
নীলা
[এই লেখাটি মূলত বছর কি দু’বছর আগের লেখা। আগের লেখার সাথে খানিকটা সংযোজন-বিয়োজন করে আবারো লিখলাম ]
রূপান্তরকামিতা এখন আর অজানা কোন বিষয় নয় সাধারণ মানুষের কাছে। টিভি, সংবাদপত্র, সিনেমা বা ফেসবুকের কল্যাণে সাধারণ মানুষদের অনেকেই এ ব্যাপারে কিছুটা হলেও জানেন। অবশ্য এও সত্য, ভুল জানেন বা বিরূপ ধারণা রাখেন তারচেয়েও অনেক বেশি মানুষ। সাহিত্যে এই বিষয়ের স্থান কতটুকু?
ইন্টারনেট দুনিয়ায় আগে এ নিয়ে যেসব বাংলা গল্প পেতাম তার বেশিরভাগই ছিল ইরোটিক সাহিত্য। অস্বীকার করব না সেই ফ্যান্টাসিধর্মী লেখাগুলোও সাহিত্যের অংশ। তবে, ফেসবুকের কল্যাণে এই বিষয়ে জীবনমুখী বা মননশীল ভাবধারার লেখা এখন বাংলা ভাষায়ও পড়ার সুযোগ হচ্ছে বেশ। ফেসবুক বা অনলাইনের বাইরে মূল ধারার সাহিত্যে কি রূপান্তরকামিতার প্রসঙ্গ আসেনি?
আমি অবশ্য বাংলা ভাষায় লিখিত বা অনুবাদকৃত সাহিত্যের কথাই বলছি কারণ আমার পড়ার গণ্ডি বলতে গেলে এতেই সীমাবদ্ধ। সেক্ষেত্রেও বলব, এসেছে তবে তা সংখ্যায় অনেক কম। আগে বরং বলি পৌরাণিক সাহিত্যের কথা যার লিখিত এবং অনুবাদকৃত রূপ বাংলা ভাষাতেই পাওয়া সম্ভব।
প্রাচীন সমৃদ্ধ সাহিত্যের মধ্যে গ্রিক মিথোলজি, ভারতীয় পুরাণ কিংবা আরব্য সাহিত্য উল্লেখযোগ্য। এ ধারার সাহিত্যে তখনকার মানুষের বাস্তব জীবনের সাথে সাহিত্যিকদের বা কাহিনীর স্রষ্টাদের কল্পনার সুন্দর মিশেল আছে। এসব সাহিত্যে নারী বা পুরুষের লিঙ্গ পরিবর্তনের অনেক উদাহরণ মেলে। অবশ্য সাহিত্যিকদের কল্পনায় এ নিয়ে যত কাহিনী এসেছে তাতে লিঙ্গ পরিবর্তনের ব্যাপারটি মিরাকল(Miracle) বা অলৌকিক উপায়ে হয়েছে। সে আমলে তো আর চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রামাণিকভাবে খুব একটা উন্নত হয়নি, তাই লিঙ্গ পরিবর্তন চিকিৎসা বিজ্ঞানের মাধ্যমে সম্ভব ছিল না বলেই ধরে নিচ্ছি। তাই সাহিত্য-স্রষ্টার কল্পনাও অলৌকিকতার আশ্রয় নিয়েছে। চিরকালীন এই বিষয়টি সে সময়ের সাহিত্যিকদের কল্পনায়ও ফুটে উঠেছে। তাই রূপান্তরকামিতাকে কেউ যদি ভেবে থাকেন আধুনিক সমাজব্যবস্থার একটা বিকৃতি, তবে তাকে আবার নতুন করে ভাবতে অনুরোধ করব। সাহিত্য হচ্ছে সমাজের আয়না। তাছাড়া, শুধু প্রাচীন সাহিত্য নয়, প্রাচীন সমাজব্যবস্থায়ও রূপান্তরকামী মানুষের উদাহরণ তো পাওয়াই যায়।
প্রথমেই আসি গ্রিক মিথোলজিতে। গ্রিক দেবী আর্টেমিসকে নগ্ন অবস্থায় স্নান করতে দেখে ফেলেছিল সাইপ্রেটিস নামে এক ব্যাধ। রেগে গিয়ে আর্টেমিস তাকে অভিশাপ দিয়ে নারীতে পরিণত করেছিলেন। আবার অন্য একটি কাহিনীতে আইফিসকে পুরুষ হিসেবে বড় করেছিলেন তার মা। এক পর্যায়ে আইফিস এক নারীর প্রেমে পড়েন। কিন্তু, বিয়ে করবেন কী করে তিনি তো শারীরিকভাবে নারী!
