
১।
-আমাদের কোম্পানি এখন অনেক লাভবান হয়েছে। সব আজ তোমার জন্য হয়েছে,My son!
I’m proud of you.God Bless You my son.
-Thank you, dad.তবে ক্রেডিট আমি একা নিব না।এখানে তোমারও ক্রেডিট আছে ড্যাড।তুমি আমাকে কোম্পানির কাজ না শিখালে আমি কিছুই জানতাম না। So,I want to give you a big thanks Dad.
-It’s Alright,Nafis.I love you.
-I love you too Dad.But Dad I want to tell you something.
-Yes,sure.Please tell.
-ড্যাড, আমি কোম্পানির বিভিন্ন কাজে বাহিরে যাই। তো আমি বলছিলাম আমার একজন ব্যক্তিগত সহকারীর প্রয়োজন।
-Okay, my son.আমি কালই একজন নিয়োগ দিব তোমার জন্য।
-Many many thanks Dad.ড্যাড,আমার পুরুষ এসিস্ট্যান্ট প্রয়োজন। একজন পুরুষ নিয়োগ দিও।
-Okay,dear.Don’t worry.
-Thank you so much,Dad.
এভাবেই চলছিল পিতা-পুত্রের কথোপকথন।
ও হ্যা,আপনাদের তোহ পরিচয় ই করানো হল না।
আশফাক চৌধুরী,রাজধানীর অন্যতম বড় একটি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক। অঢেল ধন-দৌলত এর মালিক তিনি।জীবনে অনেক কষ্ট করে এই পথে আসেন তিনি।আজ অসুস্থতার জন্য তিনি তার গুরুদায়িত্ব তারই একমাত্র পুত্র নাফিস চৌধুরীর হাতে অর্পণ করেন।নাফিস চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে MBA শেষ করে নিজেদের ব্যবসার হাল ধরেছেন।আজ ৫বছর ধরে তিনি এই ব্যবসায়ের হাল ধরেছেন।নাফিস চৌধুরীর অসাধারণ নেতৃত্বে তাদের কোম্পানি আজ অন্যতম।
২।
মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান অভ্র। পুরো নাম অভ্র মাহমুদ। মা-বাবা আর ২ভাই নিয়ে তার সংসার। অভ্রর ছোট ভাই শুভ্র দশম শ্রেণির ছাত্র। অভ্র এবার MBA শেষ করে জবের জন্য আবেদন করছে। তার বাবা আজমল হক ব্যাংক কর্মকর্তা। আর মাত্র ৫ বছর আছে তার চাকরীর।তাই ছেলের চাকরীর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।অভ্র নিজেও খুব চেষ্টা করছে চাকরীর জন্য।
ভাগ্যের কি লিখন! সকাল বেলা আজমল সাহেব দেখলেন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে যে,চৌধুরী গ্রুপ অব কোম্পানিজ এর জন্য একজন পুরুষ PA নিয়োগ দেওয়া হবে। সাথে সবধরনের যোগ্যতার কথাও বলা হয়েছে। তিনি তৎক্ষনাৎ অভ্র কে ডেকে বললেন,
-বাবা,এই দেখ চৌধুরী গ্রুপ অব কোম্পানিজ তাদের জন্য একজন PA নিয়োগ দিবে।এখানে যা দেখলাম সবই তোর মধ্যে আছে। তুই একবার আবেদন করে দেখ বাবা! আল্লাহ চাইলে হতেও পারে!
– ঠিকাছে বাবা। আমি আজই আবেদন করব।
– আজ বিকালেই করে ফেল।
বিকাল ৫ টায় অভ্র আবেদন করে। এদিকে নাফিসের ল্যাপটপে আজ ওয়েবসাইটে দেখল অনেকগুলো আবেদন। যথারীতি সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ জানানো হল। নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী সবাই আসল।অভ্রও আসল একদম ফরমাল লুকে।নীল রংয়ের শার্ট আর লুজ প্যান্টে তাকে দেখতে অসাধারণ লাগছিল।
সময়মত পরীক্ষাও শুরু হল।প্রশ্ন একদম সহজ হয়েছে।আর তাছাড়া অভ্রর প্রস্তুতিও একদম পারফেক্ট ছিল।যথাসময়ে পরীক্ষা শেষ হয় আর বাড়িও ফিরে। আর এদিকে আজমল সাহেব অপেক্ষা করছেন কখন ছেলে ফিরবে!
