
শিরিন মুন্নি
“এসব কী হচ্ছে রিফাত?”
আচমকা চিৎকারে আমি আর রামিম দুজনেই চমকে উঠলাম। ঘরের ভেতর হঠাৎ রুহিকে দেখে ভয়ে আমাদের পায়ের তলার মাটি যেন সরে গেল। —ছি! ভাবতেও ঘেন্না হচ্ছে রিফাত তুমি আমার স্বামী। মেয়েদের মতো শাড়ি ব্লাউজ পরে আমার ভাইয়ের সাথে! ছি!
রুহির কথা শুনে আমি মাথা নিচু করে রইলাম।
ভয়ে হাত পা কাঁপছে আমার। এতদিন যে ভয়ে ছিলাম শেষে সেটাই সত্যি হলো। —রামিম তুই কি করে পারলি তোর একমাত্র বোনের এত বড় ক্ষতি করতে? তুই আমার ভাই হয়ে আমার নিজের প্রতি নিজের ঘেন্না হচ্ছে। শেষমেষ নিজের দুলাভাই এর সাথে এসব!
—দেখ আপা আমি মানছি এইটা অন্যায়। কিন্তু এটাই সত্য আমি রিফাতকে ভালবাসি। —লজ্জা করছে না তোর এই কথা বলতে? পুরুষ হয়ে আরেকটা পুরুষ এর সাথে। ছি ছি ছি! আমি এখনি আব্বা আম্মাকে ডাকছি। ওরাই তাদের ছেলের আর তাদের হিজড়া জামাই এর বিচার করবে।
ঘণ্টাখানিকের মধ্যে রুহির বাবা, মা, মামা এসে বাসায় হাজির। আমি এখনো সেই ব্লাউজ আর পেটিকোট পরা অবস্থায় আছি।
লজ্জায় অপমানে মাথা উঁচু করার শক্তি আমার নেই।
আমার পাশে রামিম দাঁড়ানো।
আমার শ্বশুর, শাশুড়ি আর মামা শ্বশুর সোফায় আমাদের মুখো মুখি বসা। আমার শাশুড়ি আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছেন।
শুরুটা রুহিই করলো, আমার আগেই এই হিজড়াটার উপর সন্দেহ হয়েছিলো, আমার মেকাপ, ড্রেস কোনোকিছুই ঠিক মতো পেতাম না। তবে যেটা ধারণার বাহিরে ছিল সেটা হলো এই দুইজনের… আমার বলতেও লজ্জা করছে।
আস্তে আস্তে সব কিছুই বলে দিলো রুহি।
রুহির কথা শেষ হতেই আমার শ্বশুর রামিমকে উঠে এসে চড় মারলেন। —লজ্জা হওয়া উচিত! নিজের বোনের ঘর এইভাবে ভাঙলি?
থাপ্পড় খেয়ে রামিম বললো, আমরা পরস্পরকে ভালোবাসি আব্বা।
তারপর আমার দিকে ফিরে বললো, আর যা করেছি রিফাতের সম্মতিতেই করেছি। রুহি চিৎকার করে বললো, ও তাই বুঝি এতো ভালোবাসা তোদের, ওই হিজড়াটার সাথে সেক্স করতেও রুচিতে বাঁধেনি!
—মুখ সামলে কথা বল আপু, তুই আমাকে যা খুশি বল কিন্তু রিফাতকে হিজড়া বলবি না। ও যা করেছে আমার কথায়।
—ওয়াও গ্রেট! হাততালি! দরদ উথলে পড়ছে!
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে, এতোই যখন দরদ আমি আজকেই রিফাতকে ডিভোর্স দিবো। পারবি বিয়ে করতে ওকে?
