
হাসান মুগ্ধ আলো
কনডম!
চার অক্ষর নামের এই লম্বাকার থলি নিয়ে কতই না কৌতূহল থাকে, উঠতি বয়সী ছেলে পেলের।
আর কনডম নিয়ে মজার বা বিব্রতকর অভিজ্ঞতা নেই এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে।
ছোটবেলা থেকে বড়বেলা আমি এবং আমার চারপাশে ঘটে যাওয়া কিছু কাহিনী নিয়েই আজ আমার লেখা।
“ কনডম কাহিনী”
১
*************
তখন আমি খুব ছোট।
বয়স সাত কি আট।
অবশ্য পিচ্চি বয়স থেকেই আমি ভীষণ পাকনা, যাকে বইয়ের ভাষায় বলে ইঁচড়ে পাকা।
যাই হোক।
মূল ঘটনায় আসি।
আর দশটা সাধারণ বাচ্চার মত আমার বেলুনের প্রতি ছিল দারুন আগ্রহ।(অবশ্য এখনও সেটা আছে)
দুপুর ১২ টার দিকে আমি, শিপলু আর তুতন তিন জন মিলে খেলছি, তুতনদের উঠানে।
সবাই সমবয়সী।
এমন সময় কথায় কথায় বেলুনের প্রসঙ্গ উঠতেই তুতন বলে উঠল,
“ জানিস মুগদ, আমার মার কাছে এত্ত গুলা ফুটকা ( আঞ্চলিক ভাষায় বেলুনকে ফুটকা বলে) আছে। মা আমাকে কালকে তিনটা ফুটকা দিয়েসে।”
উল্লেখ্য, তুতনের মা ফ্যামিলি প্ল্যানিং এ জব করত।
তুতনের কথা শুনে আমি আর শিপলু আনন্দে আটখানা হবার বদলে দশখানা হবার মত অবস্থা!
তুতনকে অনেক তেল মেরে রাজি করালাম ফুটকা এনে দেবার জন্য।
অবশেষে তুতন রাজি হল।
বিছানার তোষকের নিচ থেকে তিনটা ফূটকার প্যাকেট নিয়ে আসল।
আমরা তিনজন মহা উৎসাহে ফুটকা ( কনডম ) ফুলাতে লাগলাম।
আমার খুব মন খারাপ হল।
কারণ ওদের দুজনের ফুটকা ঈষৎ হলদে কালারের ছিল।
আর আমারটা একেবারে পানির মত।
সব দেখা যায়।
যাই হোক।
মনের দুঃখ মনেই চেপে রইলাম।
কি আর করা।
ফূটকা তো পেয়েছি!
এই সান্তনা।
এখন তিন জন মিলে প্ল্যান করলাম যে ফুটকা গুলো পাট কাঠির আগায় সুতা দিয়ে বেঁধে শাওনদের বাসার সামনে ঘুরব।
শাওনও আমাদের সমবয়সী ফ্রেন্ড ছিল।
তবে খুব হিংসুটে।
কিচ্ছু দিত না।
তাই এটা আমাদের তার প্রতি প্রতিশোধ!
আমি, শিপলু আর তুতন মনের আনন্দে তিনটা পাট কাঠির আগায় কনডম আই মিন ফূটকা লাগিয়ে দিলার দৌড়।
মনের সুখে।
শাওনদের বাসার সামনের উঠানে গিয়ে আবোল তাবোল গান গেয়ে তিনজনই নাচতে থাকলাম।
নাচ গান শুনে শাওন বের হয়ে আসল।
একটা ঢলঢলে প্যান্ট পরা।
পাছা দেখা যায়।
খালি গা।
নাক দিয়ে এক দু ফোঁটা সর্দি পড়ছে।
শাওন এসেই চিৎকার, “ ঐ তোরা আমারে একটা ফুটকা দে।”
আমরা তিনজন চরম খুশি।
দ্বিগুণ আনন্দে নেচে কুঁদে কনডম বাতাসে উড়াচ্ছি।
ঠিক যেন, “ এলোমেলো বাতাসে উড়িয়েছি কন্ডোমের ফুটকা”
শাওন এবার দারুন খেপে গেল।
দুই পা দুই দিকে ছড়িয়ে ও উঠানে বসে কান্না শুরু করল।
“ আম্মা। আম্মা গো। আমারে ফুটকা আইন্না দে”
শাওনের ঢিলেঢালা প্যান্ট এর নুনুর জায়গাটা একটু ছেড়া।
এইটা দেখে আমরা আরও চিল্লান দিলাম, ঐ তোর কলা দেখা যায়।
এইবার শাওনের গলা আকাশে উঠল।
শাওনের মা পাশের বাড়ি থেকে দৌড় দিয়ে আসল।
আইসাই আমাদের দিকে তাকাইয়ে হতভম্ব।
কারণ আমাদের হাতের ফুটকা তখন দুলছে।
হাওয়ায়। হাওয়ায়।
শাওনের আম্মা চিৎকার দিয়ে বলল,
“ বেশরম, বেলাজা পোলাপাইন। বাইর হ। ছি ছি ছি । কি জিনিস বাতাসে উরাইতাসে”
শাওনের আম্মার ধাওয়ানি খেয়ে আমরা তিনজনই অবাক হয়ে দৌড় দিলাম।
পুকুর পারে এসে তিনজনই জলে পা ডুবিয়ে বসে আছি।
কনডম গুলা এখন পুকুরের জলে ভাসছে।
কি সুন্দর!