বাড়িতে ঢোকার সাথে সাথেই আজমল সাহেব জিজ্ঞাসা করলেন,
– কিরে বাবা,পরীক্ষা কেমন হল?
– আলহামদুলিল্লাহ ভাল হয়েছে বাবা।
– চাকরিটা হবে তো?
– বাবা,তুমি একদম টেনশন কর না ত।ইনশাআল্লাহ আমি অনেকটা আশাবাদী।
– আল্লাহ ভরসা।যা ফ্রেশ হয়ে নে,খেতে আয়। তোর মা খাবার রেডি করছে।
– আচ্ছা বাবা!
ফ্রেশ হয়ে খাওয়ার টেবিলে বসে বসে চিন্তা করছে চাকরিটা হবে তোহ!বাবার ওষুধ, ভাইয়ের পড়াশোনা, দৈনন্দিন খরচাদি ইত্যাদি ইত্যাদি কত্ত খরচ! এসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে খাওয়া শেষ করে অভ্র।
এদিকে কোম্পানির বড় সাহেব অর্থাৎ নাফিস চৌধুরী আজকের প্রার্থী দের ফলাফল দেখছেন।বাছাই করে ১০ জন কে ভাইবার জন্য ডাকা হল।ভাগ্যের কি খেলা,ভাইবার লিস্টে অভ্রর নামটাও আছে!
৩।
যথারীতি ভাইবার দিন চলে এল।আজ কালো রংয়ের শার্ট ইন করে এসেছে অভ্র। সাথে ছাই রংয়ের প্যান্ট। দেখতে বলিউড অভিনেতাদের মত লাগছিল তাকে।
এদিকে অফিসের বস নাফিস চৌধুরীও এসেছিল অন্যরকম সাজে। তিনি এসেছেন সাদা শার্ট আর কালো প্যান্ট সাথে ব্লেজার।
এক এক করে ডাকা হল প্রার্থী দের। সবশেষে ডাক পড়ল অভ্রর। অভ্র একটু নার্ভাস ছিল।রুমে ঢোকার পরপর নিজেকে ঠিক করে নেয়।
-May I come in sir?
চোখ তুলে তাকাতেই নাফিস চৌধুরীর চোখ যেন চড়কগাছ! এ কাকে দেখছেন তিনি!ঠিক যেন দেবদূত! বলে রাখা ভাল,নাফিস চৌধুরী একজন সমপ্রেমী। যার জন্যেই পুরুষ PA খোঁজা। তিনি যেরকম চাইছিলেন ঠিক সেরকম ই অভ্র! অভ্রকে তিনি মন-প্রাণ ভরে দেখছেন! অভ্রকে দেখার পর তিনি কোথায় যেন হারিয়ে গেলেন। পূর্ণিমার আলো যেন ঠিকরে পড়ছে অভ্রর চেহারা থেকে! কিছুক্ষণের জন্য তিনি কোথায় যেন হারিয়ে গেলেন। পাশে থাকা অফিসের Manager এর কথায় ভাবনায় ছেদ পড়ে।
তারপরও চোখ সরছিল না তার অই রাজপুত্রের মত ছেলেটির মুখ থেকে! সাক্ষাৎ দেবদূত! মানুষ এত সুন্দর হয় কিভাবে!