সবাইকে অবাক করে দিয়ে রামিম জবাব দিলো, আমি রাজি আছি। আমি রামিম আর রুহির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।
—বেশ তাই হোক, আব্বা আপনারা কালকের মধ্যেই রামিম আর রিফাতের বিয়ের ব্যবস্থা করেন। আজকের পর রিফাতের সাথে আমার কোনো সম্পর্কনেই, আর যদি কোনো সম্পর্ক থাকেও সেটা হবে আমাদের ননদ ভাবীর।
সব কিছুর ফয়সালা হয়ে গেলো।
বিয়ের পর রিফাতকে রামিমের বউ হয়ে থাকতে হবে।
নীরব দর্শক হয়ে থাকা ছাড়া আমি কিছুই বলতে পারলাম না।
আমার ভেতরটা চুরমার হয়ে যাচ্ছে।
রুহি ওর বাবা মার সাথে বাসায় চলে গেলো।
আমি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম এখনো সেখানেই দাঁড়িয়ে আছি।
চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে আমার।
রামিম আমার কাছে এসে আমার মুখ তুলে আমার চোখের পানি মুছে বললো, ভয় পেয়ো না, তোমার পাশে আমি আছি সারাজীবন।
রামিম বেরিয়ে যেতেই উচ্চস্বরে কান্না করলাম। নিজের হাতে গড়া সংসার ভেঙে দিলাম আমি। সারারাত চোখের পানি ফেললাম। এক ফোঁটা ঘুমাতে পারিনি। সকাল বেলা রুহি বাসায় এসে হাজির। হাতে একটা কাগজ আর কলম আমাকে দিয়ে বললো, নাও সাইন করে দাও।
আমি কাগজটা হাতে নিয়ে দেখলাম ডিভোর্সপেপার।
আমি কাঁপা কাঁপা হাতে সাইন করে দিলাম।
ভেরি গুড। চলো এবার। রুহি বললো।
আমি ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কোথায়?
—পার্লারে, আজকেই তোমাদের দুইজনের বিয়ে হবে।
করুণ দৃষ্টি নিয়ে রুহির দিকে তাকালাম আমি।
এটাতো আমি চাইনি।
ঘণ্টাখানিক পরের কথা।
বৌ সাজে রামিমের পাশে বসে আছি। আমার পরনে বিয়ের লাল কাতানের শাড়ি, গা ভর্তি গহনা। কান ফুটো করে ঝুমকা আর নাক ফুটো করে সেখানে সোনার নাকফুল পরানো হয়েছে আমাকে।
পাশে রামিম বর সেজে আছে।
সাথে রুহি আর আমার শ্বশুর শাশুড়ি।
আমাকে কবুল বলতে বলা হচ্ছে।
আমার মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না।
রুহির দিকে তাকালাম। ও অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে আছে।
আমি কবুল বললাম।
বিয়ে শেষে বাসর ঘরে বসে আছি আর অতীতের কথা চিন্তা করছি। আমাদের বিবাহিত জীবন বেশ ভালো ছিল আর সুখে র ছিল। এতো সুখে র মধ্যেও আমি আমার অনেক অভ্যাস ছাড়তে পারলেও ক্রসড্রেসিং ছাড়তে পারিনি। ছোট থেকেই মেয়েদের পোশাকের প্রতি দুর্বলতা কাজ করতো আমার। যখন থেকে বুঝতে শিখলাম তখন থেকেই নিজেকে আবিষ্কার করলাম অন্যরকমভাবে। আম্মুকে লুকিয়ে কত তার শাড়ি পরেছি তার হিসেব নেই। এমন কি আম্মু মারা যাওয়ার পর তার পোশাক বাসায় পরতাম।
রুহির সাথে বিয়ে হওয়ার পর প্রথম প্রথম নিজেকে সামলে রাখতে পারলেও বেশি দিন ধরে রাখতে পারিনি। রুহিকে লুকিয়ে ওর শাড়ি-চুড়ি পরা শুরু করলাম, বিশেষ করে রুহি যখন বাসায় থাকতো না।
সেই রকম একদিন অফিস শেষ করে তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসি। রুহি ওর বান্ধবীর বাসায় কোনো এক কাজে ছিলো। এসে আগে গোসল করে বেডরুমে যাই। এসে রুহির ব্লাউজ পেটিকোট পরা শুরু করি। তারপর শাড়িটা সুন্দচর করে পরে অনলাইন থেকে কেনা উইগ যেটা আমি লুকিয়ে রাখি রুহির কাছ থেকে সেটা বের করে মাথায় লাগাই।
এরপর মেকআপ, সাজুগুজু।
হঠাৎ করেই রুহির ভাই রামিম রুমে প্রবেশ করে!