বিয়ের আগের দিন তার মা দেবী আইসিসের কাছে বর চেয়ে আইফিসকে পুরুষে পরিণত করেন এবং আইফিস সেই মেয়েটিকে বিয়ে করে সুখী হন। অন্য একটি চরিত্র টাইরেসিয়াসকে সঙ্গমরত অবস্থায় এক জোড়া সাপের একটিকে হত্যার দায়ে দেবী হেরা নারীতে রূপান্তরিত করেছিলেন। যদিও অন্য একটি মতে, নারী নাকি পুরুষ, যৌনতায় কে বেশি আনন্দ পায় তা জানার জন্য জিউস আর হেরা টাইরেসিয়াসকে নারীতে রূপান্তরিত করেছিলেন। আরব্য রজনীর একটি গল্পেও আইফিসের মত একটি কাহিনী আছে যাতে এক শাহজাদীকে পুরুষত্ব দান করেছিল এক জ্বীন। অন্য একটি গল্পে, এক রাজপুত্রকে এক জাদুর ঝর্ণার জল খাইয়ে নারীতে রূপান্তরিত করেছিল চক্রান্তকারী এক মন্ত্রী পুত্র। কারণ তারা দুজনেই অন্য এক বাদশাহের কন্যাকে ভালোবাসতেন। পরীদের সহায়তায় পুনরায় আবার সেই ঝর্ণার জল খেয়ে পুরুষত্ব ফিরে পেয়েছিলেন বাদশাহজাদা।
ভারতীয় পৌরাণিক সাহিত্যে রূপান্তর বা লিঙ্গান্তরের ভূরিভূরি ঘটনা পাওয়া যায়। সে মহাভারত, রামায়ণ বা পুরাণই হোক, বেতাল পঞ্চবিংশতি বা জাতকের গল্প কিংবা জৈন সাহিত্যেই হোক, সব জায়গাতেই ছুঁয়ে গেছে। মহাভারতের শিখন্ডীর কথা অনেকেই জানেন। শিখন্ডী নারী হয়ে জন্ম নিলেও পুরুষ হিসেবে বড় হয়েছিলেন। পরে বিয়ের পর তার স্ত্রী সত্যটা জানতে পেরে তাকে পরিত্যাগ করেন। তখন এক যক্ষ তাকে পুরুষত্ব দান করেছিলেন। অমৃত মন্থনের পর অসুরদের ভোলাতে বিষ্ণুর মোহিনীরূপ ধারণ লিঙ্গ পরিবর্তনের আরেকটি উদাহরণ। কৃষ্ণের এই মোহিনীরূপ ধারণ একবার নয় বারবারই হয়েছে অসুরদের বোকা বানাতে। মহাভারতের তামিল লেখ্যতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনপু্ত্র ইরাবানের জন্য এক রাতের জন্য মোহিনীরূপ ধারণ করে তার স্ত্রী হয়েছিলেন এমন কাহিনীও রয়েছে। এছাড়া, ইল রাজার ইলা হবার ঘটনা, নারদের নারদী বা অর্জুনের অর্জুনী হবার ঘটনা; ভারতীয় পৌরাণিক সাহিত্যে লিঙ্গ পরিবর্তনের এমন উদাহরণ নিয়ে বলতে গেলে একটা আলাদা বই লেখা যায় বোধহয়। সরাসরি রূপান্তরকামিতা প্রকাশ না করলেও বৈষ্ণব দর্শণের একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কৃষ্ণ তথা পরমাত্মাকে কিভাবে আরাধনা করা হচ্ছে সেই বিষয়ে। বৈষ্ণব দর্শণের মতে কৃষ্ণকে নানাভাবে আরাধনা করা যায় যার মধ্যে আছে দাস্যভাব, বাৎসল্যভাব, সখীভাব এবং রাধা বা মধুরভাব প্রভৃতি। এর মধ্যে রাধাভাবই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ সাধনা যেখানে সাধক