
ভানুদাস ঠাকুর
প্রবঞ্চণার স্বাধীনতা দিলি সেই সে একাত্তরে।
স্বাধীনতা মোর খুন হয়ে গেছে তিনশো সাতাত্তরে!
দেখ গিয়ে মা তিরিশ লাখে,
আমিও ছিলাম ঝাঁকে ঝাঁকে।
এ্যাকিলিস-রূপে অবতারি আমি তোর মুক্তির তরে।
আমার বীরত্ব কেড়ে নিলো মা তিনশো সাতাত্তরে।
তার আগে মাগো বায়ান্নোতে,
তোরে দিনু ভাষা নিজ প্রাণান্তে।
আমার ভাষা রুদ্ধ মাগো তিনশো সাতাত্তরে।
আমার আত্মা বন্দী হলো মা অর্ধনারীশ্বরে।
সবাই তো মা সন্তান তোর।
আমাতেই কি মিছে তোর ক্রোর?
আমিও মানুষ সে’ও মানুষ, দুই ভাই এক ঘরে;
ব্যবধান মাঝে এনে দিলো মা তিনশো সাতাত্তরে।
আমিও তো মা তোরই গরবে,
মনুষ্য হিত ছড়াই সরবে।
তবু, ফতোয়া-তত্ত্ব মানিয়া নিজ সন্তান পর করে-
কি সুখ তুই পাস মা ওই তিনশো সাতাত্তরে?
আমাতেই মা আমি পাই তাপ,
সেই তাপ মাগো তোর গৃহে পাপ।
পুরুষ-নারী কাম পাপী হোক, তাতে নাহি পাপ ধরে।
আমারেই দিলি সাজা-শোক-পাপ তিনশো সাতাত্তরে!
তুই কি মা মোর এই পরিচয়ে-
বদন লুকাস লাজ, বিধি-ভয়ে?
কি পরিচয় দিবো মা বল লুকায়ে সত্যরে?
সত্য যে মোর আটকে আছে তিনশো সাতাত্তরে।
চির যে সত্য চির সে নিরঞ্জনে
জিজ্ঞাসী গুঞ্জনে-
আমি যদি পাপ হবো প্রভু তবে আমার এই দেহ ঘরে
সৃজিয়া এমন স্বত্তা তুমি দিলে কেন ভরে ভরে?
আমি হে স্রষ্টা তোমারই সৃষ্টি,
আমারই স্বত্তা তোমারই কৃষ্টি,
আমাতেই তুমি তোমাতেই আমি, একে অপরের তরে-
উভয়েই মোরা বন্দি হে নাথ তিনশো সাতাত্তরে।
উৎস: রূপবান ব্লগ