
সুমন দাস
‘হাওর’ মানে হলো বৎসরের প্রায় অর্ধেক সময় জলমগ্ন হয়ে থাকা ভাটি অঞ্চল। পূর্ববঙ্গের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ৭টি জেলায় হাওর অঞ্চলের অবস্থান হলেও, প্রায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জলবেষ্টিত অঞ্চলের জীবনযাত্রার অনন্য বৈশিষ্ট্যের জন্য বৃহত্তর সিলেটের সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহের কেন্দুয়া, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ইত্যাদি অঞ্চলের নিম্নাঞ্চল ভাটি তথা হাওর অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এই সমস্ত ভাটি অঞ্চলগুলো বৈশাখ মাসে ধান তোলার পর জৈষ্ঠ্য মাস থেকে প্রায় কার্তিক মাস পর্যন্ত জলে নিমগ্ন থাকে। তখন ঐ সমস্ত অঞ্চলের জীবনযাত্রা প্রায় শিথিল অবস্থায় চলে। ঐ সময় এই অঞ্চলগুলোতে এক অঞ্চলের সঙ্গে আর এক অঞ্চলের যোগাযোগের মাধ্যম থাকে কেবলমাত্র জলপথ। ঐ সময় এক একটা গ্রাম বা বাড়িকে এক একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ বলে মনে হয়। এই ৬ মাস সেখানকার লোকের জন্য অখন্ড অবসরের কাল। এই অবসরে সেই সময় গান-বাজনা, জারি, সারি, কীর্তন, বাউল, কবিগান-ই ছিলো ঐ সমস্ত অঞ্চলের মনোরঞ্জনের একমাত্র মাধ্যম। এসব ছাড়াও আর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিলো, তা হলো ‘ঘাটু’ বা ‘ঘেটু’ গান।
এই ‘ঘাটু’ বা ‘ঘেটু’ হলো পূর্ববঙ্গের হাওর বা ভাটি অঞ্চলের একটি বিলুপ্তপ্রায় পল্লীগীতি। ঘাটু বা ঘেটু শব্দটি এসেছে ‘ঘাট’ শব্দ থেকে। ঘাটে ঘাটে নৌকা ভিরিয়ে এই গান গাওয়া হতো বলে একে ঘাটু বা ঘেটু গান বলে। এটি মূলত একপ্রকার প্রণয়গীতি। প্রায় দু’শো বছর আগে বৃহত্তর সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার জলসুখা গ্রামের এক বৈষ্ণব আখড়ায় ‘ঘাটুগান’ নামে এক নতুন পল্লীগীতি ধারার সৃষ্টি হয়েছিলো। সেই বৈষ্ণব আখড়ায় শ্রীকৃষ্ণের প্রেমে নিমগ্ন বেশ কিছু ভক্তের মধ্য থেকে কয়েকজন সুকুমার বালকদের শ্রীরাধার সখী সাজিয়ে নেচে নেচে বিরহ সংগীত পরিবেশন করা হতো এবং সেই থেকেই প্রচলন ঘটে ঘাটু বা ঘেটু গানের। অনেকের মতে বৃহত্তর সিলেটের আজমিরীগঞ্জের উদয় আচার্য ছিলেন ঘাটু গানের প্রবর্তক। তখন এই ঘাটু গান গাওয়া হতো পূজা-আরাধনার একটি পবিত্র অঙ্গ হিসেবে। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর থেকে এই ঘাটু গানকে বাণিজ্যিক করে বেশ জনপ্রিয় করে তোলার চেষ্টা শুরু হয় যুবমহলে।
অঞ্চলভেদে ‘ঘাটু’ শব্দটির উচ্চারণগত ভিন্নতা পরিলক্ষিত হতে দেখা যায়; এই শব্দটি ঘাঁটু, ঘেটু, ঘেঁটু, গাটু, গেন্টু, গেঁটু, ঘাডু, গাডু, গাঁটু প্রভৃতি বলা হয়। এক সহজ বর্ণনায় বলা যেতে পারে যে, ঘাটে ঘাটে নৌকা ভিরিয়ে যে গান গীত হতো সেটাই ঘাটু গান। আগেকার যুগে ধনী সামন্ত প্রভুরা মনোরঞ্জনের জন্য বাইজির নাচ গানের আয়োজন করতেন অনেক টাকা খরচ করে। কিন্তু তাতে সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার ছিলো না। তখন কিছু শৌখিন যুবকের প্রচেষ্টায় গড়ে উঠে ঘাটু গানের দল। যা গ্রামের সবাই মিলে একসঙ্গে উপভোগ করত। ঘাটু গান গাওয়া হতো প্রচলিত সুরে; যেখানে উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের প্রভাব ছিলো স্পষ্ট। পরবর্তীকালে আদি রসাত্মক কথাবার্তা চালু করে অনেক গান রচনা করা হয়; এর ফলে ঘাটু গানের জনপ্রিয়তাও বাড়তে থাকে যুবসমাজে। কতগুলো জনপ্রিয় ঘাটু গান যেমন-
১) সুয়া উড়িলো উড়িলো
জীবের ও জীবন,
সুয়া উড়িলো রে……..