নাফিস ইন্টারভিউ নেবে কী সে অভ্রকে দেখে যে পরিমাণ অবাক হয়েছে তাতে তার মুখ থেকে একটা শব্দও বেরোচ্ছে না।সে রীতিমতো ঘামছে।যেখানে অভ্রের নার্ভাস হওয়ার কথা সেখানে অভ্র দিব্যি চিল মুডে বসে আছে।এদিকে নাফিস বেচারার যায় যায় অবস্থা।সে অভ্রকে প্রশ্ন করার সময় তার গলা কাঁপছিল।উপস্থিত সবাই তার হেন আচরণে মোটামুটি অবাক।এর আগেও বহুবার বহুজনের ভাইবা নিয়েছে নাফিস।কিন্তু কখনও তার এমন অবস্থা হয়নি।সবাই নাফিসের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে যে সে নেক্সট কী বলবে অভ্রকে।কিন্তু সে বেশি কিছু বলতে পারল না।অল্প কয়েকটা প্রশ্ন করে সে অভ্রকে সিলেক্ট করার অনুমতি দিয়ে বেরিয়ে এলো।যদিও অভ্রের কোয়ালিফিকেশন যথেষ্ট ভাল,তবুও তাদের ফর্মালিটি অনুযায়ী আরও কিছু জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল বৈ কী!কিন্তু নাফিস তো তার নিজের অবস্থা বুঝতে পারছিল।সবচেয়ে বড় কথা,অভ্রকে তার ভালো লেগেছে।তাই আগেপিছে না ভেবে সে অভ্রকে তার অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়ে নিয়েছে।
এদিকে অভ্র তো বেজায় খুশি।কারণ,তার চাকরি টা হয়ে গেছে।তবে অভ্র নিজেও কিছুটা অবাক হয়েছে নাফিসের আচরণে।এত সহজে চাকরিটা হয়ে যাবে সে ভাবতে পারেনি।বাসায় গিয়ে সবার আগে অভ্র তার বাবা কে বলবে।কিন্তু খুশির সংবাদ দেওয়ার সময় মিষ্টিমুখ করাতে হয়।তাই অভ্র বাসায় যাওয়ার সময় কিছু মিষ্টান্ন কিনে নিয়েছে।
৪।
অফিসের জয়েনিং ডেট ছিল দুদিন পর।দুদিন পর অভ্র যখন অফিসে গেল।অফিসে ঢুকতেই ম্যানেজার নাফিসের কেবিন দেখিয়ে বলল সেখানে চলে যেতে সরাসরি।যেহেতু অভ্র নাফিসের ব্যক্তিগত অ্যাসিস্ট্যান্ট,সেহেতু অভ্রকে সবসময় নাফিসের সাথেই থাকতে হবে।তাই কালবিলম্ব না করে অভ্র নাফিসের কেবিনে চলে গেল।
-স্যার,আসব?
-আরে অভ্র!আসুন।
অভ্র ভেতরে গিয়ে নাফিসের ডেস্কের সামনে দাঁড়াল।নাফিসই কথা বলল,
-আরে আপনি দাঁড়িয়ে কেন?বসুন।
-জ্বি স্যার!
অভ্র বসতে বসতে নাফিস বলল,
-তারপর,মি.অভ্র কেমন লাগছে চাকরিটা পেয়ে?