নিজেকে রাধা ভেবে কৃষ্ণকে তার প্রেমিক হিসেবে কামনা করেন। এই প্রেমকে তারা জৈবিক প্রেম হিসেবে যদিও ব্যাখ্যা করেন না, বরং জীবাত্মা এবং পরমাত্মার মধ্যে বিশুদ্ধ প্রেমভাব এবং নিজের পুরুষত্বের যে অহমিকা তা বিসর্জন দিয়ে একান্ত সমর্পণের প্রকাশ হিসেবেই ব্যাখ্যা করেন। রাধাভাব বা সখীভাব সাধনায় যেহেতু সাধক নিজেকে কৃষ্ণের প্রেমিকা বা গোপীদের সাথে তুলনা করেন তাই নিজেকে নারীই ভাবেন এবং শুধু প্রেম এবং সাধনায় নয় বরং অনেক ক্ষেত্রে পোশাক ও জীবনাচরণেও নারীত্বই ধারণ করেন। এই ভাবের সাধনা এখন সম্ভবত খুব বেশি দেখা যায় না। তবে, রামকৃষ্ণ বা শ্রীচৈতন্যও এই ভাবের সাধনা করেছেন। এসএম সুলতান গত শতকের ষাটের দশকে রাধাভাবে শাড়ি আর নূপুর পরে সমাজকে একরকম উপেক্ষা করেই বেশ কিছুদিন কাটিয়েছেন। এসব তাঁদের জীবনীসাহিত্যে পাওয়া যায়।
আধুনিক বাংলা সাহিত্যে রূপান্তরকামিতার উল্লেখ কি নেই?
অল্প হলেও আছে। অজয় মজুমদার ও নিলয় বসু লিখেছেন ‘ভারতের হিজড়ে সমাজ’। সেটি একটি প্রামাণ্য গবেষণাধর্মী গ্রন্থ যা মূলত হিজড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে লেখা। অভিজিৎ রায়ের ‘সমকামিতা একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান’ বইয়ে একটি অধ্যায়ই রয়েছে রূপান্তরকামিতা ও উভকামিতা নিয়ে। প্রবন্ধের বইয়ের বাইরে গল্প উপন্যাসেও আছে রূপান্তরকামিতার উদাহরণ। স্বপ্নময় চক্রবর্তীর ‘হলদে গোলাপ’ আনন্দ পুরস্কার পাওয়া একটি বৃহদায়তন উপন্যাস। এই বইয়ে রূপান্তরকামিতা সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত লিখেছেন স্বপ্নময়। উপন্যাস হলেও তথ্যের দিক থেকে এই বই কোন গবেষণাগ্রন্থের চেয়ে কম মূল্যবান নয়। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘মায়ামৃদঙ্গ’ যদিও সমকামী সম্পর্ক নিয়ে লেখা সেখানে নারীসুলভ বা নারীসজ্জায় সজ্জিত পুরুষের প্রতি পুরুষালি পুরুষের আকর্ষণের কথা আছে। কাবেরী রায়চৌধুরীর ‘শ্রীমান রঞ্জাবতী’ রূপান্তরকামিতা নিয়ে লেখা আরেকটি উপন্যাস। রূপান্তরিত নারী অধ্যাপিকা মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অন্তহীন অন্তরীণ প্রোষিত ভর্তৃকা’ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা অবলম্বনে রচিত উপন্যাস। বলে রাখা ভালো উপরের তিনটি বই সম্পর্কে আমার জানা বিভিন্ন পুস্তক আলোচনা থেকে নিজে সংগ্রহ করে এখনো বইগুলো পড়ার সুযোগ হয়নি। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর ‘হাসুলী বাঁকের উপকথা’ উপন্যাসে রয়েছে রূপান্তরকামি চরিত্র নসু। বিভূতিভূষণের ‘নসুমামা ও আমি’ গল্পের নসুমামাও একই ধরনের চরিত্র।