জোশের ঠেলায় দরজা বন্ধ করতে ভুলে গিয়েছিলাম আমি।
দুইজনেই মুখোমুখি । রামিম কিছুক্ষণ অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে গড়গড় করে হাসি দিয়ে বললো, বাহ দুলাভাই আপনাকে তো বেশ লাগছে এই সাজে। ভয়ে আমার মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছিলো না।
কী বলবো আমি।
রামিম জিজ্ঞেস করলো, আপা জানে এসব?
আমি করুণ কণ্ঠে রামিমকে বললাম, প্লিজ রামিম কাউকে বলো না। তোমার আপাকেও না।
রামিম রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো, আচ্ছা দুলাভাই কাউকে বলবো না কিন্তু আপনাকে যে আমার কথা মত চলতে হবে।
এই কথা বলতে না বলতে রামিম আমার ঠোঁটের সাথে ওর নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দিলো, আমি চুম্বনরত অবস্থায় ওর দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম। অনেকক্ষণ পর রামিম আমার ঠোঁট থেকে ঠোঁট ছাড়াল।
আমি হাঁপাতে হাঁপাতে বললাম, এসব কী রামিম? তুমি ভুলে যাচ্ছো আমি তোমার দুলাভাই।
—ওহ তাই, এখন সত্যি আপনি আমার দুলাভাই আছেন?
আমি আর কথা বলতে পারলাম না।
—আমি আপনাকে ভালোবাসি দুলাভাই!
চমকে উঠলাম রামিমের কথায়।
—যেদিন আপনাকে প্রথম দেখেছি সেদিন। আমি কাউকে বলতে পারি না আমি কেমন, কেউ জানার চেষ্টাও করেনি, আমার মেয়েদের প্রতি কোনো আকর্ষণ নেই। দুলাভাই, আপনার প্রতি আছে।
রামিম এর কথা শুনে আমার পা থেকে মাটি সরে গেলো।
আরো অবাক হলাম যখন রামিম বললো, আজ থেকে আপনি আমার আনঅফিসিয়াল বৌ দুলাভাই। আর এখন থেকে আমি আপনাকে আর দুলাভাই না, নাম ধরে ডাকবো। ওকে রিফাত?