-সত্যি বলতে স্যার,ভীষণ ভাল লাগছে।এই মূহুর্তে চাকরিটা ভীষণ দরকার ছিল।
-ওকে।তাহলে মন দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করুন।নিজেকে প্রমাণ করুন।এটাই আশা রাখছি।
-থ্যাংক ইউ স্যার।
অভ্র হালকা মুচকি হাসল।নাফিস অভ্রের হাসির দিকে লক্ষ করল।কী মিষ্টি এই হাসিটা।একটা সময় এই হাসি দেখার জন্য নাফিস কত কী না করত!আর আজ সেই মানুষটা নাফিসের সামনে বসে আছে।ভাবতেই অবাক লাগে নাফিসের!এটাই বোধহয় নিয়তি!নাফিস অভ্রকে চিনতো পূর্ব থেকে।ঠিক এক দুইদিন না,বহুবছর ধরে।
ইন্টারমিডিয়েটে থাকাকালীন সময়ে অভ্রকে চেনে সে।অভ্র যদিও চিনত না তাকে।কিন্তু নাফিস চিনত।তাদের স্কুল আর কলেজ একসাথেই ছিল।নাফিস তখন ইন্টারমিডিয়েট ২য় বর্ষে আর অভ্র সেবার নাইনে ছিল।অভ্র স্কুলে নতুন এসেছিল।হঠাৎ একদিন অ্যাসেম্বলিতে নাফিসের চোখ যায় অভ্রের দিকে।যেহেতু কলেজের স্টুডেন্টদের অ্যাসেম্বলি হয়না তাই নাফিস অভ্রকে ভালভাবে দেখতে পারছিল।অভ্র অ্যাসেম্বলি লিড করছিল।তাই অভ্রকে দেখতে বেশ সুবিধাই হচ্ছিল নাফিসের।তারপর কোনভাবে সে একে ওকে জিজ্ঞেস করে অভ্রের ঠিকানা জোগাড় করে।স্কুল,কলেজ যেখানেই সুযোগ পেত নাফিস সেখানেই অভ্রের দিকে তাকিয়ে থাকত।যেন কোন এক চৌম্বকীয় টান অনুভব করত সে অভ্রের প্রতি।অভ্রকে কখনও বলার সাহস নাফিসের ছিলনা যে সে নাফিস কে পছন্দ করে।খুব বেশিই পছন্দ করে।যেদিন অভ্র স্কুলে আসত না সেদিন নাফিস অভ্রের বাড়িতে চলে যেত।কখনও দেখতে পেত আবার কখনও পেত না।এভাবে একসময় নাফিসের এইচএসসি পরিক্ষা চলে আসে।পরিক্ষা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।তারপর ভর্তি পরিক্ষা নিয়ে আরও বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে।ভার্সিটি তে চান্স পাওয়ার পর শহর ছাড়তে হয় নাফিস কে।এরপর আর অভ্রকে কখনও দেখেনি নাফিস।খোঁজ নিয়েও তেমন কোন ফায়দা হয়নি।কৈশোরের ভাললাগা বড় হওয়ার সাথে সাথে ধামাচাপা পড়ে যায়।ভাললাগা আর ভালবাসায় রূপ নিতে সাহস পায়নি।তারপর নাফিসের জীবনে অবশ্য কেউ আসেনি।সে যে খুব আগ্রহী ছিল প্রেম ভালবাসার প্রতি তাও না।ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে ভাবতে প্রেম তার জীবনে উঁকি দেওয়ার সাহস পায়নি।আজ এতবছর অভ্রকে দেখে নাফিসের চিনতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হয়নি।সাথে সাথে সে তার ভাগ্যদেবতা কে ধন্যবাদও দিয়েছে প্রচুর।সেবার হয়নি তো কী হয়েছে,এবার নাফিস সর্বোত্তম চেষ্টা করবে অভ্রের প্রতি তার ভাললাগা প্রকাশ করতে।এবার নিশ্চয়ই ভাল কিছু হবে।নাফিস সে আশায় দিন গুনতে শুরু করল।
৫।
এদিকে অভ্র নাফিসকে দেখার পর বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ে।কে এই নাফিস?বড্ড চেনাচেনা লাগে তার কাছে।কৈশোরে পা দেওয়ার পরপরই অভ্র বুঝতে পারে তার ছেলেদের ভাল লাগে।একটা সময় নবম শ্রেণিতে ভর্তির পর সে খেয়াল করত দ্বাদশ শ্রেণির একটা ছেলে তার দিকে প্রায়ই অপলক তাকিয়ে থাকত।সে যদিও ঐ ছেলেটাকে চিনত না।অভ্রের এক সহপাঠীর ভাইও তখন দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত।অভ্র তার থেকে জেনেছিল সেই ছেলের নাম নাফিস।কিন্তু সেই নাফিস আর এই নাফিস কী একজন? কিন্তু চেহারায় তো মিল আছে অনেক।এতটা মিল কী থাকতে পারে কারোর মাঝে!তবে অভ্রের কাছে সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হল,যে তার বস নাফিসও তার দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে সুযোগ পেলেই।কোন ক্লায়েন্ট মিটিংয়ে গেলেও গাড়ির লুকিং গ্লাস দিয়ে বারংবার অভ্রের সাথে নাফিসের চোখাচোখি হয়েই যায়।অভ্রের বেশ ভালই লাগে ব্যাপারটা।বেশ কয়েকমাস যাবত এই ঘটনা নাফিস ভালই উপভোগ করে।নাফিস স্যারকেও যে তার ভাল লাগেনা তা নয়।কিন্তু এই নাফিস আর সেই নাফিস কী একজন? হলে তো মন্দ হয় না।অভ্র ভাবছে আর হাসছে।এরই মধ্যে নাফিস এসে পড়ল।
-কী ব্যাপার অভ্র সাহেব?হাসছেন যে?