পরশুরামের তিনটি গল্প আছে যাতে লিঙ্গ পরিবর্তনের কথা আছে। ‘যদু ডাক্তারের পেশেন্ট’ নামের হাসির গল্পে যদু ডাক্তার পঞ্চী আর জটিরামের অপারেশন করতে গিয়ে উল্টোপাল্টা করে ফেলেছিলেন। পঞ্চীর মাথার সাথে জটিরামের শরীর আর জটিরামের মাথার সাথে পঞ্চীর দেহ তিনি সেলাই করে ফেলেছিলেন ভুলে ভুলে। শেষটায় যার মাথা সেই নামেই পরিচয় সাব্যস্ত হওয়ায় জটিরাম মেয়ে হয়ে গেল আর পঞ্চী পুরুষ। ‘নিকষিত হেম’ গল্পে পরশুরাম লিখেছেন প্লেটোনিক প্রেম নিয়ে। অখিল আর নিরঞ্জনা একে অন্যকে ভালোবাসত। শেষে নিরঞ্জনা প্রাকৃতিকভাবেই পুরুষে পরিণত হল। হয়ত সে আসলে পুরুষই ছিল ভেতরে ভেতরে, সে নিজেও জানত না। শেষটায় কিন্তু সেই প্রেম আর টিকল না, এমনকী বন্ধুত্বেও ফাটল ধরল একসময়। পরশুরামের আরেকটি গল্পে শিখন্ডী আর রাধার স্বামী আয়ান ঘোষের এক নতুন গল্প শুনিয়েছেন লেখক। সে গল্পে শিখন্ডী পুরুষত্ব গ্রহণ করেছিলেন আয়ানের কাছে যা আর তিনি ফেরত পাননি। বেচারা আয়ানকে তাই আয়ানি রূপেই শেষ জীবনটা কাটাতে হয়েছিল, তবে তাতে তিনি সুখীই হয়েছিলেন। নবনীতা দেবসেন সেই কবেই লিখে গেছেন হাসির গল্প ‘বাপ রে বাপ’। মাঝ বয়েসী এক পুরুষ অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নিরুদ্দেশ হলেন। কয়েকমাস পর তিনি যখন বাড়ি ফিরলেন, স্ত্রী তো হতবাক!
তার স্বামী লিঙ্গ পরিবর্তন করে ইতোমধ্যে নারীতে পরিণত হয়েছেন। নারীরূপেই তিনি আবার অফিস করা শুরু করলেন। সেখানে সহকর্মীরা কিভাবে তাকে গ্রহণ করলেন, তার তিন ছেলেমেয়েই বা তাকে কী বলে ডাকবে তা নিয়ে দেখা দিল সমস্যা। নবনীতা দেবসেন অবশ্য সম্পর্কের জটিলতার দিকে যাননি, হাসিঠাট্টায় তরলভাবেই শুভ সমাপ্তি দিয়ে গল্প শেষ করেছেন।
সাম্প্রতিক কালের বই দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের ‘শিখন্ডী’র কথা বিশেষভাবে উল্লেখ্য। অতীতের শিখন্ডী এবং বর্তমানের মিতালী দাসকে নিয়ে একই উপন্যাসে তিনি অত্যন্ত সুন্দর করে রূপান্তরকামি মানুষের জীবনের কষ্ট ও সংগ্রাম, সব শেষে সাফল্যও তুলে ধরেছেন। সেই সাথে বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে লিঙ্গ ব্যবধান যে বাঁধা নয় এবং প্রকৃত বন্ধুত্ব যে স্বার্থহীন সেই শ্বাশত সুন্দর বাণীও এই