
নয়নতারা হাফিà¦
বাংলাদেশের প্রান্তিক লিঙ্গ ও যৌনবৈচিত্র মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য মন্দ্রের যে প্রচেষ্টা “ঠাহর” তাকে সাধুবাদ জানাই। মন্দ্রের এই প্রকাশনা অবশ্যই প্রান্তিক লিঙ্গ ও যৌনবৈচিত্র মানুষের মনের কথা, জীবনের কথা তুলে আনবে বলেই আমার ধরনা।
এবার আসি ঠাহরের লেখা এবং অধ্যায় নিয়ে কিছু নিজস্ব মতামত বা বলতে পারেন ঠাহর পড়ে আমার অনুভুতির কথায়। লেখালেখি সম্পর্কে আমার ধরনা খুব কম হলেও আমার কাছে ঠাহরের অধ্যায়গুলোর নামকরণটা অসাধারণ লেগেছে। সে তুলনায় অধ্যায়ের ভেতর লেখাগুলোর সাথে অধ্যায়ের নামকরণের কিছুটা অমিল মনে হয়েছে। আমার ধারণা প্রতিটা অধ্যায় পড়া শেষে একজন পাঠকের মনে হবে যে এ বিষয়ে যদি আরো বিশদ কিছু থাকতো তবে হয়ত আরো ভালো লাগতো, যেমনটা আমার মনে হয়েছে।
প্রথম অধ্যায়ের “কতি সমাচার” লেখাটা এতটা সহজ আর প্রাণবন্ত যে, কোন মানুষ যে কিনা নিজেকে কতি হিসেবে আইডেন্টিফাই করে তাকে অবশ্যই সাহস যোগাবে। কতি কি, লাহা লাহা, উল্টি ভাষা এ সমস্ত বিষয় কী সুন্দর সহজ আর সাধারণভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন লেখক। নিজের অভিজ্ঞতা আর আত্মবিশ্বাসের যে বহিঃপ্রকাশ আছে এই লেখাটাতে তা একজন কতি পাঠককে অবশ্যই অনুপ্রাণিত করবে। আর যারা কতি না তারাও একজন কতিকে বুঝতে শিখবে। অন্য দিকে প্রথম অধ্যায়ের প্রথম লেখা “পরিচয় নাকি প্রণালি” আমার মত একজন সাধারণ পাঠকের কাছে সহজে বোধগম্য হবে না বলে আমার ধারণা। লেখাটার শিরোনাম পরিচয় নাকি প্রণালি হলেও আমার কাছে মনে হয়েছে যে কোন কিছুর সাথেই সেভাবে পাঠক পরিচিত হবেন না।

রূপান্তরিত নারী ধারণাটা এখনকার সময়ে খুব আলোচিত বা সমালোচিত তাই এই সম্পর্কে সাধারণ মানুষ এবং কমিউনিটির মানুষের মধ্যে কিছুটা ধারণা আছে। সেই হিসেবে রুপান্তরিত পুরুষ সম্পর্কে মানুষের ধারণা কম। “রুপান্তরিত পুরুষ হিসেবে জীবনকে যেভাবে দেখছি” লেখাটাতে যদি রুপান্তরিত পুরুষ সম্পর্কে আরো একটু বিস্তরভাবে বর্ণনা করা হতো তাহলে সবার কাছে আরো বেশি পরিষ্কার হতো।
যদিও এখানে তার জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা বর্ণনা করা হয়েছে কিছুটা কিন্তু তিনি জীবনকে কিভাবে দেখছেন তার চাইতে অন্যরা তাকে কিভাবে দেখছে সেটা ছাপিয়ে গেছে। প্রতিদিন প্রতিনিয়ত আমরা বুঝে বা না বুঝে সেক্সিজমের মত একটা ব্যাপার নিজেরাই ঘটাচ্ছি সেটা হয়তো আমরা বুঝতেই পারিনা। তৄতীয় অধ্যায়ে “সেক্সিজম” নিয়ে লেখাটা পাঠককে খুব সরল ধারণা দেবে যে সেক্সিজম বিষয়টি কি এবং আমাদের প্রতিদিনের জীবনে আমরা কি রকমের সেক্সিজমের শিকার হই। লেখাটা পড়ে আমরা নিজেরাই বুঝতে পারবো যে আমরা চাইতে না চাইতে কত সেক্সিজম করে ফেলি বা ফেলেছি। মাঝে মাঝে কিছু প্রশ্ন ছোঁড়া হয়েছে যেটা পাঠকের মন কে নাড়া দেবে কিছু সময়ের জন্যও এবং এই বিষয়টি লেখাটাকে সমৃদ্ধ করেছে।
স্কুলে জেন্ডার, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা লেখাটাতে কিছুটা দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে আমাদের দেশের মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে জেন্ডার, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে কতটা গুরুত্ব দেয়া হয় বা হচ্ছে। এ বিষয়ে পাঠ্যক্রমে কি আছে সেগুলো সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হয়েছে। পাঠক লেখার শুরুতে হয়তো ধারণা করতে পারবে যে পাঠ্যক্রমে অনেক কিছুই আছে এসব বিষয়ে। কিন্তু পাঠ্যক্রমে যে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত আছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা করলে লেখার শিরোনামের মতই লেখাটা আরো উন্নত হতো। তাছাড়া একজন প্রান্তিক লিঙ্গ ও যৌন বৈচিত্র্য মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে পাঠ্যক্রমে আরও বিষয় সংযোজন বা বিয়োজন করার দরকার আছে কিনা সে বিষয়েও আলোচনা করার দরকার ছিল বলে আমার মনে হয়।
কতি সমাচারের মত নিজস্ব অভিজ্ঞতা যেমন ঠাহরে আছে তেমনি ইকোফেমিনিজম বা পরিবেশ নারীবাদ এবং মানব লিঙ্গের স্বরূপ বা জিন বিজ্ঞানে লিঙ্গের ধারণার মত তথ্যবহুল লেখাও ঠাহরে স্থান পেয়েছে। সব মিলিয়ে “ঠাহর” বাংলাদেশের প্রান্তিক লিঙ্গ ও যৌনবৈচিত্র্য মানুষের মন, জীবন, সংগ্রাম ও সর্বোপরি অস্তিত্ব ঠিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টায় এক অন্যন্য ভুমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
পà§à¦°à¦¥à¦® পà§à¦°à¦à¦¾à¦¶à¦¿à¦¤
মনà§à¦¦à§à¦°à¦ªà¦¤à§à¦° (পà§à¦°à¦¥à¦® সà¦à¦à§à¦¯à¦¾)
à¦à¦à¦à¦¿ মনà§à¦¦à§à¦° পà§à¦°à¦à¦¾à¦¶à¦¿à¦¤ à¦à§à¦ পতà§à¦°à¦¿à¦à¦¾