-স্যরি স্যার,তেমন কিছু না।আসলে ছোটবেলার একটা ঘটনা মনে পড়ে গিয়েছিল তো তাই হাসি পেয়েছে।
-আচ্ছা!কী সেই ঘটনা?আমিও শুনে একটু হাসি।
-ইয়ে মানে স্যার থাকুক না।
-আরে বলো অভ্র।থাকবে কেন?আমিত তোমার বন্ধুর মতই।বলা যায় না আমাকে?
“আমিত তোমার বন্ধুর মতই” নাফিসের মুখে এই কথা শুনে অভ্রের হৃৎস্পন্দনের গতি বেড়ে গেল।সে মনে মনে কিছু একটা হিসেব মেলানোর চেষ্টা করেও পারল না।তারপর সে নাফিসকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-ঠিকআছে স্যার।তবে শুনুন,আমাদের কলেজে একটা ছেলে পড়ত নাফিস নামের।তখন আমি নাইনে ছিলাম আর সে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত।প্রায় সময় সে আমার দিকে তাকিয়ে থাকত দেখতাম।বেশ কয়েকবার আমাদের বাড়ির সামনেও ঘোরাঘুরি করেছে দেখেছি।সেই নাফিসের সাথে আপনার চেহারার বেশ মিল আছে।তাই হাসি পেয়েছিল।
-তা অভ্র,তোমার হাসি পেল কেন?সেই নাফিসের চেহারা কী বানরের মত ছিল?
-আরে আরে স্যার,তা নয়।সে বেশ সুন্দর ছিল।আসলে ঘটনার সামঞ্জস্যতা থাকার কারণে হাসি পেয়েছিল আর কী।স্যরি স্যার।
-অভ্র!
-জ্বি স্যার।
-তুমি কী জানো!আমিই তোমার সেই নাফিস।
অভ্র চোখ বড়বড় করে নাফিসের দিকে তাকাল।কিঞ্চিৎ অবিশ্বাসের নজর নিয়ে দেখতে লাগল সে নাফিস কে।আর নাফিস শেষে কী বলল?তোমার নাফিস?মানে অভ্রের নাফিস!একথা মনে করে অভ্রের হার্টবিট আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেল।নাফিস উঠে চলে গেল।কিন্তু অভ্র নাফিসের গমনপথের দিকে অপলক তাকিয়ে রইল।আর মৃদু হাসল।
পরিশিষ্ট-
অভ্র দাঁড়িয়ে আছে একটা পাহাড়ের চূড়ার উপর।দুহাত প্রসারিত করে চোখ বন্ধ করে আকাশের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে।নাফিস পেছন থেকে অভ্রকে জড়িয়ে ধরে আছে।আর মাঝেমাঝে একটু একটু করে অভ্রকে চুমু খাচ্ছে।আর অভ্রের সারা শরীর যেন বিদ্যুৎ বেগে শিরিশিরিয়ে উঠছে।
-এই নাফিস,কী করছ?আমি পড়ে যাব তো।
-আরে পড়বে কেন!আমি আছি না?তোমাকে শক্ত করে ধরে রাখব।কোথাও হারাতে দেব না।একবার হারিয়েছি,দ্বিতীয়বার নয় অভ্র।
-ভালবাসি নাফিস।
-ভালবাসি অভ্র,অনেক বেশি ভালবাসি।
লেখকঃ মৃগেন্দ্র কেশরী
প্রথম প্রকাশঃ সাতরঙা গল্প