What If She Was Here?

নিজের কিছু গল্প বলতে চাই৷ যারা হেটারোসেক্সুয়াল না,  তারাই এই ব্যথাগুলি অনুভব করতে পারে কিছুটা, যদিও দিনশেষে  পার্সন টু পার্সন ভ্যারি করে- যেকোন মানবিক অনুভূতিমাত্রই ৷ অন্য ডাইমেশন থেকে হয়তো একটা আনুপাতিক বুঝাপড়া আসে, অতটুকুই৷ কেউ হয়তো  সিম্প্যাথি দেখায়, তবুও আমাদেরই দুঃখের আলেখ্য হয়ে থাকে এসব নির্জন তীরের আঘাত৷ 

বয়স হয়ে গেছে৷ ৩০ এ পড়েছি৷ সো আশেপাশের মানুষের কৌতুহল কেন বিয়ে করছি না!  কতভাবে যে এসব পাশ কাটাতে হয় সে হিসেব আমার কাছেই থাকুক৷ যাই হোক, বাবা মাকে সামহাও চুপ   করিয়ে রাখতে পারি কিছুদিনের জন্য৷ যখন কথা উঠায় বলে দেই আরেকটু স্যাটেলড হয়ে নেই (তাদের দৃষ্টিতে আমি এনাফ স্যাটেল্ড, বরঞ্চ বেশি)৷ 

তো মূল আলাপ হচ্ছে সেই যে টিনেজ থেকে বুলিং এর শিকার হয়েছি সেইসব দহন আজো বহন করি৷ এই যেমন আজ!  আমার বাবা মায়ের চেয়ে আমার খালার চিন্তা বেশি কেন আমি বিয়ে করছি না? কেন কানে ফুল পড়ি? কেন শর্ট ড্রেস আপে থাকি? 

সে আমাকে এমনভাবে ঘায়েল করতে চাচ্ছিল যে typical  straight রা যেভাবে সংবেদনশীল মানুষকে মাইজ্ঞা, গার্লিশ, মেয়েলি, হাফ লেডিস বলে। সে সেভাবেই এপ্রোচ রাখছিল আমার সাথে আমার বাবা মায়ের সামনে৷ আমি যথেষ্ট ঠাণ্ডা মেজাজী মানুষ কিন্তু আমার অস্তিত্বে আঘাত হানলে আমি ছাড়ি না৷ সে আমাকে চূড়ান্তভাবে বুলিং করে গেছে আমার বাবা মায়ের সামনে৷ 

একটা টাইমে প্রচণ্ড কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছিল (আমি সহজে কাঁদি না)৷ বুঝতেই পারছেন সে কিভাবে আমাকে এই অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছিল সাইলোজিক্যালি৷ আমি নিজের সাথে নিজের বুঝাপড়া সারছিলাম সেখানেই৷ নিজেকে নিয়ন্ত্রণে এনে তাকে আমি জিজ্ঞেস করি??  

নারীত্ব কি?  পুরুষত্ব কি? 

ফুলের সাথে নারীত্বের কতটুকু সম্পর্ক আর পুরুষত্বের কতটুকু দুরত্ব?

ফুল যদি সফটনেস, হৃদয়ের আকুতি কিংবা মানবিক অনুভূতির বাহক হয় কিছুটা হলেও তাতে আমি গর্বিত৷ এন্ড আমি আরো বেশি পড়বো৷ তাই করলাম, বিকেলে বের হয়ে বাইকের সামনে ফুল কানে গুঁজলাম৷ নয়নতারা!  

আমার মা বারবার বলছিল আমাকে চুপ হতে৷ খালা তো, তার সাথে এভাবে কথা কেন বলছি৷ আমি আমার মায়ের সিচুয়েশনটা বুঝতে পারছিলাম কিন্তু আমি তো আমার  এই প্রশ্নে আপোসের মানুষ না৷ 

আমি জানি কি পরিমাণ বুলিড হতে হয়েছি আমাক্ব সেই টিনেজ থেকে৷ সহ্য করতে করতে একটা সময় থেকে স্ট্রেইট মানুষদের থেকে দূরে সরে এসেছি৷ সব কাজিন, স্কুল -কলেজ-ভার্সিটির ক্লাসমেটদের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি হয়েছে শুধু একটা পরিচয়ের জন্য৷ আমি যে বই পড়ি, প্রচুর ভালবাসি সাহিত্য, গান পাগল, শিল্পের প্রতি যে আমার দুর্নিবার আকর্ষণ, সিনেমার প্রতি আমার যে মুগ্ধতা, এই যে লিখালিখি করি সেই প্রাইমারী থেকেই (জানি না কী লিখি /কেমন লিখি), বাগান করি – এসবের প্রতি তাদের কোন আগ্রহ নেই!  তাদের আগ্রহ আমার যৌন পরিচিতি৷ 

আমি এসব ব্যথা খুব একটা বলি না কাউকে৷ ইচ্ছেই না৷ কারণ এতটা পথ তো একাই চলে এসেছি৷ নিজেকে ভালবাসি৷ নিজেকে প্রচণ্ড ভালোবাসি৷ তাই বিকেলে বাতাস লাগিয়ে সিগারেট টেনে ফুল গুঁজে একটা কিছু লিখে ফেলছিলাম সেসময় —

“জীবনে যেসব ক্ষত বয়ে বেড়াই,

সেসবের উপর কোমল-গান্ধারের মীড় এসে লাগে- 

একান্ত যেসব আত্মক্লেশ, যেসব অভিমান-  এলজেব্রার সূত্রমতে মিলাতে পারি না আজও;

সেইসব একান্ত-বিধুর ফুলের উপর বসন্তের বাতাস হয়ে উঠে  সিজোফ্রেনিক ঝড়!  

ভুলে থাকতে চাই যেসব কুহক, যেসব চক্রবৃদ্ধি আলাপ, যেসব স্ট্রেইট লাইনের তামাকপাতা,  তথাগত তীব্র কটাক্ষ-বানের শব্দপুঞ্জ- 

সেসব এসে গায়ের জামার উপর নিস্তরঙ্গ আস্তানা গাড়তে চায়। 

পৃথিবীর নাকি অনেক বয়স, 

হয়তো তার সাথে সেইসব মানুষের! 

কিন্তু সেগুন গাছের মতো তারা সমস্ত আলোক ভোগ করতে চায় আগ্রাসী দুপুরে  ; কেড়ে নিতে চায় তুমুল গৌরবে  জনান্তির প্রাকৃত নিকেতন। 

ভুলে ভুলে অনেক সময় ব্যয় করেছি, 

ছায়ার সাথে পাঞ্জা লড়েছি চৈত্রসংক্রান্তির রাতে- বিগত  বিছানায়!  

ভুলতে চেয়েছি শিশুদের মুখ, মায়া ; 

অম্লান জলে আঙুল ঢুবিয়ে রেখেছি কত রৌদ্রমাখা সেতুতে বসে ; 

স্ট্রেইট মানুষের কাছ থেকে অনেক দূরে – কোন নক্ষত্রের মুখের দিকে চেয়ে থাকতে চেয়েছি – 

তীর বিদ্ধ পাখির মতো মাটিকে আঁকড়ে ধরেছি তোমাদের স্বাক্ষরযুক্ত ঈশ্বরের নামে।”

Source: BAH( Bangladesh Against Homophobia)

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.