(শীতালং শাহ্ ফকির)
২) আমার যমুনার জল দেখতে কালো,
চান করিতে লাগে ভালো,
যৌবন মিশিয়া গেলো জলে………
(প্রচলিত)।
৩) সাবান আইনা দিলে না রে,
ভাইছাব রে তুই জলে ভাসা
সাবান আইনা দিলে না……….
(প্রচলিত)।
ঘাটু সংস্কৃতি ছিলো মূলত একটি দলগত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মত। এক একটি ঘাটু দলে ৮ থেকে ১০ জনের মতো সদস্য থাকতো। এর মধ্যে একজন সর্দার গোছের লোক দলটিকে পরিচালনা করতো। সাধারণত এক একটি ঘাটু দলে একজন সর্দার, একজন সুগায়ক (সে একাধারে নৃত্য ও সংগীত প্রশিক্ষক), একজন ঘাটুছেলে ( যে বাচ্চা ছেলেটি মেয়ে সেজে নৃত্য পরিবেশন করতো), আর পাঁচ থেকে সাত জন বাজনদার থাকতো। ঘাটু গান প্রদর্শনের সময় বাদ্যযন্ত্র হিসেবে বাজানো হতো বঙ্গীয় ঢোল, বেহালা, হারমোনিয়াম, মন্দিরা, বাঁশী, করতাল ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র। ঘাটু গানের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িয়ে থাকতো নাচ। ঘাটু গান সাধারণত প্রেম আর আদিরসাত্মক গানের সমন্বয়ে গীত ও নাচ হতো। ঘাটু গানের মধ্যে আবার মালজুরা গানের প্রভাব দেখা যায়। অনেক গানে আবার কবিগানেরও ছোঁয়া মিলে। একটা অল্পবয়সী বালককে মেয়ে সাজিয়ে সহজ নাচের মুদ্রা শিখিয়ে বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে বাইজির নাচের মতো করে এই অনুষ্ঠান পরিবেশন হত। এই বাচ্চা ছেলেটিকেই বলা হতো ঘেটু বা ঘাটুছেলে। ঘাটুকে গানে সাহায্য করতে একজন লোকের প্রয়োজন হত; যাকে স্থানীয় ভাষায় মরাধার নামে সম্বোধন করা হতো। মরাধার ঘাটুর সঙ্গে নেচে নেচে তাকে গানের মাধ্যমে প্রশ্ন করত, আর ঘাটুছেলেকে গানের মাধ্যমে তার উত্তর দিতে হত মেয়েলি ভঙ্গিমায় নেচে নেচে। বাড়ির আঙিনায় বা ঘাটের কোনো বটতলায় গোলাকার প্যান্ডেল সাজিয়ে, উপরে সামিয়ানা টাঙিয়ে সন্ধ্যার পর বসত ঘাটুর আসর। দর্শক-শ্রোতারা উপভোগ করতেন প্রেম ও আদি রসাত্মক ঘাটু গান ও নাচ। দর্শকের মাঝে থেকে কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে ঘাটুছেলেকে মুদ্রা ছুঁড়ে দিতেন, এমনটাই রেওয়াজ ছিলো সেই সময়। বঙ্গদেশে প্রাচীনকালে নববর্ষ পালনে আরো একটি সংস্কৃতি যোগ হত; তা হলো এই ঘাটু গান ও নাচের সংস্কৃতি। তাছাড়া পূর্ববঙ্গের ভাটি অঞ্চলের হাওর এলাকায় অন্যতম প্রধান মনোরঞ্জনের কেন্দ্রবিন্দু ছিলো এই ঘাটু সংস্কৃতি। যার ফলে দিনে দিনে এর জনপ্রিয়তাও বাড়তে থাকে।
তৎকালীন রক্ষণশীল বঙ্গসমাজে গান, যাত্রাপালা, নাটক ইত্যাদি তে নারীদের বিচরণ খুব সহজ ছিলো না। তাই এই ক্ষেত্রে এক বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিলো। ঘাটু গানের দলের মূল চরিত্রে থাকতো সুন্দর মেয়েলি গড়নের একটা বাচ্চা ছেলে। সাধারণত সেই ছেলের বয়স হতো ১০ থেকে ১৫/১৬ বছরের মধ্যে। বাচ্চাটিকে মেয়েদের পোশাক পরিয়ে, মাথায় পরচুলা লাগিয়ে, বুকে নারকেল মালা দ্বারা প্রস্তুত কৃত্রিম স্তনযুগল লাগিয়ে, পায়ে ঘুঙুর বেঁধে, মেয়েদের ব্যবহৃত প্রসাধন সামগ্রীর দ্বারা সজ্জিত করিয়ে আসরে নামানো হতো। এরপর সেই নারীবেশী বাচ্চা ছেলেটি বা ঘাটুছেলেটি মেয়েলি অঙ্গ ভঙ্গি করে গান ও বাদ্যযন্ত্রের সাথে তাল রেখে বিভিন্ন সহজ মুদ্রায় নেচে যেতো অনুষ্ঠানের শেষ পর্যন্ত।
এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিলো, তবে গোলটা বাঁধে আরো একটা জায়গায়। সেই জায়গাটা হলো সমকাম ও সমকামের ছায়ায় শিশু নির্যাতন। হাওর অঞ্চলের বিত্তবান তথা জমিদার ও পয়সাওয়ালারা এই জলমগ্ন অবসরের সময়টুকু কাটানোর জন্য মনোরঞ্জনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন এই ঘাটু গানকে। এই সমস্ত বিত্তবানেরা এই জলমগ্ন বর্ষার ৬ মাসের জন্য ঘেটু দল ভাড়া করে আনতেন নিজেদের বাড়িতে। এই সময়টুকু গোটা দলের জন্য বিত্তবানদের বাড়িতে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা করা হতো। ঘেটু দলের কাজ ছিলো প্রতি সন্ধ্যার পর নাচ-গান করে বিত্তবানদের মনোরঞ্জন করা। ৬ মাস শেষে যাবার সময় ঘেটুদল তাদের পারিশ্রমিক পেতো; আর এই পারিশ্রমিকের মূল্য অনেকটাই নির্ভর করতো ঘেটুছেলের উপর। কারণ নারীবেশী এইসব সুকুমার ঘেটুছেলের অঙ্গভঙ্গিমায় প্রফুল্ল হয়ে বেশিরভাগ বিত্তবানেরা সমকামের সূত্র ধরে এই ঘেটুছেলেদের সঙ্গে অশ্লীলতা করার জন্য লালায়িত থাকতেন। নাচ-গানের শেষে প্রতি রাতে সেই ১০ থেকে ১৫/১৬ বছর বয়সী ঘেটুছেলেকে বাধ্য করা হত সেইসব পৈশাচিক পয়সাওয়ালাদের বিছানায় গিয়ে তাদের যৌনসঙ্গী হওয়ার জন্য। অনিচ্ছা সত্ত্বেও সর্দারের নির্দেশে এই ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত হওয়া ছাড়া দ্বিতীয় অন্য কোনো উপায় থাকতো না এইসব ঘেটুছেলেদের কাছে। কারণ তারা প্রত্যেকেই আসত একেবারে দরিদ্র পরিবার থেকে। পরিবারের জন্য পুরো বৎসরের আয়ের জোগাড় করতে হতো এই ৬ মাসে এমন ভাবেই। আর এই সুযোগে বিত্তবানেরা তাদের পৈশাচিক যৌনক্ষুধা মেটাতো এইসব নিরুপায় বালকের মধ্যমে। বেশিরভাগ বিত্তবানেরাই তাদের এই অশ্লীল কার্য সম্পাদনের জন্য নিজেদের বিবাহিত স্ত্রীকে বর্ষার এই ৬ মাসের জন্য বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিতেন। এই বিষয়টি বিত্তবানদের স্ত্রীদেরও অজানা ছিলো না; তবে তাদের এই অশ্লীল ব্যাপারটি মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকতো না। তাই এইসব বিত্তবানদের স্ত্রীরা ঘেটুছেলেদের একরকম সতীন রূপেই দেখতেন, আর হিংসাও করতেন। তবে বিষয়টা অনৈতিক ও অশ্লীল হলেও, পয়সাওয়ালাদের প্রতিপত্তির জোরে একট সময় বিষয়টা সামাজিকভাবে স্বীকৃতি পেয়ে যায়। হাওর অঞ্চলের শৌখিনদার মানুষ জলবন্দির সময়টায় কিছু দিনের জন্য হলেও ঘেটুছেলেদের যৌনসঙ্গী হিসেবে নিজের কাছে রাখবেন- এই বিষয়টা একরকম স্বাভাবিকভাবে বিবেচিত হতে থাকে। আর এভাবেই ঘাটু সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে সমকামিতার সূত্র ধরে সমাজে শিশুদের যৌন নির্যাতন চলতে থাকে দিনের পর দিন। আর এর জনপ্রিয়তাও দিন দিন বাড়তে থাকে।