লাগতাছে।
এমন সময় পাড়ার বড় ভাই হাফিজ ভাই পুকুরে গোসল করতে আসল।
এসে দেখে পুকুরের জলে ফুটকা ভাসাচ্ছি আমরা তিন জন।
হাফিজ ভাই চিৎকার দিয়ে কইল,
– ঐ বজ্জাতের দল। এই গুলান কই থেইক্কা আইঞ্ছস। ফালা ফালা।
আমরা সমস্বরে চিৎকার, কেন ফালামু? আমরা ফূটকা দিয়ে খেলুম।
হাফিজ ভাই আবার কইল,
– হায় হায়রে এই গুলার মইধ্যে বমি করে। বুঝলি? অসুখ করব এইগুলান দরলে।
আমরা তিনজনই নাছোরবান্দা।
জীবন দিয়া দিমু কিন্তু ফূটকা ছাড়উম না। এ আমাদের অঙ্গীকার!
এইবার হাফিজ ভাই ভীষণ খেইপা গেল।
হেচকা টান দিয়ে তিনটা পাট কাঠিই আমাদের হাত থেকে নিয়ে নিল।
তারপর পাট কাঠি ভেঙ্গে ফুটকা ফাটিয়ে দিল।
আমরা তিনজনই কাঁদতে কাঁদতে বাসায় আসলাম।
সেদিন দুপুরে ফূটকার বিরহে ভাত খাই নি আমি।
রাতে যখন ঘুমুতে গিয়েছিলাম তখন মনে মনে বলছিলাম, “ যেদিন আমি অনেক বড় হব সেদিন আমি অনেক ফূটকা কিনব। লাল, হলুদ ফুটকা। কাউরে দিমু না। কাউরে না।”
২
*********************
রুম নম্বর ২০২।
কোন একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হল।
দোতলায়।
রুমের সামনেই একটা জাম্বুরা গাছ।
জাম্বুরা গাছের সামনে দিয়ে গেলেই সবাই গান গাই।
“ লাল লাল জাম্বুরা, কে কে খাবি তোরা!”
উল্লেখ্য এখানে জাম্বুরা বলতে কবি কি বলেছেন তা সবাই বুঝেছেন।
যাই হোক।
ঘটনা ২০২ নম্বর রুমের রুমন ভাইকে নিয়ে।
ভাইয়া নেতা।
সবাই তার কথায় উঠে বসে।
আর জাম্বুরা গাছের সামনের রুমটাই ওর।
আমার ক্লাসমেট ইমতু পাজীর পা ঝাড়া।
ওর দ্বারা অসম্ভব বলে কিছু নেই।
রুমন ভাই কোন একটা কারণে ইমতুকে চড় মেরেছে হলের টি ভি রুমে।
ইমতু সবার সামনে কিছু না বলে চুপ চাপ রুমে চলে আসে।
আমি একটু পর ওর রুমে যাই।
কাঁধে হাত রাখতেই ও বলল,
– দোস্ত এই চড়ের প্রতিশোধ আমি নিমুই নিমু। তবে এখন না। এখন নিলে রুমন ভাই বুইঝা যাইব।
আমি চুপ।
কারণ আমি জানি ইমতু যা বলে তাই করে।
ঘটনার ঠিক এক মাস পরের কথা।
ইমতু আমার রুমে আসল।
ঘড়িতে রাত তখন এক টা।
বলল,
– দোস্ত ছাদে চল। কথা আসে।
গেলাম ওর পিছে পিছে।
হলের এই ছাদ হচ্ছে আমাদের সুখ দুঃখ সব বলার জায়গা।
ইমতু দুইটা সিগারেট বের করে একটা আমার হাতে দিয়ে বলল,
– দোস্ত। আজ তুই আমায় একটা হেল্প করবি।
– কি হেল্প দোস্ত। তোর লাইজ্ঞা জান হাজির।
– হাচা কইছস। নাকি?
– তোর সিগারেট এর কসম।
ইমতু পকেট থেকে এক প্যাকেট কনডম বের করে।
আমি অবাক।
– কিরে এইগুলা দিয়া কি করবি।
– কাম আছে।
– করবি নাকি কাউরে?
– না।
– তাইলে?
– শুন। একটা কনডম তোরে দিলাম । তুই এইডার ভিতর মাল ফালাইয়া লইয়া আইবি। রাইত চারটার দিকে।
– মানে কি?
