্যিস পাশের ছেলেটা কানে হেডফোন লাগিয়ে ঘুমাচ্ছিল ।
উৎস: অন্যভুবন