—দেখো রামিম আমি তোমার বোনের স্বামী।
—হুম নিষেধ করছে কে? থাকেন। সেই সাথে আমার বৌ।
এরপর থেকে যখনই বাসায় একা থাকতাম, রামিম বাসায় চলে আসতো, তখন আমার যদি ইচ্ছে না থাকতো তবুও রামিম এর জন্য শাড়ি পরে সাজুগুজু করে মেয়ে সাজতে হতো। প্রথম প্রথম রামিম চুমু পর্যন্ত বিদ্যমান থাকলেও ধীরে ধীরে সে সঙ্গমে লিপ্ত হওয়া শুরু করে, এমন কি হোটেলে পর্যন্ত নিয়ে রামিম আমার সাথে যৌন সঙ্গম করেছে।
অবশ্য যা করতাম সবকিছু রুহির আড়ালে।
কিন্তু সব কিছু চাইলেও সবার কাছে লুকানো যায় না।
যার পরিণামে রুহির কাছে ধরা খেলাম দুইজন।
ঘরের চাবি সব সময় আমার আর রুহির কাছে থাকে আলাদা আলাদা। সেদিন রুহি মার্কেটে গিয়েছিলো, সেই ফাঁকে রামিম বাসায় আসে। আমি সবে শাড়ি পরে রেডি হয়েছিলাম আর রামিম চুমুখেয়ে আমার শাড়ি খুলতে শুরু করে ঠিক তখনই রুহি চলে আসে।
এই দিনটার জন্য কত কাল অপেক্ষা করলাম, রামিম এর কথায় বাস্তবে ফিরলাম আমি।
অতীত নিয়ে ভাবতে ভাবতে বাস্তবের কথাই ভুলে গেলাম আমি।
মাথা তুলে রামিমের দিকে তাকালাম আমি।
এই মুহূর্তে সামনে থাকা মানুষটা আমার নিজের স্বামী অথচ কাল পর্যন্ত ছিল আমার শালা।
আর নিজের বৌ আমার ননদে পরিণত হয়েছে।
রামিম আমার ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো, এরপর সারারাত ধরে চললো সঙ্গম। ঘুমাতে ঘুমাতে বেশ রাত হয়ে গেলো।
সকালে দরজায় খটখট আওয়াজে ঘুম ভাঙলো। ঘুম ভাঙার পর শুধু ব্লাউজ আর পেটিকোটে আবিষ্কার করলাম নিজেকে। কোনোমতে শাড়িটা পেঁচিয়ে দরজা খুললাম। সামনে রুহি দাঁড়িয়ে আছে।
আমার দিকে তাকিয়ে বললো, আটটা বাজে ভাবী, এই বাড়িতে মেয়েদের এতক্ষণ সময় ধরে ঘুমানোর নিয়ম নেই, মা ডাকছে রান্নাঘরে।
চলে যেতে যেতে থেমে আবার বললো, আর হ্যাঁ অবশ্যই দয়া করে শাড়িটা পাল্টে এসো।
রুহি চলে গেল। আমি তখনো নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে রইলাম।
নিজের বৌ-এর কাছে আমি এখন তার ভাবী।
কি স্বাভাবিকভাবেই না আমার সাথে কথা বলছে!
রুমে এসে গায়ের শাড়িটা বদলে টিয়া রঙের শাড়ি পরে রান্নাঘরে গেলাম। শাশুড়ির সামনে এসে দাঁড়ালাম। শাশুড়ি আমাকে দেখামাত্র ঠাস করে গালে থাপ্পড় দিয়ে বললো, মুরব্বিদের সামনে মাথায় ঘোমটা দিতে হয় সেই শিক্ষাটুকু নেই তোমার? থাপ্পড় খেয়ে হতভম্ব হয়ে রইলাম আমি।
থাপ্পড় এর আওয়াজ শুনে রুহি রান্নাঘরে এলো। এসে জিজ্ঞেস করলো, কী হয়েছে মা?