উপন্যাসের অন্যতম প্রধান বক্তব্য। কৌশিক মজুমদারের ‘নীবারসপ্তক’-এও আছে শৈলচরণ শান্যাল চরিত্রটি; পুরুষের শরীরেও যার ছিল একটি নারীর মন, বৃহন্নলা রামানুজও এই উপন্যাসে জড়িয়ে আছে ভীষণ রকম। তার কথা বলতে গিয়েই চলে এসেছে হিজড়া গোষ্ঠীর জীবনাচরণ, হিজড়াদের গুরুমা, ঢোল পূজা, তাদের দেবী বহুচেরা, জেনানা, মোগা, নাগিন, ছিন্নি, চিসা এমন সব শব্দের অর্থ, আন্ডারওয়ার্ল্ডের অপরাধমূলক কাজের সাথে হিজড়া গোষ্ঠীর যোগাযোগ কিংবা পকেটমারদের শ্রেণীবিভাগ যেমন হয়ে থাকে কারিগর, সেয়ানা আর টিংবাজে; সেরকম দারুণ গবেষণাধর্মী নানা তথ্য। এর বাইরে ভারতীয় বাংলা ম্যাগাজিন ‘সানন্দা’র একটি বিশেষ সংখ্যার কথা বলব যা ১৯৯৫ বা ‘৯৬ এর দিকে ‘রূপান্তর’ ফিচার এবং প্রচ্ছদ নিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল এবং বহুদিন আমাদের বাসায় ছিল। সেই সংখ্যাটিতে এই বিষয়ে তখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য, ঘটনা, সাক্ষাৎকার ও ব্যাখ্যা ছিল বিস্তারিতভাবে। এই লেখাগুলো পড়েই প্রথম জানতে পেরেছিলাম এমন মানুষ পৃথিবীতে আমি একা নই, আরো অনেকেই ছিলেন এবং আছেন। বারবার পড়তে পড়তে প্রায় মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল লেখাগুলো।
বাংলাদেশের সাহিত্যে রূপান্তরকামিতার কথা খুব একটা নেই বলেই মনে হয়, অন্তত আমার চোখে পড়েনি। হুমায়ূন আহমেদের লেখায়, বিশেষত মিসির আলীর কয়েকটি লেখায়, মাঝেমাঝে তার আভাস আছে, বিস্তারিত কিছু দেখিনি। আনোয়ারা সৈয়দ হকের নাম ভ্রমণকাহিনীতেও তার ইংল্যান্ডে থাকার সময় সেখানকার কয়েকটি লিঙ্গ পরিবর্তনের ঘটনার উল্লেখ পড়েছিলাম বহু আগে, বই আকারে প্রকাশিত হয়েছিল কিনা জানিনা। এর বাইরে কয়েকটি পত্রিকা বা ম্যাগাজিনেও রূপান্তরকামিতা নিয়ে বা রূপান্তরকামী মানুষদের নিয়ে গল্প পড়েছি বা উপন্যাসের চরিত্র হিসেবেও পেয়েছি, পত্রিকার খবর হিসেবে তো অসংখ্যবার পড়েছি। যদিও আলাদা করে বই আকারে কোথাও পড়ার সুযোগ হয়নি। হয়ত এমন লেখা আছে, আমার পড়ার সুযোগ হয়নি এই যা। অন্য ভাষার সাহিত্যে রূপান্তরকামিতা নিয়ে হয়ত অনেক লেখা আছে, ইংরেজি সাহিত্যে তো আছেই। যদিও তার কিছুই পড়া হয়নি প্রাপ্যতার অভাবে এবং নিজের ভাষাগত দূর্বলতার কারণে যেহেতু আমি মূলত বাংলা ভাষার পাঠক। আশা করি মূল ধারার বাংলা সাহিত্যে লেখকরা এই বিষয়টি তুলে আনবেন। তেমন লেখার অপেক্ষায় রইলাম বাংলা সাহিত্যের লেখকদের কাছ থেকে।