ঘেটুছেলেটিকে শুধু যে বিত্তবানদেরই শয্যাসঙ্গী হতে হতো এমনটা নয়। মধ্য রাতের পর সেইসব পৈশাচিক পয়সাওয়ালাদের আঁশ মিটে গেলে শ্রান্তক্লান্ত অবস্থায় সেই ঘেটুছেলেকে লালসার স্বীকার বানাতো সেইসব বিত্তবান পয়সাওয়ালাদের বন্ধুবর্গ ও আত্মীয়বর্গের একাংশেরা। ঐটুকু একটা বালকের শরীরের উপর প্রতি রাতে ঝাপটে পড়তো সেই হিংস্র পশুগুলো। অসহায় সেই বাচ্চা ছেলেটির মুখ বুঁজে সব কিছু সহ্য করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকতো না। তাদের কান্নার করুণ শব্দ বিত্তবানদের ঘরের চার দেওয়ালে আবদ্ধ হয়ে থাকতো। অনেক ঘেটু ছেলেদেরই মলদ্বারে ঘাঁ হয়ে যেতো, সারা গায়ে কামড়ানো-আঁচড়ানোর দাগ বসে যেতো, শরীর মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়তো। তাছাড়া পায়ুপথের রক্তক্ষরণ তো ছিলো নিত্যনৈমিত্তিক একটা ব্যাপার। অল্পসংখ্যক মানুষের এমন দুশ্চরিত্রের জন্য এতো সুন্দর একটি সাংস্কৃতিক বিষয় অন্য দিকে মোড় নেয়। ফলে এতে সংগীত ও নৃত্য চর্চার চেয়ে যৌন চর্চা প্রাধান্য পেয়ে উঠে। এইভাবে ঘাটুছেলেদের নিয়ে নানা ধরনের যৌনলালসা চরিতার্থ করতেন এক শ্রেণীর বিকারগ্রস্ত প্রভাবশালী বিত্তবান মানুষেরা।
প্রাচীন ময়মনসিংহ গীতিকার সংগ্রাহক চন্দ্র কুমার দে জানিয়েছেন যে, ঘাটুছেলেদের কেনাবেচা ও দর্শকের মাঝে নোংরাভাবে প্রদর্শন করা নিয়ে সমাজে নানা সংঘাত দেখা দেয়। বঙ্গদেশের সচেতন ও ধর্মপ্রাণ মানুষেরা ধীরে ধীরে বিষয়টিকে নোংরা ও নিন্দনীয় বলে গণ্য করতে শুরু করেন। একটা সময় ঘাটুছেলেদের মাতা-পিতারাও এ ধরণের যৌনাচারে লিপ্ত সংস্কৃতির চর্চায় আসতে নিজেদের ছেলেদের বাঁধা দেওয়া শুরু করে। ফলে ধীরে ধীরে কালের স্রোতে একটু একটু করে হারিয়ে যেতে থাকে পূর্ববঙ্গের এই ঐতিহ্যপূর্ণ ঘাটু সংস্কৃতি। এইভাবেই সমকামের সূত্র ধরে যে নিকৃষ্ট কদাচার শুরু হয়েছিলো এই পল্লী সংস্কৃতির মাধ্যমে তা একসময় সমাজের সচেতনতায় বন্ধ হয়ে যায়; যা খুবই মঙ্গলের বিষয়। কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গদেশ তার একটি অসাধারণ পল্লীসংস্কৃতির অঙ্গ এই ‘ঘাটু সংস্কৃতি’ও হারিয়ে ফেলেছে; যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। যার ফলে বঙ্গদেশ থেকে হারিয়ে গেছে বিস্ময়কর এই ‘ঘাটু সংস্কৃতি’র ধারা।
সবশেষে এই কথা না বললেই নয় যে, সমকাম মোটেও ঘৃণ্য নয়। এই যে পাশবিক ভাবে শিশুদের যৌন নির্যাতন চলছিলো ‘ঘাটু সংস্কৃতি’র আড়ালে তা নিশ্চয়ই নিন্দনীয় ও দণ্ডনীয়। তবে আনন্দের কথা এই যে, পূর্ববঙ্গের এই ঘাটু সংস্কৃতি শিশুনির্যাতনের নিকৃষ্ট কালিমা মুছে একেবারে ধীর গতিতে হলেও পূর্ববঙ্গের হাওর বা ভাটি অঞ্চলে তা আজও বহমান।