– যা কইতাছি। করবি। না করলে তোর সাথে আমি নাই।
আমি কি আর বলব।
দোস্ত মানুষ ।
তাই রাজি হইলাম।
ঘড়িতে তখন বোধহয় রাত সাড়ে তিনটার উপরে বাজে।
হাতে যত্ন করে কনডমের প্যাকেট নিয়ে ছুটলাম বাথরুমে।
চোখ বন্ধ করে ক্লাসের ফারাবি স্যারের ফুলে উঠা প্যান্ট কল্পনা করে স্যারকে নগ্ন করলাম কল্পনায়।
এরপর কল্পনাতে বিছানায় স্যারের আদর খেতে লাগলাম।
কখন যে কনডম ভরে গেছে।
ভরা কনডম হাতে নিয়ে ইমতুর রুমে গেলাম।
গিয়ে ইমতুর হাতে আরও দুই প্যাকেট কনডম।
সাদা পদার্থে ভরা।
ইমতু বলল, চল।
– কই যাবি। এত রাতে?
– ২০২ রুমের সামনে।
– ওইটা তো রুমন ভাইয়ের রুম।
– হুম। আজ প্রতিশোধ নিমু।
কি আর করা।
ইমতুর পিছে পিছে পা টিপে টিপে যাচ্ছি।
হলের সব রুমের বাতি নিভানো।
বারান্দায়ও বাতি নেই।
আমরা দুজন এখন ২০২ নম্বর রুমের সামনে।
ইমতু তার হাতের একটা ভরা প্যাকেট ঠিক রুমের দরজার সামনে ফেলল।
এরপর আরেকটা প্যাকেট সামনের জাম্বুরা গাছে ঝুলাল।
আর এবার আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
– তোর প্যাকেট টা জানালার কাছে রাখ।
আমি ভয়ে ভয়ে তাই করলাম।
এরপর দুরু দুরু বুকে পা টিপে টিপে বেসিনে সাবান দিয়ে হাত ধুলাম।
এরপর যে যার রুমে ঘুমিয়ে গেলাম।
পরদিন সকাল !
১০ টা বাজে।
পুরো হল জুড়ে হাসাহাসি যে ২০২ নম্বর রুমের সামনে কে যেন মাল সহ কনডম ফেলে গেছে!
পুরা হলের ছেলেপেলে সেখানে জড় হল।
আমি আর ইমতু সবার সাথে দাঁড়ালাম।
এমন সময় সবার চিৎকার চেঁচামেচি শুনে রুমন ভাই আড়মোড়া ভেঙ্গে রুম থেকে বেরিয়ে আসল।
বেরিয়ে আসতেই সবাই হা হা হা করে হাসতে শুরু করল।
রুমন ভাই লজ্জায় রাগে ক্ষোভে ফেটে পড়ার মত অবস্থা।
পারলে সে তখনই খুন করবে।
হলের মাম বুয়া সবাইকে বলা হল, অনুরোধ করা হল কনডম সরানোর জন্য।
কেউই ধরবে না।
অবশেষে রুমন ভাইয়া বাধ্য হল নিজের হাতে কনডম ধরে বাথরুমে ফেলতে।
সে কি অবস্থা!
সেদিন বিকেলে ইমতু আমাকে ফুচকা ট্রিট দেয়।
ক্যাম্পাসে।
আমি মনের আনন্দে ফুচকা খাচ্ছি।
এমন সময় ইমতু বলে উঠল,
– ব্যাটাকে কেমন আমার আর তোর মাল ধরালাম!
আমি হাসব না কাঁদব!
কারণ ইমতু মানেই মজার কাহিনী।
আর এই কনডম কাহিনী আমার জীবনে নতুন কিছু নয়!
৩
************
ঘটনাটা আমার এক কাছের বন্ধুর।
সে একদিন তার পরিচিত পার্টনারের সাথে সেক্স করতে গেছে।
তো দুজন খালি বাসা পেয়ে খুব মউজ মাস্তি করছে।
বলে রাখা ভাল ওদের দুজনেরই স্বাস্থ্য খুব বেশি ভাল।
যাই হোক।
চুমুচুমি পর্ব শেষে তারা এখন আসল কর্ম করতে উদ্যত হল।
আমার বন্ধু তার পার্টনারকে কনডম পরিয়ে দিল।
এবার সে যেই না বসতে যাবে।
অমনি মট মট শব্দ করে খাট ভেঙ্গে গেছে।
দুজনে কোন রকমে খাট থেকে নেমে খাট দাড় করানোয় ব্যস্ত হয়ে গেল।
বন্ধুর সেই পার্টনার এর পুরুষাঙ্গে তখনও সেই কনডম পরাই আছে।
আমার বন্ধু অবাক হয়ে সেদিকে তাকিয়ে রইল।
এখনও তার সাথে দেখা হলে আমার সেই বন্ধু বলে উঠে ,
“ দোস্ত তুই কল্পনা কর কনডম পরা একজন পুরুষ ভাংগা খাট ঠিক করছে! কেমন লাগবে বলতো!!!”
উৎস: অন্যভুবন