—কী হয়েছে তোর ভাইয়ের বৌকে জিজ্ঞেস কর। মুরব্বিদের সামনে মাথায় ঘোমটা দিয়ে চলাফেরা করতে হয় সেই শিক্ষাটুকু তার নেই।
আমি করুণ চোখে রুহির দিকে তাকালাম।
রুহি কিছু না বলে চলে গেলো।
আমি মাথায় কাপড় দিয়ে শাশুড়ির হাতে হাতে কাজ করতে লাগলাম।
নাস্তার সময় সবাই খেতে বসলে নিজের বসার সুযোগ হলো না আমার। সবাইকে নিজ হাতে সব কিছু বেড়ে দিতে হয়েছে আমাকে, এমন কি রুহিকেও। অথচ বিয়ের পর সবসময় রুহি আমাকে সব খাবার বেড়ে দিতো। আর আজ তার উল্টো।
সবাই নাস্তা খাওয়া শেষে নিজের খাওয়ার সুযোগ হলো। তাও ভালোমত খেতে পারলাম না, শাশুড়ির ডাক পড়লো আবার রান্নাঘরে।
কোনোমতে গিলে রান্নাঘরে গেলাম আবার।
রাতের বেলা সব গুছিয়ে বেডরুমে গেলাম। সারাদিনের ক্লান্তি এসে ভর করেছে নিজের উপর।
একদিনেই আমার এই হাল, সারাজীবন এখনো পড়ে আছে।
আসলে মেয়েলি জীবন খুব কষ্টের।
ঘরে ঢোকার সাথে সাথে রামিম আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো।
হাজার চেষ্টা করেও বাধা দিতে পারিনি, কেননা নিজের শরীরে এক ফোঁটা শক্তিও নেই আমার।
কখন চোখ লেগে এসেছিল জানি না।
যখন ঘুম ভাঙলো তখন ভোর ছয়টা।
নিজেকে উলঙ্গ আবিষ্কার করলাম আমি।
বাথরুমে গিয়ে গোসল করে নিলাম।
এরপর সবুজ রঙের ব্লাউজ পেটিকোট পরে শাড়ি পরে একটু সাজগোজ করে নিলাম। সবশেষে মাথায় কাপড় দিয়ে রান্না ঘরে ছুটলাম।
বেশ কিছুদিন এভাবেই কেটে গেলো।
সব কিছু মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় আছি।
একদিন রাতের বেলা খাবার সময় আমার শ্বশুর খেতে খেতে রুহিকে বললো, অনেক তো হলো রুহি, এবার আরেকটা বিয়ে করো।
—এখন এসবে মন নেই বাবা। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললো, তাছাড়া নতুন করে কাউকে আর বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে না।
—তোমার যা ভালো মনে হয়, কিন্তু জীবন তো আর এভাবে পড়ে থাকবে না। —চলুক না যেভাবে আছে সেভাবে। আপাতত আমি চাকরিই করতে চাই বাবা। পরেরটা পরে ভাবা যাবে।
—তোমার যা ভালো মনে হয় করো।
খাবার শেষে যে যার মত উঠে চলে গেলো।
রুহি তখন একা, রুহিকে আমি বললাম, জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না রুহি, আমার মনে হয় তোমার নতুন করে কাউকে নিয়ে ভাবা উচিৎ।
আমার কথায় রুহি কড়া গলায় বললো, আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না ভাবী তুমি বরং তোমার স্বামীকে নিয়ে ভাবো।
রুহি উঠে চলে গেলো।
রুহির কথাগুলা গায়ে কাঁটা দিয়ে গেলো আমার।
রুমে আসার পর সেই প্রতিদিনের স্বভাবমতো রামিম আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। আজ আমার মধ্যে কি হয়েছিলো জানি না, রামিম শাড়ি পেটিকোট খুলতে যেতেই গায়ের যত শক্তি ছিল সবটা দিয়ে আমি রামিমকে জব্দ করার মিশনে নামলাম আজকে।
মনের মধ্যে যত জ্বালা আছে সবকিছুর শোধ নিলাম আমি, যদিও রামিম চেষ্টা করছে ও নিজেকে আমার থেকে ছাড়ানোর জন্য কিন্তু আজ আর পারবে না। নিজেকে সামলাতে না পেরে বেহুঁশ হয়ে গেছে রামিম।
আমি ফ্রেশ হয়ে এসে শাড়ি পরে ঘুমিয়ে গেলাম।
ওইদিনের পর রামিম আমার অনুমতি ছাড়া আমার কাপড় খোলার সাহস পায় না। রুহি চাকরিতে ঢুকেছে , আর আমার সংসার এই চলে যাচ্ছে।
জানি না এই জীবন থেকে মুক্তি পাবো কিনা।
এই জীবন আমি চাইনি।
জানি না এর থেকে মুক্তি পেয়ে নতুন কোনো জীবন পাবো কি না আমি।
প্রথম প্রকাশ: সমারূঢ়
(মন্দ্র প্রকাশিত বাংলাদেশের প্রথম কুইয়ার ছোটগল্প সংকলন)