
শু.নিষাদ
গ্রাম জুড়ে ডামাডোল,
বীণাপাণি অপেরার যাত্রা এসেছে।
দলে দলে ছুটছে মানুষ;
রাতের নেশায় বুঁদ হয়ে আছে সমস্ত গ্রাম।
নিস্তব্ধ রাতে গ্রাম জুড়ে বেজে উঠে সানাইয়ের সুর,
রাতের পর রাত ধরে চলে পালা
বেহুলার ভাসান গান কিংবা বার দিনের শিশুর প্রেমে
হাবুডুবুরত বার বছরের রূপবানের পালা।
রূপবানের রূপে পাগল প্রায় সমস্ত গ্রাম
পুরুষেরা ছুটছে রূপের পিছে
নেশার ঘোরে বলছে, দাও দেখি আর এক গ্লাস রুপবান দাও!
নারী ছুটছে রূপবানের ছলাকলার দিকে!
বীণাপাণিঅপেরা আলো করে জ্বলজ্বল করছে
রূপবানের রূপ! অদৃশ্য এক আকর্ষণে রূপ কিনতে
জড়ো হচ্ছে সমস্ত নামিদামি রূপের ক্রেতা!
অধিকারী মহাশয়, হাঁকছে রূপের দাম!
একরাতের জন্য রূপকে কিনে নিলেন
মস্ত বড় জমিদার,
বাইজী নাচে রূপকে করে নিলেন সাদরে বরণ!
সুরে আর সুরায় মত্ত হয়ে রূপকে উন্মোচন করতে গিয়ে
চমকে গেল রূপের পিয়াসী
রূপবানের গগন বিদারী হাসি
বেণী দুলিয়ে দুলিয়ে কেশপাশ ভূমিতে
বিসর্জন দিয়ে
পানরঙা ঠোঁটে আলতো কামড় দিয়ে
সহাস্যে বলল, একি অঙ্গে কত্ত রূপ বাবু!
রূপের নীচে যে রূপ দেখছো সে হচ্ছে বিধাতার তামাশা!
আর এই যে বেশভূষা, এ হচ্ছে আমার বাস্তবতা!
আরও কাছে ঘেঁষে সে বলল, আমার এ নিঃশ্বাস
শুনতে পাচ্ছ বাবু! কি তেজ এতে!
বিধিকে একবার শুনাতে পারতাম এ তেজ
তবে তিনি বুঝতেন!
দুই রূপ দিয়ে কি জ্বালায় ফেলেছে অধমে!
রূপবানের দীর্ঘশ্বাস!
হা! ভগবান!
মন দিলে নারী করে দেহ দিলে নরে
কি পাপ করেছিনু, বাধিলে হেন বরে!
উৎস: রূপবান ব্লগ